আন্তঃনগর ট্রেনের মানে উন্নীত হচ্ছে কালনী ও চট্টলা এক্সপ্রেস। ২০১০ ও ২০১২ সালে চালু হওয়া ট্রেন দুটি এতদিন মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ ও সুবিধা নিয়ে যাত্রী পরিবহন করত। তবে এখন এসব ট্রেনে আন্তঃনগর মানের কোচ সংযোজন করা হচ্ছে। ২৬ মার্চ নতুন রেক নিয়ে ট্রেন দুটির আনুষ্ঠানিক চলাচল শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ১ নভেম্বর তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শুরুতে ১৬টি কোচ নিয়ে ট্রেনটি নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করত। এ ট্রেনে সুলভ বা তৃতীয় শ্রেণির আসনের সংখ্যা ছিল ৫১৪টি। তবে মানসম্মত কোচ বা আসন না থাকায় যাত্রী সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। এ কারণে শেষ পর্যন্ত ট্রেনটির কোচ সংখ্যা কমিয়ে ১২তে নামিয়ে আনা হয়।
আর ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন রেলপথমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ঢাকা-সিলেট রুটে একটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালানোর ঘোষণা দেন। ২০১২ সালের ১৫ মে কালনী এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। তবে শোভন শ্রেণির আসন থাকায় ট্রেনটির মান আন্তঃনগর হিসেবে গণ্য করা হতো না। এখন দুটি ট্রেনকেই আন্তঃনগর মানে উন্নীত করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা নতুন কোচ সংযোজনের ফলে শতাধিক পুরনো কোচ অবমুক্ত হচ্ছে। এসব কোচ সংযোজন করে কিছু কিছু ট্রেনের মান উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেয় রেলের পরিবহন বিভাগ। এ ব্যাপারে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রেলওয়ের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে সম্মতি দেয়া হয়েছে। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের দপ্তরে পাঠানো এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, অবমুক্ত হওয়া কোচ দিয়ে জরাজীর্ণ ট্রেনগুলোর রেক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে চট্টলা ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিকে আধুনিক মানের ট্রেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এতে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি রেলের রাজস্ব আয় আরো বাড়বে।
রেলের কর্মকর্তারা জানান, এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের পুরনো অবমুক্ত রেক (পিএইচটি টাইপ) দিয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক সাজানো হবে। আগে এ ট্রেন ৬৭ ও ৬৮ নম্বরে সূচিত হলেও আন্তঃনগর মর্যাদা পাওয়ার পর ট্রেন দুটির নম্বর হবে ৮০১ ও ৮০২। নতুন রেকের কম্পোজিশন হবে ১২/২৪ এবং মোট আসন হবে ৫৭৯টি। এর মাধ্যমে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মেইল এক্সপ্রেসের সুবিধা থেকে ‘খ’ শ্রেণির আন্তঃনগর ট্রেনে উন্নীত হচ্ছে।
আর চীন থেকে আমদানি করা কোচ দিয়ে (সাদা কোচ) কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগে ট্রেনটিতে আসন সংখ্যা ছিল ৪৮৬। নতুন নিয়মে ট্রেনটির রেক কম্পোজিশন হবে ১২/২৪ এবং আসন সংখ্যা হবে ৫৪২। চট্টলা ও কালনী এক্সপ্রেসের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রেক নিয়ে চলাচল শুরুর সম্ভাবনা আছে।
জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, রেলে দীর্ঘদিন ধরে কোচ সংকট ছিল। বর্তমানে নতুন কোচ আমদানি শুরু হয়েছে। আমরা নতুন কোচ সংযোজনের পর অবমুক্ত কোচগুলো অন্যান্য ট্রেনে সংযোজন করছি। এর অংশ হিসেবে চট্টলা ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভালো মানের কোচ দেয়া হচ্ছে। ২৬ মার্চ সংযোজিত নতুন রেক দিয়ে ট্রেন দুটিতে যাত্রী পরিবহন শুরু হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন