শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের ভয়াবহ রিপোর্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২০, ২:২৩ পিএম

বিশ্বের সবথেকে বেশি করোনা আক্রান্ত এখন যুক্তরাষ্ট্রে। তার অর্ধেকের বেশি আবার এই নিউ ইয়র্ক শহরের। এখানে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলোর ওপর ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুন চাপ আসছে। অন্য রোগিদের সরিয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। ওয়ার্ডগুলোর পুনর্বিন্যাস হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব মহামারির এই সংকট সবকিছু গ্রাস করে নিচ্ছে।

একই অবস্থা নিউ ইয়র্কের বেসরকারি হাসপাতালগুলোরও। এ নিয়ে নিউ ইয়র্কের হাসপাতালগুলোর সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কেনেথ রাসকি বলেন, সরকারি বলেন আর বেসরকারি বলেন, সব হাসপাতালই এখন সবাই এক নৌকায় আছে। সবাইকেই এই সংকটের সঙ্গে যুদ্ধ করে যেতে হচ্ছে। করোনা মহামারি চোখ খুলে দিলো যে, এমন একটি সংকট মোকাবেলায় কতখানি অপ্রস্তুত ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজেস্টার প্রিপারেডনেসের পরিচালক আইরিন রেডলেনার আক্ষেপ করে বলেন, শহর কর্তৃপক্ষ ও প্রাদেশিক সরকার এখন উঠে পরে লেগেছে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে। অব্যবহৃত স্থাপনাগুলোতে হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। সোমবার জ্যাভিটস সেন্টার ম্যানহাটনে একটি ২৫০০ শয্যার হাসপাতাল খুলে দিয়েছে। সেখানে জরুরি সব ব্যবস্থাও রয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজে আরো ১০০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। একটি টেনিস স্টেডিয়ামকে খুলে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে ৩৫০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সেখানে সব মিলিয়ে এখন রয়েছে ২০ হাজার শয্যা। এটিকে আগামি কয়েক সপ্তাহে অন্তত তিনগুন করতে না পারলে বিশাল সংকট অপেক্ষা করছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এরইমধ্যে নিউ ইয়র্কে ১৫০০ ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে যা সামনে কয়েকগুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্কের গভর্নর বলছেন, ৫ এপ্রিল নাগাদ তাদের ভেন্টিলেটর ও মাস্ক শেষ হয়ে যাবে।
নিউ ইয়র্ক নার্স এসোসিয়েশনের প্রধান শেরিডান গঞ্জালেজ ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, আমরা সিনেমায় যেরকম অবস্থা দেখি এখন ঠিক তেমনই এক কঠিন সময় পার করছি। সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে। মানুষ এখন মিনিটের মধ্যে মরে যাচ্ছে।

পরিস্থিতি সামলাতে নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যানড্রু কুমো সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতালকে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে সকল সরঞ্জাম ও কর্মী-চিকিৎসক প্রয়োজন অনুযায়ী সব হাসপাতালে কাজ করতে পারবে। একইসঙ্গে রোগীর সংখ্যাও সবার মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। এখনো এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে তবে কাজ চলছে।

হাসপাতালগুলো আক্রান্তদের প্রাণ বাঁচানোর জন্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে উৎসাহিত করছে। অনেক সময়ই তাদের হাতে সময় খুব কম থাকে। দ্রুত কম্প্রেসার ও অক্সিজেন পাম্প লাগাতে হয় ফুসফুসে। কখনো এতে পাঁজরের হার ভেঙ্গে যায় কখনো রক্তনালীতে আঘাত লাগে। এখন পর্যন্ত যত মানুষকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বা ভর্তি করা হয়েছে তাদের ভেন্টিলেটর লেগেছে, সামনেও লাগবে। এবং সব চেষ্টার পরেও তারা ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মারা যেতে পারে।
ওপর থেকেও নিয়মিত চাপ আসছে হাসপাতালগুলোর। রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবও। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন এই সংকট নেই। কিন্তু হাসপাতালগুলো বলছে, দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের ভেন্টিলেটরস ও মাস্ক। গত ১লা মার্চ নিউ ইয়র্কে প্রথম করোনা রোগি ধরা পরে। তখন মেয়রের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, নিউ ইয়র্কে এক লাখের বেশি এন-৯৫ মাস্ক, ১৯ মিলিয়ন সার্জিক্যাল মাস্ক, ৪০ হাজারের বেশি গ্লোভস, ৩৮ হাজার গাউন ও ৩৫০০ ভেন্টিলেটরস আছে। কিন্তু এখন তার সবই শেষের দিকে। সামনের দিনগুলোতে সংকট দ্রুতই কয়েকগুন হয়ে যাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন সীমিত সরঞ্জাম নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হবে অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধ করার মত। ইতালিতে যা হয়েছে, নিউ ইয়র্কেও হয়ত তেমন শুধু যাদেরকে বাঁচানো সম্ভব তাদেরকেই চিকিৎসা দেয়ার কথা ভাবতে হতে পারে হাসপাতালগুলোকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
md.ataur rahman ১ এপ্রিল, ২০২০, ২:৫৮ পিএম says : 0
This kind of virus is our result of sins.joharal fasadu fil barri wal bahri bima kasabat aidinnach.Al Quran.
Total Reply(0)
Azhar ১ এপ্রিল, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম says : 0
Seems, 210 million peoples are corona patient across the world and 100 million in American. That's why the UN secretary told it's a big challenge than the 2nd world war.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন