মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলে কি আমরা খুশি হই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আক্রান্ত ৪৮, সুস্থ ১৫ ও মৃত্যু ৫ জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি। এই সময়ে ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে কারও শরীরেই করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ৪৮ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫ জন। এখনও চিকিৎসাধীন ২৮ জন।

গতকাল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা অনেক আগে প্রস্তুতি নিয়েছি বিধায় বাংলাদেশ ভালো আছে। দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশকারীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, অনেকে বলছে, সংখ্যা এত কম কেন। কেন, সংখ্যা বেশি হলে কি আমরা খুশি হই? আমরা কি চাই বেশি বেশি লোক সংক্রমিত হোক? বেশি বেশি লোক মৃত্যুবরণ করুক? আমরা তো চাই আমাদের দেশের লোক সংক্রমিত না হোক। আমাদের দেশের লোক মৃত্যুবরণ না করুক। এটিই সবচেয়ে বড় বিষয়।

আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়। তখন বলা হয়, এই তিন জনের মধ্যে দু’জন ইতালি থেকে স¤প্রতি দেশে ফিরেছেন। তাঁদের কাছ থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত দেশে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

অনলাইন ভিডিওতে যোগ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকাতেই শুধু নয় ঢাকার বাইরেও মোট ১১টি জায়গায় করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হবে। বাংলাদেশ সরকার আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে বলেই ইউরোপ-আমেরিকার মতো আক্রান্তের সংখ্যা নেই বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ছুটি শেষে গ্রাম থেকে মানুষ ফিরলে আবার দেশ ঝুঁকিতে পড়বে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করব। আপনারাও করবেন, দেশবাসী করবেন, প্রধানমন্ত্রীও করবেন। আমাদের এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি দেখব। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে পরিস্থিতি জানাব। তিনি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

পিপিই’র সংকট প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে তিন লাখ পিস পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) বিতরণ করেছি। প্রত্যেকদিন ২০-৩০ হাজার পিপিই পাচ্ছি। আমদানির জন্য অর্ডার দেওয়া আছে। এপ্রিলের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সবগুলো চলে আসবে। পাঁচ লাখ পিস অর্ডার দেওয়া আছে। একই সঙ্গে কিটের বিষয়ে অনেক কথা কানে এসেছে। আমাদের এখন হাতে ৪৫ হাজার কিট আছে। আরও অর্ডার কোয়ানটিটি আছে ৮৫ হাজার।

তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। তারা কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সে সময় আরও ১০টি দেশ ছিল। তারা সন্তুষ্টি জানিয়েছে। জাতিসংঘও সন্তুষ্টি জানিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশে এখন আড়াই শ’ ভেন্টিলেটর আছে। আরও তিন শ’ স্থাপনের প্রক্রিয়ায় আছে। অনেক বড় দেশেও এতগুলো ভেন্টিলেটর থাকে না। আমরা অনেক আগে প্রস্তুতি নিয়েছি বিধায় বাংলাদেশ ভালো আছে। ইউরোপ, আমেরিকার অবস্থা কেমন, সে বিষয়ে আপনারা জানেন উল্লেখ করেন তিনি। তাই বিভ্রান্তিকর কোনো নিউজ পরিবেশন করা উচিত নয়। এখন আমাদের কাজ সবাই মিলে কাজ করা। এখন যেটা আমরা করছি। আমাদের সঙ্গে সারা দেশের মানুষ আছে।

জাহিদ মালেক বলেন, অনেকে বলছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ যদি আগে থেকে করত, তাহলে পরিস্থিতি এমন হতো না। দেশে যত বিদেশি এসেছেন, তাঁদের দেশে আসা ঠেকানোর দায়িত্ব কি আমাদের? আমরা কি প্লেন আটকাতে পারব? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসা দিতে পারে। অনেক ব্যবসায়ী বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায়ী। তাঁদের ইউরোপ-আমেরিকা থেকে অর্ডার বন্ধ হয়ে গেছে। এর দায় কি আমাদের?

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স¤প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো বড় মন্ত্রণালয়। এখানে অনেক কর্মকর্তা আছেন। চিকিৎসকেরা আসা-যাওয়া করেন। এর মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। তিনি কোয়ারেন্টিনে আছেন কি না, প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি তো কাজ করছি। টেস্ট করিয়েছি, আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হইনি।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন