ভারতে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। গণপরিবহণও বন্ধ। কিন্তু বিপদের দিনে পরিজনদের পাশে না থাকতে কি মন চায়? তাই তো বাধ্য হয়ে ১৩৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে নিজের বাড়িতে পৌঁছলেন এক দিনমজুর। আপাতত ১৪ দিন গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হবে তাকে।
নরেন্দ্র শেলকে নামে ওই ব্যক্তি দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি পুনেতে থাকতেন। দিনকয়েক করোনা আতঙ্কে চিন্তিত ছিলেন তিনি। চোখের পাতা এক করতে পারেননি। কর্মস্থলে প্রায়শই অমনোযোগী হয়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে তাকে। একদিন হঠাৎ বাড়ি ফেরার আশায় পুনে থেকে নাগপুর আসার জন্য ট্রেনে চড়ে বসেন তিনি।
ইতিমধ্যে আচমকাই লকডাউনের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। বন্ধ হয় যায় গণপরিবহণ। আটকে যায় ট্রেন। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে বাড়ি ফিরবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান নরেন্দ্র। বহু মানুষকে ফোন করে সাহায্য চান তিনি। কিন্তু মেলেনি সাহায্য। তাই বাধ্য হয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন হেঁটেই বাড়ি ফিরবেন। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করলেন নরেন্দ্র। একটানা দুদিন ধরে হাঁটতে থাকেন তিনি। হাঁপিয়ে গিয়েছেন। ভেবেছেন একটু খাবার পেলে ভাল হয়। কিন্তু পথে মেলেনি এতটুকু খাবার। এই পরিস্থতিতে শুধুমাত্র জল পান করেই খিদে তেষ্টা মেটান ওই দিনমজুর।
গত বুধবার রাতে রাস্তায় টহল দেয়া পুলিশকর্মীরা নারেন্দ্রকে দেখতে পান। লকডাউনের মাঝে কেন রাস্তায় হাটছেন তিনি, প্রশ্ন করেন তারা। উত্তরে গোটা ঘটনা খুলে বলেন ওই দিনমজুর। তখনই পুলিশ তাকে প্রায় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় তার। তবে পরীক্ষায় করোনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত ১৪ দিন গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। এরপর খাবার খাইয়ে ওই দিনমজুরকে পুলিশের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেয় পুলিশ। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন