বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবিতে ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত

বন্ধের সিদ্ধান্ত না হলেও হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। ১৮ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অন্যান্য কার্যক্রম যথারীতি চলবে। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয়-সংলগ্ন আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জরুরি বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ভিসি প্রফেসর ড. মো আখতারুজ্জামান। অন্যদিকে, বিশ^বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবাসিক হল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয় নি। এরপরও করোনা আতঙ্কে হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাবি ভিসি বলেন, আতংক দূর করার জন্য দুটো সিদ্ধান্ত গৃহীত হল। আমাদের সকল কার্যক্রম আছে। সাময়িকভাবে দুটি কার্যক্রম স্থগিত করা হল। একটি হল ক্লাস ও আরেকটি হল পরীক্ষা কার্যক্রম। আমাদের সহকর্মীরা এটিও বলেছেন যে ক্লাসগুলো শিক্ষার্থীরা এ সময়ের মধ্যে হারাবে তারা সেটি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য বন্ধের মধ্যে বা অন্য সময়ে সেই ক্ষতিটুকু পুষিয়ে দেওয়ার জন্য তারা প্রয়াস নিবেন। এ ধরনের খুবই উদার অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ তারা করেছেন।

তিনি বলেন, পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে আমাদের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে অনুরোধ করা হবে, এ সময়ের মধ্যে যে পরীক্ষা কার্যক্রমগুলো আছে, কারণ আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের শিক্ষার্থীদের গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রমে সামগ্রিকভাবে নেতিবাচকভাবে প্রভাব পড়ে সেটি যেন না ঘটে, সেটির সর্বোচ্চ সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়া সেটি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের এসব কার্যক্রম।

এরআগে সকাল ১০ টা থেকে প্রশাসনের এই বৈঠক শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-চিকিৎসাকেন্দ্র-শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও গ্রন্থাগারের কর্মকর্তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া, প্রক্টর প্রফেসর এ কে এম গোলাম রব্বানীও উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর পক্ষ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের কথা বলা হয়েছে কিন্তু ঢাবি ২৮ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্তে নিল-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ভিসি বলেন, আমরা অন্যগুলো জানি না। এগুলো চিঠি আসলে তা দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেটি প্রয়োজন হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় স্বার্থে ঢাবি ঠিক সেভাবেই সাড়া দিবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

প্রফেসর আখতারুজ্জামন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বড় আকারের সোশ্যাল গ্যাদারিং অ্যাভয়েড করার নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সবার প্রতি আমাদের আহ্বান, শিষ্টাচার-আচরণে সেটি অনুসরণ করুন। এগুলো যেন আমরা সবাই গভীর মাত্রায় অনুসরণ করি। শিষ্টাচারি জীবনধারা অনুসরণ করতে পারলে অনেক রিস্ক মিটিগেট হয়। তিনি বলেন, ঢাবির জীববিজ্ঞান ও ফার্মেসি অনুষদের বিভাগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে, যে যেভাবে পারি, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করি, যাতে এ ধরনের প্যানডেমিক ম্যানেজ করার জন্য জাতিকে আমরা আরও কিছু পরামর্শ দিতে পারি। গবেষণার এই ক্ষেত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় কাজ।

আবাসিক হল বন্ধ হচ্ছে না: এদিকে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হলেও আবাসিক হলগুলো বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্যও করেননি ভিসি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি বলেন, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি কার্যক্রম ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে, সেহেতু হলের উপর একটা প্রভাব পড়বে। তবে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকবে কি না- এই ব্যাপারে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা: করোনা আতঙ্কে গত দুই-তিন দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই সময়ে বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বাড়িতে চলে যান। তবে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণার পরপরই হল ছাড়া শুরু করেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, আজও (গতকাল) এদেশে এক শিশুসহ তিনজন করোনায় আক্রান্তের খবর এসেছে। এই কারণে পরিবারের সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। যেহেতু আগামীকাল (আজ) ছুটি রয়েছে, সেহেতু আজই তারা বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন