বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্বনবির (সা.) ভাষ্য : যেসব কাজে মহামারি নেমে আসে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ৯:৫০ পিএম

মহামারি করোনায় কার্যত পুরো বিশ্ব অচল। মানুষের চলাফেরায় নিয়ন্ত্রণ আনতে দেশে দেশে কারফিউ জারি হচ্ছে। এ কারফিউ কোনো রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য নয়, বরং দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য ঘরের বাইরে চলাচল নিয়ন্ত্রণে। এ থেকে অনুমান করা যায় করোনাভাইরাসের কাছে কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে সারাবিশ্বের মানুষ।
মহামারি থেকে বেঁচে থাকতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারাবিশ্বের মানুষকে সতর্ক করেছেন। এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যে কাজে মানুষের ওপর নেমে আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে মহা পরীক্ষা অথবা আজাব-গজব।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।
- যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব রোগের উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।
- যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে, তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বালা-মুসিবত।
- যখন কোনো জাতি যাকাত আদায় করে না, তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো, তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না।
- যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়।
- যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব (কুরআন) মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।' (ইবনে মাজাহ)
বর্তমান পৃথিবীতে কার্যত মহামারি দেখা দেয়ার সবগুলো কারণই বিদ্যমান। অশ্লীলতা-বেহায়াপনায় চারদিক যেমন সয়লাব, তেমনি পৃথিবীজুড়ে চলছে ওজনে কম দেয়ার হিড়িক।
গরীব অসহায় মানুষের ক্ষুধা ও দারিদ্রতার চিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠলেও সে আওয়াজ পৌছে না সমাজের বিত্তশালীদের কানে। সম্পদশালীরা তাদের মালের যথাযথ যাকাত আদায় করছে না। অথচ ওই ব্যক্তির উপর যাকাত ফরজ। যার কিছুটা দিলেই গরবি-অসহায়ের অভাব মিটে যায়। যখনই মানুষ জাকাত দেয়া থেকে বিরত হয়, তখনই মহান আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে বৃষ্টি দেয়া বন্ধ রাখেন।
মহান আল্লাহ মানুষের জন্য জীবন ব্যবস্থা হিসেবে দিয়েছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। এ কুরআনের বিধান মেনে চলা প্রত্যেক নারী-পুরুষের জন্য আবশ্যক। যা মানুষ বিভিন্ন অজুহাতে ছোট নির্দেশও ছেড়ে দিচ্ছে। অথচ আল্লাহর বিধানের ব্যতিক্রম হলেই আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়া নেমে আসে শাস্তি। সাধারণ নিরাপরাধ মানুষও এ শাস্তি ভোগ করে। তাদের ওপর নেমে আসে জুলুম-অত্যাচার। হাদিসের ঘোষণাও এমনই।
কুরআনের বিধান অনুসরণ না করে নিজেদের মনগড়া বিধানে বিচার কাজ করে তখন মানুষ জুলুম অত্যাচারের শিকার হবে। আর তখন মাজলুম ও আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না। আর তাতে আল্লাহর আজাব ও গজব দুনিয়াতে নেমে আসে। হাদিসে এ আজাব-গজবের কথাই বলা হয়েছে। হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য তা থেকেই আশ্রয় লাভের নিমিত্তে আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করেছেন।
প্রাণঘাতী মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে প্রত্যেক মানুষের উচিত, আল্লাহর কাছে এ অন্যায় কাজগুলো থেকে বিরত থাকা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে বর্ণিত ৫টি কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Moniruzzaman Monir ২৪ মার্চ, ২০২০, ৭:২০ এএম says : 1
Absolutely right .
Total Reply(0)
*হতদরিদ্র দীনমজুর কহে* ২৪ মার্চ, ২০২০, ৯:৩৪ এএম says : 0
আল্লাহ তুমি আমাদের রহমত দান করো।আমাদের তুমি মসজিদ থেকে বেড় করে দিওনা।হে আল্লাহ তুমি যদি ফিরিয়ে দাও আমরা কোথায় যাবো।দয়া করো।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ২৪ মার্চ, ২০২০, ৯:৪১ এএম says : 0
মানুষের জীবন ব্যবস্থার যে মাধ্যম আল্লাহ পাকা দিয়েছেন তা হলো পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুভার্বে পৃথিবী যেখানে কম্পিত সেখানে পবিত্র কোরআনে আলহামদুলিল্লাহ’র সুরাটি রোগ মুক্তির সুরা হিসাবে নাযিল হয়েছে।
Total Reply(0)
*হতদরিদ্র দীনমজুর কহে* ২৪ মার্চ, ২০২০, ৯:৪২ এএম says : 0
হে আল্লাহ তুমি তো বলেছো।বান্দা পাহাড় পরিমান গুনা করে ফেলেছো? আমার রহমাত থেকে নিরাশ না হয়ে খমা প্রার্থনা কর ।আমি মাফ করে দেবো।এই মহাবিপদ থেকে আমাদের রখ্খা করো।আমিন।।
Total Reply(0)
Monjur Rashed ২৪ মার্চ, ২০২০, ৯:৪৯ এএম says : 0
Very relevant publication in today's context. Number of fake Muslims is abundant in the society, but number of " Momin" Muslims is very rare.
Total Reply(0)
rowson Habib ২৪ মার্চ, ২০২০, ২:০৬ পিএম says : 0
right
Total Reply(0)
rowson Habib ২৪ মার্চ, ২০২০, ২:০৭ পিএম says : 0
a tai Sorto
Total Reply(0)
ড.মনিরুজ্জামান মনির ২৫ মার্চ, ২০২০, ৮:৩৮ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ। আমরা আরো পরিপূর্ণ হেদায়েতের বাণী চাই।আমিন ইয়ারব।।
Total Reply(0)
মামুন ভুইয়া ২৫ মার্চ, ২০২০, ১১:৫৫ এএম says : 0
শাসক শ্রেণী থেকে কুলি মুজুর পর্যন্ত আমরা সকলেই বুঝা জরুরি কেন আমাদের উপর মহামারী আসে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন