শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

করোনা প্রতিরোধে চলছে বিভিন্ন কার্যক্রম

অভ্যন্তরীণ ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০৭ এএম

আতংকের নাম করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে ২১ হাজারের অধিক মানুষ মারা গেছেন। এই মৃত্যু মিছিলে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের ৫ জন। প্রতিদিনই নতুন নতুন আক্রান্তের খবর শোনা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ বিষয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন- 

বান্দরবান থেকে মো. সাদাত উল্লাহ জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বান্দরবান শহরের জীবানু নাশক স্প্রে ছিটানো কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। গত বুধবার সকাল থেকে বেলা ১২টার পর্যন্ত এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ও সেবিকা কর্মীরা এই কার্যক্রমে অংশ নেয়। শহরের ট্রাফিকমোড হয়ে বাজার এলাকা, মধ্যমপাড়া, উজানীপাড়া ও জাদীপাড়া এলাকায় জীবানু নাশক স্প্রে ছিটানো হয়। এসময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. অংশৈ মারমা, জেলা পরিষদ সদস্য। এসময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত থেকে রক্ষা পেতে সকলকে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন প্রচার প্রচারণায় যেসব তথ্য দেয়া হচ্ছে। সেসব তথ্য অনুসরণ করা এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন তিনি। জীবানু নাশক স্প্রে ছিটানো কার্যক্রম পরির্দশনের পাশাপাশি উজানীপাড়া বৌদ্ধ বিহারের ভান্তেদের মাঝে লিপলেট ও মাস্ক বিতরণ করেন। জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য জেলা পরিষদের সহযোগিতায় ২৪মার্চ পরিষদ হলরুমে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক ও সেবিকাদের কর্মশালার মধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এসময় পরিষদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের গামবুট, মাস্ক, রেইন কোট. গ্লাবস ও স্প্রে মেশিন প্রদান করা হয়।
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা না মেনে দোকানপাট খোলা রাখায় সকাল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলার গুরুত্বপুর্ণ সড়ক, হাটবাজার ও গ্রাম-গঞ্জে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ।
গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আনোয়ারা সদর, কালাবিবি দিঘী, চাতরী চৌমুহনী বাজার, বন্দর কমিউনিটি সেন্টার, বটতলী রুস্তমহাটসহ উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং গ্রাম-গঞ্জে এ অভিযান চালায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, সরকারি নির্দেশনার আলোকে ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ঔষুধদের দোকান, কাঁচা বাজার, মুদির দোকান ছাড়া, গণপরিবহন থেকে শুরু করে সব কিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কোনো স্থানে জনসমাগম না করার জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর আহমদ চৌধুরী, আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দুলাল মাহমুদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর চিকিৎসকদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধক সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে, এমন গাউন, ডিসপোজাল গাউন, থার্মাল স্কানার, ক্যাপ, মাস্ক, গ্লাভস, চশমা ও সু-কভার। সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান ব্যক্তিগত অর্থায়নে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এসব সামগ্রী কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজী আকতার। এসময় সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মঈন তালুকদার ও ইসরাত জাহান সোনালীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ঝালকাঠি শহরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য জীবানুনাশক স্প্রে করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন হোসেন আমুর নির্দেশে গত বুধবার বিকেল ৩টায় শহরের রাস্তাঘাটে ট্রাকে করে জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রম প্রতিরোধে প্রতিদিন এ কার্যক্রম চালানো হবে। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ঝালকাঠি পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার। এ সময় পৌরসভার কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। পরে কোর্ট রোডে পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরতণ করা হয়। এছাড়াও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য তিনি একটি করে সাবান তুলে দেন খাদ্যসামগ্রী নিতে আসা মানুষের হাতে।
করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। গত বুধবার সকালে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়। পরে তিনি পৌরসভা, পৌর খেয়াঘাট, থানার মোড়, চৌমাথা, সার্কেল অফিস মোড়, ফায়ার সার্ভিস মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পথচারীদের মাস্ক দেওয়া হয়। মাস্ক বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী রাজিব আহম্মেদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ স্পাদক যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন মিঠু। এদিকে ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন আহম্মেদ সালেকের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের মাস্ক বিতরণ করা হয়।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কলাপাড়ায় নোভেল করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ করেছেন আইনজীবীরা। গত বুধবার কলাপাড়া আইনজীবী সমিতির আয়োজনে কলাপাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সড়কে এসব লিফলেট বিতারণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী জজ মো. কামাল হোসেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শোভন শাহরিয়ার, কলাপাড়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. চুন্নু তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম মিয়াসহ সকল আইনজীবীরা।
অপরদিকে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি লক্ষে মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশ বিতরণ করেছে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ। পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে ঘুরে শ্রমজীবী, ভ্যানচালক, অটোবাইক, মোটরসাইকেল চালকসহ সকল পেশার মানুষের মাঝে এসব পণ্য বিতরণ করা হয়। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়জুল ইসলাম আশিক তালুকদারসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ কার্যক্রমে আংশ নেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়জুল ইসলাম আশিক তালুকদার বলেন, দেশের দুর্যোগপূর্ণ সময় বরাবরের মতই জনগণের পাশে দড়িয়েছে ছাত্রলীগ। করোনা মোকাবেলায় উপজেলার ছাত্রলীগের সকল ইউনিট পটুয়াখালী-৪, কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসনের সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান মুহিব এমপির নির্দেশেই শ্রমজিবী ও নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশ বিতরণ করা হয়।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোর জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা তথ্য অফিস। জেলা সদর ছাড়াও সাতটি উপজেলায় বিলবোর্ড স্থাপন, পোস্টারিং, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে চলছে প্রচারণা।
নাটোর সদরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এবং সাতটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে স্থাপন করা হয়েছে দুই প্রকারের মোট ১৮টি আকর্ষণীয় বিলবোর্ড। সাদা জমিনের একটি বিলবোর্ডে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়ম উল্লেখ করে বলা হয়েছে-হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিগণ যদি নিয়ম ভঙ করেন, তাহলে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন ২০১৮ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আকাশী রঙের নজরকাড়া অপর বিলবোর্ডে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সচিত্র নিয়ম-কানুন স্থান পেয়েছে। জেলার জনসাধারণের মাঝে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি প্রতিরোধে জনসমাগমের দর্শনীয় স্থানগুলোতে বিশ হাজারের অধিক হাজার পোস্টার লাগানো হয়েছে। মাইকিংকালে মানুষের হাতে হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে পাঁচ লিফলেট। জেলা তথ্য অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই। আর এই সচেতনতা সৃষ্টিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন নাটোরের জেলা তথ্য অফিস। ভবিষ্যতের যে কোন পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে করণীয় সম্পর্কে তথ্য দিয়ে যাবে জেলা তথ্য অফিস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন