মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

করোনা : দ্রুত পদক্ষেপ নয়তো মহাবিপদ আসন্ন

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২০, ১১:১৮ এএম

মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে অতি দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাংলাদেশে এই ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে জাতীয় প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান পরিকল্পনা নথিতে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকায় জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র শনিবার (২৮ মার্চ) রাতে জানায়, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর নাগরিক সমাজের বেশ কিছু অংশীদার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ওই পরিকল্পনা নথি তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) বৈশ্বিক নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৈরি করা ওই পরিকল্পনা নথি তৈরির উদ্দেশ্য হলো, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে সরকারের সাড়া প্রদানে সহায়তা করতে জাতিসংঘের সংস্থা ও অংশীদারদের কার্যকরভাবে প্রস্তুত করা।
জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান পরিকল্পনা নথি তৈরির কথা বললেও সেখানে বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাবে সম্ভাব্য মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করেনি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক স্বীকৃত যে মডেলিং পদ্ধতির দ্বারা এই নথিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে দেখানো হয়েছে এই ভাইরাসটির বিস্তাররোধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই মহামারির কতটা বিস্তার ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে পরিকল্পনা নথি প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, পরিকল্পনা নথির শুরুতেই করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা অনুধাবন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এটি এমন একটি প্রাণঘাতী রোগ যা আমাদের সাড়া দেওয়ার গতির চেয়ে বেশি গতিতে সংক্রমিত হয়। ৭৭০ কোটি জনগোষ্ঠীর এই বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি সংক্রমণের হার উচ্চ ও আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় জনঘনত্ব বিবেচনা করে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত পন্থা অবলম্বন করে ধারণা করা যায়, প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নেওয়া না হলে মহামারির প্রভাবে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।
জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিতে অতি দ্রুততার সঙ্গে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাধ্যতামূলক ‘কোয়ারেন্টাইন’ ও ‘আইসোলেশন’, এই ভাইরাসটির ঝুঁকির ব্যাপারে ব্যাপকভাবে অবহিত করা, সামাজিক দূরত্ব (সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং), সামাজিক সুরক্ষা (সোশ্যাল প্রোটেকশন) এবং বিদ্যালয় ও জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার সঙ্গে জাতিসংঘ সম্পূর্ণভাবে একমত ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র আরও জানায়, এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া রোধ করার জন্য অতি দ্রুত কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে তা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আমরা সবাইকে প্রতিরোধমূলক সব ব্যবস্থা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। এর ফলে, সরকার ও জাতিসংঘের সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশব্যাপী স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্য বেশ কিছুটা সময় পাবে এবং তার ফলে বাংলাদেশ সরকারকে এই মহামারি মোকাবেলা করতে সহযোগিতা করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এখনো কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন