শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অঘোষিত লকডাউন ঢাকা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০৫ এএম

সময়ের ব্যস্ত থাকা রাজধানী ১০ দিনের ছুটিতে খাঁখাঁ করছে। সারাদেশে বাস, রেল, লঞ্চ ও বিমান চলাচল বন্ধ। বন্ধ সব ধরনের গণপরিবহন। সব অঞ্চলে রাস্তায় লোক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। লোকসমাগম ঠেকাতে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। রাজপথ যেন পরিণত হয়েছে মানবশূন্য। এ যেন অঘোষিত লকডাউন

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের ছুটিতে যতোটা ফাঁকা হয়, এখন রাজধানী তার চেয়েও জনশূন্য, নিস্তব্ধ। খুব প্রয়োজনীয় জিনিপত্র ছাড়া বন্ধ সবকিছুর দোকান। নেই কোনও যানবাহনও।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত মঙ্গলবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সবধরণের গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেন। সরকারের এমন ঘোষণার পর গতকাল সকাল থেকে কোনও ধরণের পরিবহন চালাচল করছে না। নগরীর সড়কগুলোও ছিল জনমানবশূণ্য। এর আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়েছে বিমান, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল।

সব মিলিয়ে এ যেন এক যুদ্ধাবস্থা। থমথমে চারপাশ। এ যুদ্ধ প্রাণঘাতী করোনার বিরুদ্ধে। এতে জয়ী হতে হলে বাইরে নয়, ঘরে অবস্থান করাই অতি জরুরি। যারা আজ ঘরে, তারাই এ যুদ্ধের বীর। যে যার যার ঘরে অবস্থান নিয়েই নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। আর তাতেই পরাজিত হবে কোভিড-১৯ ভাইরাস।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথাও তেমন জনসমাগম চোখে পড়েনি। কেউ বেরোচ্ছে না ঘর থেকে। খুব জরুরি দরকারে বের হলেও পুলিশকে যথাযথ কার্যকারণ দেখাতে হবে। তবে এই কড়াকড়ির আওতামুক্ত আছে কেবলমাত্র জরুরি সেবাগুলো। আর বিশেষ কাজে বের হওয়া গুটিকয় গাড়িগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।

জানতে চাইলে সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস-মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, রাস্তাঘাতে কোনও লোকজন নেই। এমন পরিবেশ আর কখনও হয়নি। দূরপাল্লা ও সিটি বাস সার্ভিস বন্ধ। আমাদের টার্মিনালের শ্িরমকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সবধরণের যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী রেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

এদিকে করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করেও মানুষজনকে ঘরে অবস্থানের কথা প্রচার করা হচ্ছে। ডিএমপি থেকে জানানো হয়, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই সময় সবাইকেই ঘরে অবস্থান করতে হবে। কঠোরভাবে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মুদি দোকান থেকে সুপারশপ সব ফাঁকা! শহর লকডাউন ঘোষণার আগেই যে যেমন পেরেছে দুই হাত ভরে কিনেছে। অন্তত মাসখানেকের খাবার, ওষুধ, জীবাণুনাশক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ফেলেছে অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু মহামারীর মধ্যে সামর্থ্যবানদের এই মজুদদারিতে সমাজের আরেকটি বড় অংশ যে অনাহারে মারা পড়তে পারে এ কথা কেউ ভাবছে না। তারই প্রমাণ মিললো রাজধানীর ফাঁকা রাস্তায় যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান কয়েকজন রিকশাচালককে দেখে। পল্টনে রিকশাচালক ময়েজ বলেন, সকাল থেকে রাস্তায় আছি। একজন মাত্র যাত্রী পেয়েছি। ভাড়া মাত্র ২০ টাকা। দুপুর পর্যন্ত আর কোনো যাত্রীর দেখা পাইনি। মতিঝিল শাপলা চত্ত¡রে আরেক রিকশাচালক বলেন, রাস্তায় মানুষই নাই। ভাড়া মারবো কিভাবে? তারপরেও আশায় আছি যদি পেয়ে যাই। তা না হলে খাবো কী?

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack ali ২৭ মার্চ, ২০২০, ১২:২৬ পিএম says : 0
Government must feed the poor people and also those who loot our hard earned tax payer money they should returned the money and help the poor.. Money will not be able to protect you from coronations... Fear Allah and repent...
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন