বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

নারী নির্যাতন কমাতে হলে ধর্মীয় অনুশাসন বাড়াতে হবে

জালাল উদ্দিন ওমর | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারী নির্যাতন অতিমাত্রায় আলোচিত বিষয়। সময়ের সাথে সাথে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি কেবলই বাড়ছে। ঘরে বাইরে সর্বত্রই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন মেয়ে বখাটে ছেলে কর্তৃক যৌন হয়রানি এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর এর প্রতিবাদ করলে নেমে আসছে নির্যাতন। এই যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক মেয়ের জীবনে ভয়াবহ দুর্ভোগ নেমে এসেছে। যৌন নির্যাতনের অপমান এবং যন্ত্রনা সইতে না পেরে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আবার যৌন হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য অনেক মেয়ে লেখাপড়া পরিত্যাগ করেছে। এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক লোক নির্যাতিত এমনকি জীবন ও হারিয়েছে। এদিকে এই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত কথা বললেও নির্যাতন কিন্তু কমছে না, বরং সময়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে আমরা ধর্মকে পরিত্যাগ করছি। আর ধর্ম ছাড়া মানুষ কখনো নৈতিক চরিত্রে সমৃদ্ধ হতে পারে না। আর নৈতিকতা ছাড়া কখনো নারী নির্যাতনসহ কোনো ধরনের অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা সম্ভব নয়। মানুষের নৈতিক অধঃপতনের প্রধান কারণ হচ্ছে ধর্মহীনতা। ধর্মকে পরিত্যাগ করে কেউ ভালো হতে পারেনি। আধুনিকতার নামে ধর্মকে পরিত্যাগ করার ফলে মানুষ হারিয়ে ফেলেছে চারিত্রিক মাধুর্য, নৈতিক মূল্যবোধ এবং মানবিকতা। ফলে অপরাধ বাড়ছে, নারী নির্যাতন বাড়ছে এবং যৌন নিপীড়ন বাড়ছে। আর নারী নির্যাতন চরিত্রহীন লোকদের অপকর্মের একটি দিক মাত্র। যে ব্যক্তি নারী নির্যাতনে জড়িত সে কিন্তু সকল ধরনের অপকর্মেই জড়িত এবং এটাই প্রমাণিত সত্য। সুতরাং সত্যিকার অর্থেই যদি আমরা নারী নির্যাতনমুক্ত এবং নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত একটি সমাজ চাই তাহলে ধর্মের অনুশীলন বাড়াতে হবে এবং ধর্মীয় অনুশাসনই কেবলমাত্র নারীর প্রতি সহিংসতা এবং যৌন নির্যাতন বন্ধ করতে পারে এবং এটাই একমাত্র পথ। কারণ প্রত্যেক ধর্মই নারী নির্যাতন এবং নারীর প্রতি যৌন হয়রানিকে নিষিদ্ধ করেছে।

কিছু মানুষ স্বীকার করুক বা নাই করুক, আল্লাহই এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। তিনি আমাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা এবং পালনকর্তা। তিনি মানুষকে নারী এবং পুরুষ এই দু’রূপেই সৃষ্টি করেছেন। নারী এবং পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। তাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে প্রেম, প্রীতি এবং ভালবাসা। নারী পুরুষের শারীরিক মিলনের মধ্যেই সৃষ্টি হয় নতুন একজন মানুষ। এভাবে চলে আসছে বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়া। সুতরাং নারী পুরুষের পারস্পরিক এই ভালবাসা এবং আকর্ষণ চিরন্তন, শ্বাশ্বত এবং সৃষ্টিগত। কিন্তু নারী পুরুষের এই ভালবাসাকে উপভোগ করার জন্য আল্লাহ একটি সুনির্দিষ্ট সীমারেখা দিয়েছেন। স্রষ্টা কেবল বিয়ের মাধ্যমেই নারী পুরুষের যৌন সম্পর্ককে বৈধ করেছেন। এর প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে মানব কল্যাণ এবং শান্তি। নিয়মমত ব্যবহারের কারণে যেই জিনিস ভালো ফলাফল দেয়, নিয়ম বহির্ভূত ব্যবহারের কারণে সেই একই জিনিস কিন্তু খারাপ ফলাফল বয়ে আনে। যেমন সঠিক ব্যবহারে বিদ্যুৎ মানুষের অনেক উপকার করে। আবার নিয়ম না মানার কারণে এই বিদ্যুতই মানুষের জন্য মৃত্যু নিয়ে আসে। একইভাবে নিয়ম মানলে নারী পুরুষের সম্পর্ক শান্তি আনে, আবার এই নিয়ম না মানলে নারী পুরুষের সম্পর্ক কেবল অশান্তি সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে শান্তির স্বার্থেই স্রষ্টা নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে নিষিদ্ধ করেছে এবং নারীদের জন্য শালীন পোশাক ও হিজাবের প্রবর্তন করেছে। পাশাপাশি পুরুষকেও তাদের দৃষ্টিকে সংযত করা এবং শালীন পোশাক পরার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহতায়লা পবিত্র কোরানে বলেন, ‘হে আদম সন্তান, আমরা তোমাদের জন্য পোশাক নাযিল করেছি যেন তোমাদের দেহের লজ্জ্বাস্থানসমূহ ঢাকতে পারো। এটা তোমাদের জন্য দেহের আচ্ছাদন ও শোভা বর্ধনের উপায় আর সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক’ (সুরা আরাফ-২৬)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা জাহেলী যুগের মত রূপ যৌবনের প্রদশর্নী করে বেড়িও না’ (সুরা আল আহযাব: ৩৩)। তিনি আরো বলেন, ‘হে নবী, তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ এবং মুমিন মহিলাদেরকে বলে দাও, তারা যেন নিজেদের ওপর নিজেদের চাদরের আচঁল ঝুলিয়ে দেয়। এটা বেশি ভালো নিয়ম ও রীতি। যেন তাদেরকে চিনতে পারা যায় ও তাদেরকে উত্যক্ত করা না হয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু’ (আল আহযাব: ৫৯)। এদিকে নারীদের প্রতি পুরুষের যৌন হয়রানির শাস্তি বর্ণনা করতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অপরিচিত নারীর প্রতি যৌন লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন তার চোখে উত্তপ্ত গলিত লোহা ঢেলে দেয়া হবে’ (ফাতহুল কাদির)। নারী পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইসলামের এই বিধানসমূহ বিজ্ঞানসম্মত এবং কল্যাণকর। এই কারণে নারী নির্যাতনের হার মুসলিম সমাজেই সবচেয়ে কম। পশ্চিমা সমাজ ধর্মকে পরিত্যাগ করে কিন্তু সুখী হতে পারেনি। অন্যায় আর অনৈতিক কাজে শীর্ষস্থান দখল করেছে। যৌনতাকে ফ্রি করা সত্তে¡ও, পশ্চিমা সমাজেই নারীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার। পারিবারিক অবকাঠামো সেখানে পুরোপুরিই ধ্বসে পড়েছে। বিয়ে না করে সেখানে নারী পুরুষেরা লিভ টুগেদার করছে। সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। কুমারী মাতা এবং অবৈধসন্তানের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পশ্চিমা সমাজের মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি মাদকসেবী এবং অপরাধকারী। পশ্চিমা সমাজেই মরণব্যাধি এইডসের প্রকোপ বেশি। আর এসবই ধর্মহীনতার পরিণাম। অপরদিকে মুসলিম সমাজসহ যে সমস্ত সমাজে এখনো ধর্মের প্রভাব রয়েছে, সেখানে অপরাধ এবং অনৈতিক কাজের পরিমাণ পশ্চিমাদের তুলনায় এখনো অনেক কম। এসব সমাজে এখনো পারিবারিক কাঠামো বিদ্যমান, এখনো মাদক গ্রহণের হার কম, এখনো নারী নির্যাতনের হার কম এবং এখনো এইডসের উপস্থিতি কম। মুসলিম দেশগুলোতে সংগঠিত অপরাধের পরিমাণ এখনো পশ্চিমা দেশগুলোতে সংগঠিত অপরাধের পরিমাণের চেয়ে অনেক কম। আর এটা হচ্ছে বাস্তবতা। সুতরাং এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে লাভ নেই। মানবতার কল্যাণের স্বার্থেই আজ আমাদের সবাইকে ধর্মের কাছে ফিরে যেতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে ধর্মীয় মূল্যবোধে গড়ে তুলতে হবে। ধর্মকে বাদ দিয়ে নৈতিকতা অর্জন করা এবং নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। ধর্মবিরোধীরা এটাকে স্বীকার করুক আর নাই করুক এটাই ইতিহাসের প্রমাণিত সত্য এবং বাস্তবতা । ধর্মকে বাদ দিয়ে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা কি পরিণতি নিয়ে এসেছে কয়েকটি উদাহরণ দিলে তা পরিষ্কার হবে। পশ্চিমা সমাজে নারীরা আজ সবচেয়ে বেশি স্বাধীন। অথচ সেখানেই নারীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, সবচেয়ে বেশি ধর্ষিত। সেখানেই দাম্পত্য জীবন সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী এবং ডির্ভোসের হার সবচেয়ে বেশি। ইতিহাসের পাতা থেকে এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য উপস্থাপন করছি। সিএনএন পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ২৯ শতাংশ আমেরিকান পুরুষ জীবনে ১৫ জন বা ততোধিক নারীর সংগে যৌন সম্পর্ক করেছেন। অপরদিকে ৯ শতাংশ নারী তাদের জীবনে ১৫ বা ততোধিক পুরুষের সংগে যৌন সম্পর্ক করেছেন। ১৫ বছর বয়সের আগে যৌনতার স্বাদ পেয়েছে এমন বয়স্কের সংখ্যা ১৬ শতাংশ। মাত্র ২৫ শতাংশ নারী এবং ১৭ শতাংশ পুরুষ বলেছে, তাদের ১ জনের বেশি জীবন সঙ্গী নেই। মাদক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২৬ শতাংশ পুরুষ এবং ১৭ শতাংশ নারী কোকেন ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিজিজ কন্ট্রোল সেন্টার-এর শাখা ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাটিস্টিকস ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ২০ থেকে ৫৯ বছর বয়স্ক ৬২৩৭ জন নরনারীর ওপর জরিপ চালিয়ে এই ফলাফল পায়। অপরদিকে বৃটেনের অফিস ফর ন্যাশনাল স্টাটিস্টিকস চালিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৩১ সাল নাগাদ বৃটেনে বৈধ মা-বাবার সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যাবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিগত এক দশকে অবৈধ জুটির সংখ্যা ৬৫ ভাগ বেড়ে ২.৩ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। শুধু লন্ডনের পরিবারগুলোর মধ্যে সিঙ্গেল মাদার বা স্বামীহীন মায়ের পরিবার রয়েছে ২২ ভাগ, যা বৃটেনের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। লন্ডনের মধ্যে ল্যামবেথের পরিমাণ ৪৮ ভাগ। তাছাড়া ইসলিংটনেও টিনএজ প্রেগন্যান্সির হার সর্বোচ্চ। ম্যানচেস্টারে ৪৬.৮ ভাগ, গ্লাসগোতে ৬.৪ ভাগ, লিভারপুলে ৪৪.৮ ভাগ, সাউথ ওয়ার্কে ৪৫.৭ ভাগ এবং বেলফোস্টে ৪২.৪ ভাগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘পল রবিসন হাইস্কুলের’ মোট ৮০০ ছাত্রীর ১১৫ জনই ‘কিশোরী মা’ হয়েছে বলে মার্কিন সিবিএস নিউজ জানিয়েছে। স্কুলটির প্রতি সাতজন ছাত্রীর একজন কিশোরী মা। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হয়তো আরো অনেক ছাত্রী নিজেদের ভেতর সন্তান বয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সেগুলো সনাক্ত হবার আগ পর্যন্ত আমরা সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না। অপরদিকে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবিবাহিত মায়ের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ২০০৭ সাল থেকে জন্ম নেয়া ১০টি শিশুর মধ্যে ৪টিরই জন্ম দিয়েছে অবিবাহিত মায়েরা। ধর্মহীন পশ্চিমা সমাজের চিত্র কিন্তু এটাই। একইভাবে পশ্চিমা দেশসমূহ তথাকথিত নারী স্বাধীনতা এবং নারী অধিকারের তীর্থ স্থান হলেও সেখানেই নারীরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, লাঞ্চিত এবং নির্যাতিত।

এ অবস্থায় নারী নির্যাতন মুক্ত একটি সুন্দর সমাজের জন্য প্রত্যেকের উচিত তার নিজ নিজ ধর্মকে অনুসরণ করা এবং এর আলোকে মানুষকে চরিত্রবান করে গড়ে তোলা। ইংরেজিতে প্রবাদ আছে, When money is lost nothing is lost , when health is lost something is lost , but when character is lost everything is lost.। সত্যি সত্যি চারিত্রিক অধঃপতনের কারণে আজ আমরা নৈতিকতা, বিবেকবোধ, চারিত্রিক দৃঢ়তা, সততা, মানবিকতা, ভালবাসা এবং দায়িত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছি। তাই আমাদের নতুন প্রজন্ম আজ নারী নির্যাতনসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে বাচঁতে হলে তরুণ প্রজন্মকে চরিত্রবান করে গড়ে তুলতে হবে। আর এর জন্য ধর্মকে অনুশীলন এবং পালন করতে হবে। সুতরাং, পিতা-মাতার দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে ছোট বয়স থেকেই ধর্মীয় মূল্যবোধ, নৈতিকতা, সততা এবং ন্যায়পরায়ণতা শিক্ষা দেয়া। তবে এ ক্ষেত্রে মাতার দায়িত্ব বেশি। এ জন্য ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বেনাপোর্ট বলেছিলেন, good mother, I will give a good nation. অর্থাৎ আমাকে একটি ভালো মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি ভালো জাতি দেব। দ্বিতীয়ত ছাত্ররা যাতে নৈতিক মূল্যবোধে গড়ে ওঠে, সেজন্য বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনতে হবে এবং চারিত্রিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। যদি পাঠ্য বইয়ে নৈতিকতা সম্পন্ন শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং শিক্ষকেরা যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে তাহলে অতি সহজেই একদল সুযোগ্য এবং চরিত্রবান মানুষ গড়ে উঠবে, যারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে নৈতিকতায় জীবনকে পরিচালিত করবে এবং অন্যায় ও অনৈতিক কার্যকলাপকে প্রতিরোধ করবে। এরা নারী নির্যাতন করবে না এবং নারীর প্রতি যৌন হয়রানি বন্ধ করবে।

সুতরাং, নারীর প্রতি সহিংসহতা ও যৌন নির্যাতনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি এবং সবাইকে চরিত্রবান নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলি। আমরা যদি মানুষদেরকে চরিত্রবান হিসাবে গড়ে না তুলি, তাহলে শুধু মাত্র আইন করে এবং শাস্তি দিয়ে নারী নির্যাতন বন্ধ করা যাবে না। ইংরেজিতে প্রবাদ আছে, Prevention is better than cure. অর্থাৎ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। শরীরে অসুখ হবার পর চিকিৎসা করে সুস্থ হবার চেয়ে অসুখকে প্রতিরোধ করাই উত্তম এবং এটাই সঠিক পথ। সুতরাং, আমাদেরকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে চলতে হবে এবং এরপরও যদি শরীরে অসুখ হয়ে যায় তাহলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে অসুখকে দূর করতে হবে। ঠিক একইভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা যদি বন্ধ করতে চাই তাহলে চরিত্রবান মানুষ তৈরি করতে হবে। তারপরও যদি কোনো মানুষ নারী নির্যাতন করে তাহলে তাকে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে। আর এটাই হচ্ছে নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজ গঠনের একমাত্র পথ।
লেখক: প্রকৌশলী ও উন্নয়ন গবেষক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন