বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জনশূন্য ঢাকায় সুযোগ নিতে পারে অপরাধীরা

সুনসান নিরবতায় চুরি-ডাকাতির আশংকা

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০৪ এএম

রাজধানীতে অপরাধ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন নগরবাসী। বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ছোট দোকানিরা রয়েছেন চুরির আতঙ্কে। করোনাভাইরাসের মহামারী প্রতিরোধে সবার ঘরে অবস্থানের কারণে ঢাকার রাস্তা একেবারে সুনসান নিরব। এ অবস্থার সুযোগে চুরি-ডাকাতি হতে পারে বলে অনেকেরই আশংকা।
তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মহানগরীতে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহলে রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী ও নাইট গার্ডদের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। এই ক’দিনে অপরাধ প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়া নগরীতে পর্যাপ্ত সেনাবাহিনীর টহল রয়েছে বলে দাবি পুলিশের কর্মকর্তাদের।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত দুদিন ধরে কার্যত ঢাকা অচল। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে দেখা যাচ্ছেনা। এমন জনশূন্য ঢাকায় অপরাধী ও মাদকসেবীরা অপরাধ করতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারী প্রতিরোধে প্রায় সবার ঘরে অবস্থানের কারণে সুনসান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ যাতে চুরি-ডাকাতি না করতে পারে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে।
সবুজবাগের ব্যবসায়ী মোজাহিদুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মতিঝিলে তার একটি ছোট অফিস রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মচারীদের ছুটি দিয়ে তিনি বাসায় রয়েছেন। করোনাভাইরাস সচেতনতা ও আতংকে পরিবারের সাথে বাসায় থাকলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর পুরো নগরী যেন ভূতুরে রূপ নেয়। রাতের আঁধারে কেউ তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে সব কিছু নিয়ে গেলে দেখার কেউ নেই। শুধু তাই নয়, কোন দুঘর্টনা ঘটলে দ্রæত খবর পাওয়ারও কোন সুযোগ নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মালিবাগের মুদির দোকানদার হাবিবুর রহমান জানান, সন্ধ্যার আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরে যাই। যদি রাতের বেলায় শার্টার ভেঙ্গে চুরি হয় তা হলে পথে বসে যেতে হবে। ভয় আর দুঃচিন্তা নিয়ে রাত শেষে সকাল হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মিরপুরের ২নম্বরে মোবাইল ফোনের ব্যবসা করেন জালাল আহম্মেদ। স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে তার একটি ছোট্ট দোকান আছে। তিনি বলেন, দোকানে আমি একাই বসি। তবে গত ৩ দিন ধরে দোকান বন্ধ। আমার বাসা শিয়ালবাড়ি। সেখান থেকে এসে দিনে একবার দোকান দেখে যাই। সবার দোকানই বন্ধ। একজন নিরাপত্তাকর্মীও আছেন। তবে শহরের যে অবস্থা তাতে ভয় লাগে। তাই কিছু মোবাইল ফোন বাসায় নিয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, এখন সবার মুখ আটকা। কে কখন কীভাবে চুরি করবে ঠিক নেই। মাদকসেবীরা দোকানের শাটার ভেঙে ফেলতে পারে।
আদাবর থানার শেখেরটেক এলাকায় ইলেকট্রিক পণ্যের একটি দোকান আছে শাহজালাল নামে এক ব্যবসায়ীর। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি দোকান বন্ধ রেখেছেন। তবে সড়কে মানুষ চলাচল না থাকায় তিনি চিন্তিত। দোকানে চুরি হয় কিনা সে আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। শাহজালাল বলেন, এখন রাত দিন সমান। সবাই নিজেদের জীবন নিয়ে চিন্তিত। কোথায় কী হচ্ছে তা কেউ খবর নেবে না। দোকান কেউ তুলে নিলেও মানুষ বাইরে বের হবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, সব এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল রয়েছে। এরমধ্যে কোনও অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সুযোগ নেই। সন্দেহভাজন কাউকে মাস্ক পরা দেখলে তাদের জেরার মুখে পড়তে হবে। ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, রাজধানীতে গত কয়েকদিনে অপরাধ হ্রাস পেয়েছে। অপরাধ সংঘটিত হতে হলে ভিকটিম, স্থান ও সময় প্রয়োজন। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি নেই। পুলিশ ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন