শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কমেছে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা

সংশোধিত এডিপি অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:৫২ এএম

চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) শুরুতে প্রথম বারের মতো দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়ানো বিশাল উন্নয়ন বাজেট বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) অনুমোদন দেয় সরকার। তবে বছরের আট মাস শেসে প্রায় পাঁচ শতাংশ কামনো হয়েছে এডিপির আকার। টাকার অংঙ্কে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমে সংশোধিত এডিপির (আরএডিপি) আকার দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও এনইসির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বছরের মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছিল দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস এক লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। এখন মোট সংশোধিত এডিপি (আরএডিপি) হয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস এক লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আকার কমেছে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস স্থির রয়েছে এবং ৯ হাজার ৮০০ কোটির পুরোটাই কমেছে বৈদেশিক ঋণ বা উৎসের টাকা। বরাদ্দ কমতির এ হার মোট এডিপি বরাদ্দের ৪ দশমিক ৮৩ ভাগ এবং বৈদেশিক উৎসের ১৩ দশমিক ৬৫ ভাগ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই আরএডিপি’র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এডিপি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতাও বাড়ছে। সরকারি অর্থ শতভাগ খরচ হয়েছে, তবে প্রকল্প ঋণের টাকা শতভাগ খরচ হয়নি। ঋণের টাকা খরচের নানা শর্ত থাকে। তবে দিন শেষে আমরা ঠিকই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেড়েছি।

ঋণের টাকা খরচ করতে না পারলেও দেশের টাকা খরচের কারণ কী এমন প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখানে দুইটা সিস্টেম কাজ করে। যারা আমাদের ঋণ দেয়, যেমন বিশ্ব ব্যাংক। তাদের নিজস্ব একটা নীতিমালা আছে। তাদের অনেক পর্যায় আমাদের সঙ্গে ম্যাচ হয় না। না হওয়ার দরুণ দেরি হয়। ফলে এফিসিয়েন্সি কমে, সাফার (ভোগান্তি) করে। এটা শুধু আমরা সাফার করি না, পৃথিবীর যত দেশ আছে, তাদেরকেও এটা মোকাবিলা করতে হয়। এজন্য আমাদের বা সরকারের টাকা কম-বেশি খরচ করতে পারছি। নিজস্ব নিয়মকানুন আছে। কিন্তু ঋণদাতা সংস্থাদের নিয়ম মানতে গেলে অনেক সময় যথাসময়ে টাকা পাওয়া যায় না।
মূল এডিপিতে ১ হাজার ৪৭৫টি প্রকল্প ছিল। ২৬৯টি বেড়ে আরএডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৪৪টিতে। তবে এরমধ্যে নতুনভাবে অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে ২৪৬টি। অন্যদিকে, বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে ১৯০টি উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আরএডিপিতে সর্বোচ্চ খাতভিত্তিক বরাদ্দের মধ্যে প্রথমে রয়েছে পরিবহন (বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৪৭ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা, যা ২৪ দশমিক ৫৯ ভাগ)। এরপর ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন (প্রায় ২৬ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা, যা ১৩ দশমিক ৯১ ভাগ), বিদ্যুৎ (প্রায় ২৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা, যা ১২ দশমিক ২৫ ভাগ), শিক্ষা ও ধর্ম (প্রায় ২০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা, যা ১০ দশমিক ৫৯ ভাগ), বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (প্রায় ১৬ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা, যা ৮ দশমিক ৭০ ভাগ), গ্রামীণ অর্থনীতি তথা পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান (প্রায় ১৫ হাজার ৭৫৫ কোটি, যা ৮ দশমিক ১৭ ভাগ), স্বাস্থ্য, পুষ্টি জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ (প্রায় ১০ হাজার ১০৯ কোটি, যা ৫ দশমিক ২৪ ভাগ), কৃষি (প্রায় ৬ হাজার ৬০৯ কোটি, ৩ দশমিক ৪৩ ভাগ), পানি সম্পদ (প্রায় ৬ হাজার ৩৬৮ কোটি, যা ৩ দশমিক ৩০ ভাগ) এবং জনপ্রশাসন (প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা, যা ২ দশমিক ৬৭ ভাগ)।
মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৩০ হাজার ৫৮৯ কোটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ২৩ হাজার ৯৫৯ কোটি, বিদ্যুৎ বিভাগে ২৩ হাজার ৬৩১ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি, রেল মন্ত্রণালয়ে ১০ হাজার ২৪৯ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৯ হাজার ১৬ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ৭ হাজার ৬৮৬ কোটি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ৭ হাজার ৪৫০ কোটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৬ হাজার ৮৯৮ কোটি এবং সেতু বিভাগে ৬ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন