শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

টানা ছুটির বিরূপ প্রভাব বোরো উৎপাদনে

সার জ্বালানী বালাইনাশক পরিবহন ও বিপননে জটিলতা

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২০, ১:২৫ পিএম

করোনা ভাাইরাস প্রতিরোধে টানা ছুটির বিরূপ প্রভাব পড়ার আশংকা সৃষ্টি হচ্ছে দেশের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল বোরো ধান উৎপাদনের ওপর। বর্তমান উঠতি বোরো মৌশুমে নিবিড় পর্যবেক্ষন সহ প্রয়োজনীয় সেচ, সার ও বালাইনাশক ব্যবস্থা নিশ্চিত না করতে পারলে উৎপদন বিপর্যয়ের আশংকা সৃষ্টি হতে পারে। যদিও কৃষি মন্ত্রনালয় ইতোমধ্যে দবোরো ধানে ব্যবহৃত সার, জ¦লানী তেল এবং বালাইনাশক পরিবহন ও বিপননে কোন বাঁধা নেই’ বলে জানিয়েছে। কিন্তু বিলম্বিত এ ঘোষণা চাষী ও কৃষি উপকরন ব্যবসায়ীদের খুব একটা আশ^স্ত করতে পারছেনা এখনো। পরিবহনকারীদের মধ্যেও এ ব্যপারে আস্থা ফিরতে সময় লাগছে। উপরন্তু যানবাহনের সংকটও একটি বড় বাঁধা হয়ে উঠেছে। সুযোগ বুঝে অনেক এলাকায় ট্রাক ও ট্যাংকলড়ির ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

এমনকি বেশীরভাগ এলাকার কৃষি শ্রমিকরা পর্যন্ত ঘর থেকে নামছেন না। উপরন্তু উত্তবঙ্গের কোন কোন এলাকায় ইতোমধ্যে বোরা ধান কাটা শুরু অত্যন্ত জরুরী হলেও কৃষি শ্রমিক সংকট কৃষকের দুঃশ্চিন্তা ক্রমশ বৃদ্ধি করছে। দেশের ৭০ ভাগ এলাকার সেচ ব্যবস্থাই এখনো ডিজেল নির্ভর। ফলে আমাদের দেশের সেচব্যায় বিশে^র যেকোন দেশের চেয়ে বেশী। যা মোট উৎপাদন ব্যায়ের প্রায় ৩০%-এর কাছে।
অপেক্ষকৃত ঢালু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিলম্বিত আবাদের কারনে বোরো পরিচর্যার এখন অত্যন্ত স্পর্ষকাতর সময়। কিন্তু সরকারী টানা ছুটি ঘোষনার সাথে কৃষিশ্রমিক ও কৃষি উপকরন পরিবহন ও বিপননকে এর আওতামূক্ত ঘোষনা না করায় জটিলতা বেড়েছে। ছুটি ঘোষনার পরে নিজ এলাকার বাইরে গিয়ে জীবীকা নির্বাহ করা প্রায় সব কৃষিশ্রমিকই যে যার বাড়ীতে ফিরে গেছে। উপরন্তু জ¦ালানী তেলের ডিপোগুলো খোলা থাকলেও তা পরিবহনের বিষয়টি প্রথমে সুস্পষ্ট করা হয়নি। অপরদিকে ‘সার ও বালাই নাশকের দোকানসমুহ ছুটির আওতামূক্ত’ করার কথা প্রথমে বলা হয়নি। ফলে এসব ব্যবসায়ীরাও তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। অনেক এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনÑশৃংখলা বাহিনীও প্রথম থেকে কৃষি উপকরনের দোকানসমুহ বন্ধ রাখতে কড়াকড়ি আরোপ করে।
পুরো বিষয়টি নিয়ে নানামুখি বিরূপ পরিস্থিতিতে বোরো ধানের ভরা মৌশুমে কৃষকের দুঃশ্চিন্তা যথেষ্ঠ বেড়েছে ইতোমধ্যে। এসময়টিতে দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের বেশীরভাগ এলাকাতেই বোরো ধানের নিবিড় পরিচর্যা জরুরী বলেও জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের একাধীক কৃষিবীদ। সেক্ষেত্রে সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রয়োগের বিষয়ে কৃষককে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হচ্ছে । অতীতে সব সময়ই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এসব বিষেয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষন সহ সব ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করাও হয়েছে।
চলতি রবি মৌসুমে দেশের ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের মাধ্যমে ২ কোটি ৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ নির্ধারন করেছে কৃষি মন্ত্রনালয়। ইতোমধ্যেই আবাদ লক্ষ অর্জিতও হয়েছে বলে জানা গেছে। এরমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলার প্রায় সোয়া ৩ লাখ হেক্টর জমিতে সাড়ে ১৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ রয়েছে। এঅঞ্চলেও আবাদ লক্ষ অর্জিত হয়েছে। দেশে গত বছর রবি মৌসুমে লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে ৪৯ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের মাধ্যেমে প্রায় ২ কোটি ৩ লাখ টন চাল উৎপাদিত হয়। উৎপাদন লক্ষ ছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ টনের মত। সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে দেশে প্রায় ৫৬ লাখ হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৬০ লাখ টনের মত আমন চাল উৎপাদন লক্ষ অর্জিত হয়েছে বলেও জানা গেছে। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন