শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে ঢাবি শিক্ষকের খোলা চিঠি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২০, ১০:১৫ পিএম

সাম্প্রতি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পৃথিবীতে মহামারী আকার ধারণ করে। আর এর প্রকোপ থেকে মুক্তি পায় নি বাংলাদেশও। ফলে এই মহামারির থেকে বাচার জন্য শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
চিঠিতে তিনি লিখেন,
সুপ্রিয় শিক্ষার্থী
করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত সভ্যতার ক্রান্তিকালে একান্ত মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে তোমাদের একজন শিক্ষক হিসেবে পত্রটি লিখছি।
শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রাণ সেই শিক্ষার্থী যখন মাতা-পিতা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশীসহ জীবন-প্রাণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে দিনাতিপাত করতে বাধ্য হয় তখন শিক্ষক হিসেবে আমাদের মানবিক-নৈতিক দায়িত্ব-দায়বদ্ধতা শতগুণ বেড়ে যায় এটাই স্বাভাবিক।
যতদূর জানে করোনাভাইরাস এর জীববিজ্ঞানগত-রোগতত্ত্বগত কার্যকারণ-বিবর্তন নিয়ে সংশ্লিষ্ট গবেষকরা এখন পর্যন্ত খুব বেশি জানেন না। একই সাথে আমরা জানি না যে এ রোগের সম্ভাব্য সামাজিক অর্থনৈতিক অর্থনৈতিক সম্ভাব্য সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব-অভিঘাত আসলে কেমন হতে পারে। জানি না কারণ, এ কোন সাধারণ 'ঝুঁকি' নয়; এ হল 'অনিশ্চয়তা' যা পরিমাপ অসম্ভব।
শিক্ষক মাত্র আশাবাদী মানুষ-মুক্তচিন্তা সাহসী মানুষ ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একজন শিক্ষক হিসেবে বলছি; তোমরা কোনভাবেই আতঙ্কিত হবে না এবং প্রিয়জনদের আতঙ্কিত হওয়া থেকে মুক্ত করবে; সাহস যোগাবে এবং অবশ্যই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য-পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে চলবে; প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে যাবে এবং অন্যকে পাঠাবে। অবশ্যই ভুলবে না যে তোমরা এ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের গর্বিত শিক্ষার্থী। এ গর্ববোধ তোমাদে সাহসী করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
আমি সন্দেহাতীতভাবে আশাবাদী যে কোভিড-১৯ এর ঊর্ধ্বমুখী রেখা নিম্নগামী হবে দ্রুত এ রোগের রোগ মুক্তির ওষুধ আবিষ্কৃত হয়ে যাবে;মানুষের সংহতি বাড়বে; মানুষ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। আর চতুর্থ বিপ্লবের এযুগে আমরা পারস্পরিক যোগাযোগ অনেক গুন বাড়াতে সক্ষম। প্রয়োজনে আমরা অবশ্যই সেটাও করবো; প্রয়োজনে আমরা আমাদের মানবকল্যাণ-উদ্দিষ্ট জ্ঞানার্জন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার করবো।
বংশ পরম্পরায় আমরা অনেক ধরনের বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু যেহেতু মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি ও ক্ষমতা অসীম সেহেতু আমরা প্রতিবারই বিপদ আপদকে পরাস্ত করেছি এবারও সেটাই হবে।
আরো একটা কথা তোমাদের শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখবে প্রয়োজন যাই হোক না কেন কুণ্ঠাবোধ করবে না। কায়মনোবাক্যে আশা করি অতি দ্রুত আবারো শ্রেণিকক্ষ ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে তোমাদের সাথে দেখা হবে কথা হবে। তোমাদের প্রিয় জন তোমরা সুস্থ থাকো ভালো থাকো এই কামনায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন