বগুড়ায় সেই মাসুদ রানা (৪৫)করোনায় আক্রান্ত ছিলেননা বলে আই ই ই সি ডি আর এর পরীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবীর।
ফলে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া মাসুদের বাসা সংলগ্ন যে ১০টি
বাড়িকে লগ ডাউন ঘোষণা করা হয় ওই ঘোষনা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ গাজীপুরের একটি দোকানের কর্মচারি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা হলে সে বগুড়ার শিবগঞ্জউপজেলায় চলে আসে।
কারণ তার স্ত্রী এনজিও সংস্থা টিএমএসএসের একজন কর্মি হওয়ায় সে ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান সহ শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দান হাটা ইউনিয়নের দাড়িদহ গ্রামের ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
২৫ মার্চ তারিখে মাসুদ দাড়িদহ গ্রামে পৌঁছার পর গুরুতর জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হয়। ২৬ তারিখে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাসুদের স্ত্রী তার স্বামীকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রতিবেশি কারো সাহায্য পায়নি। কোনো রিক্সা / ভ্যান ওয়ালারা বেশি ভাড়ায়ও তাকে বহন করতে
রাজি হয়নি।
সারারাত বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেও কোনো লাভ হয়নি। সবাই অসুস্থ মাসুদের স্ত্রীর কাকুতি মিনতিকে উপেক্ষা করেছে, শুধু এই ভয়ে যে সে হয়তো ছোঁয়াচে রোগ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।
অত্যন্ত অসহায় ও করুণ অবস্থায় মাসুদের মৃত্যুর পর সমস্যা তৈরী হয় তার জানাজা নিয়ে।
কেউ তার জানাজায় এগিয়েতো আসেইনি। উল্টো পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের
উদ্যোগে নেওয়া জানাজা ও দাফনের কাজে বাধা দিতে ব্যাপক লোক সমাগম করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সব চেষ্টায় চালায়।
অবশ্য শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিবগঞ্জ সার্কেলের এএসপি কুদরত ই খুদা ও ওসি মিজানুর রহমানের অনমনীয় দৃঢতায় শেষ পর্যন্ত মাসুদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয় ২৭ মার্চ রাত এশার নামাজের পর।
জানাজা ও পরিচালনা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু।
২৭ তারিখেই মৃত মাসুদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা শনাক্তের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। নমুনা পরীক্ষার পর আই ই ই ডি আর থেকে নিশ্চিত করা হয় যে
মাসুদ করোনায় আক্রান্ত ছিলোনা।
এ যেন কাদম্বিনীর মরিয়া প্রমানের মতই মাসুদকে অবহেলায় মরে প্রমান দিতে হল " সে করোনায় আক্রান্ত ছিলোনা !
মৃত মাসুদের কন্যা ও স্ত্রীর এখন এই টুকুই শান্তনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন