শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের ১.৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পিপিই দেবে বেক্সিমকো

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২০, ৭:২০ পিএম

বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারীতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর অত্যধিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে যেসব স্বাস্থ্যসেবা কর্মী সরাসরি কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত আছেন, তাদের সুরক্ষায় পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট), ওষুধ ও টেস্ট কিট সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে করপোরেট খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপ। বেক্সিমকো গ্রুপের ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগ বেক্সিমকো ফার্মা ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের মধ্যে এসব উপকরণ বিতরণ করা শুরু করেছে। এই উদ্যোগে সহায়তা দিতে বেক্সিমকো গ্রুপ ১৫ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছে।

শনিবার (২৮ মার্চ) বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ও কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে প্রথম ধাপের উপকরণ হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো, আইসিডিডিআর,বি’র সংক্রমণশীল রোগ বিভাগের সিনিয়র পরিচালক প্রফেসর অ্যালেন রস, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি ডা. বর্দন জং রানা, সিডিসি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান, আইইডিসিআর’র পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদা সেব্রিনা ফ্লোরা ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমান বলেন, যে কোনো ধরনের জাতীয় দুর্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে বেক্সিমকো গ্রুপ সবসময়ই বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, কভিড-১৯ রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যখন বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই আক্রান্ত হচ্ছে, তখন এই মহামারীর প্রভাব মোকাবিলায় আমরাও এক নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মুখে।

তিনি বলেন, পিপিই প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এই মুহুর্তে একটি অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আর বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের এই প্রয়োজনের সময় সাড়া দিতে পেরে আমরা গর্বিত। দায়িত্বশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা এই সাংঘাতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারকে আন্তরিকভাবে সহায়তা প্রদান করা অব্যাহত রাখবো।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশের করপোরেট খাত তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে ভীষণভাবে সচেতন। এ ধরনের যেকোনো সংকট মোকাবিলায় তারা সবসময়ই জাতীয় উদ্যোগে সামিল হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্যে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে যুদ্ধ ও মানবতার জন্য মহাপরীক্ষা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাত উভয়কে সম্পৃক্ত করে সকল দিক থেকে এই যুদ্ধ লড়তে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমি বিশ্বাস করি বেক্সিমকো গ্রুপের এই উদ্যোগ অন্যান্য ছোটবড় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের সাধ্যমত এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের সহায়তায় এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে।

 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৪৮ জন কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এই রোগে মারা গেছেন ৫ জন। এছাড়া কোয়ারেন্টাইনে থাকা অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, এই বৈশ্বিক সংকটের সময় বাংলাদেশের এখন জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য ওষুধ, রোগ শনাক্তকরণের কিট ও সম্মুখভাগে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সুরক্ষায় পিপিই প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ডাক্তার, নার্স ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং হাসপাতালের কর্মকান্ড যতদূর সম্ভব স্বাভাবিক রাখতে পিপিই সরবরাহ অব্যাহত রাখবে বেক্সিমকো। এছাড়া কভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ ও সহায়তা কর্মসূচিতে বেক্সিমকো ফার্মা সম্পৃক্ত থেকেছে।

তিনি বলেন, বেক্সিমকো ফার্মার নেয়া উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে সঙ্কটাপন্ন কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিদেশ থেকে অতিপ্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর সংগ্রহ করা, আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন একটি গবেষণা সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করা, নতুন আধুনিক পরীক্ষাগার স্থাপনে ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য হাসপাতালের সুবিধা বৃদ্ধিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা ইত্যাদি

 

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত খুবই উচ্চমানের ‘টিওয়াইভিইকে প্রোটেকটিভ কাভারঅল’, মুখ বন্ধনী, গ্লাভস, প্রোটেকটিভ গগলস সহ এই পিপিই দুই ধাপে বিতরণ করবে বেক্সিমকো ফার্মা। প্রথম দফায় দুই পরীক্ষা কেন্দ্র অর্থাৎ আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর,বি এবং কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সরকার নির্ধারিত হাসপাতাল অর্থাৎ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কমলাপুর বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতাল, নয়াবাজার মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর বিএভিএস মেটারনিটি হাসপাতাল, কামরাঙ্গিচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, জিঞ্জিরা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় এসব পিপিই সরবরাহ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে সারা দেশজুড়ে ১৫০ টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে এই পিপিই সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
*হতদরিদ্র দীনমজুর কহে* ২৮ মার্চ, ২০২০, ৮:১৪ পিএম says : 0
এ ভাবে সরকারের সেবার পাশাপাশি ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানের সেবার হাত বাড়িয়ে দিন।আমরা কর্মহীন হতদরিদ্র দীনমজুরদের ঘরে ঘরে এখন থেকে ই খ্খুধার মাতম শুরু হয়েছে।কবে যে কাজ করে আহার যোগার করবো সেই চিন্তা ও বাসাবেধেঁছৈ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন