শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউরোপের রাজপরিবারগুলোর বার্ষিক ব্যয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২০, ৩:০৯ পিএম

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনো চালু আছে রাজতন্ত্রব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনর এক প্রতিবেদনে ইউরোপের রাজপরিবারগুলোর বার্ষিক ব্যয়সংক্রান্ত একটি হিসাব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রাজপরিবারগুলো আগে বছরে যে হারে অর্থ ব্যয় করত, বর্তমানে সেই ব্যয় অনেকাংশে কমে এসেছে। ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ১০টি রাজপরিবারের মধ্যে ৯টি এখনো জনগণের তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে চলে। একমাত্র ব্যতিক্রম হাউজ অব লিস্টেনস্টেইন। এ পরিবারটি তাদের ব্যয়ের জন্য জনগণের তহবিল থেকে কোনো অর্থ নেয় না। স্থানীয় আইন ও ঐতিহ্যের ওপর নির্ভর করে, রাজপরিবারগুলো জনতহবিল থেকে কতটা অর্থ নিচ্ছে।
ইউরোপের রাজপরিবারগুলোর মধ্যে বাকিংহ্যাম প্যালেসের ব্যয় সবচেয়ে বেশি। এই পরিবারের রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয় ও তার ভাইবোনেরা পূর্ণমাত্রায় রাজকীয় পদবি ধারণ করেন। এক পরিসংখ্যান মতে, ব্রিটিশ রাজপরিবারের ১৬ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি বর্তমানে পূর্ণমাত্রায় রাজকীয় সুবিধা পেয়ে থাকেন। ২০১৮-১৯ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ব্যয় হয়েছে ১০৩ মিলিয়ন ডলার, যার পুরোটাই গেছে জনতহবিল থেকে। তবে সম্প্রতি রাজপরিবারের কয়েকজন সদস্য পরিবার থেকে বের হয়ে যাওয়ায় ব্যয় কিছুটা কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের পরেই রাজকীয় ব্যয়ে এগিয়ে মনাকো। দেশটির রাজপরিবার চলতি বছরেই ৫৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ পেয়েছে জনতহবিল থেকে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থের মধ্যে ১৪ দশমিক ৬ মিলিয়নই পাচ্ছে দেশটির রাজা। আর বাকি অর্থ যায় পরিবারের কর্মচারী ও প্রাসাদের রক্ষণাবেক্ষণ খরচে।
নেদারল্যান্ডসের রাজপরিবারের বর্তমান সদস্য ১০ জন। রাজা উইলিয়াম আলেকজান্ডার ও রানী ম্যাক্সিমা এবং বাকি সদস্যারা মিলে বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। চলতি বছরের শুরুতেই জনতহবিল থেকেই রাজপরিবারের ব্যয়ের জন্য এই অর্থ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে শুধু রাজার জন্যই ব্যয় হয় সাড়ে ৬ মিলিয়ন ডলার।
গত বছর খরচের দিক থেকে ব্রিটিশ রাজপরিবারকেও ছাড়িয়ে গেছে তারা। ডাচ রানি বিয়েত্রিচ ও তাঁর সন্তান-সন্ততীরা গত বছর প্রায় তিন কোটি ১০ লাখ পাউন্ড খরচ করেছেন। পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্রপ্রধানদের খরচ বিষয়ে এক গবেষণার পর বেলজিয়ান শিক্ষাবিদ হেরমান ম্যাথিস একথা জানিয়েছেন। তবে খরচের দিক থেকে ইউরোপে রাজপরিবারগুলোর মধ্যে সবার ওপরে থাকলেও ডাচ রাজপরিবারের খরচ আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ম্যাথিস জানান, ব্যয়সঙ্কোচন নীতির কারণে গত বছর ইউরোপের প্রায় প্রতিটি রাজপরিবারের খরচই কমেছে। ব্রিটিশ রাজপরিবারের খরচ প্রায় ১৬ শতাংশ কমেছে। ২০১০ সালে যেখানে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তিন কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড খরচ করেছেন, সেখানে গত বছর তাঁদের খরচ নেমে এসেছে দুই কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ডে। নেদারল্যান্ডসের রাজপরিবার গত বছর তিন কোটি সাত লাখ পাউন্ড পরিমাণ খরচ করেছে। রানি বিয়েত্রিচের ব্যক্তিগত এক কোটি ৪০ লাখ পাউন্ড পরিমাণ খরচও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্পেনের রাজপরিবারের তুলনায় এই খরচ প্রায় চারগুন বেশি। রাজপরিবারের খরচ নেদারল্যান্ডসের করদাতাদের ওপরও ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে। কারণ, নেদারল্যান্ডসের জনসংখ্যা স্পেনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। তবে রানি বিয়েত্রিচ অবশ্য তাঁর ছয় লাখ ৪৭ হাজার পাউন্ড পরিমাণ বাৎসরিক ভাতা কমানোর কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দায়িত্বে যুক্ত থাকার কারণে তিনি এই ভাতা পান। স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোস তাঁর চেয়ে তিনগুন বেশি ভাতা পান। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন