বিশেষ সংবাদদাতা : জিম্বাবুয়ে বলেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পক্ষে টীম ম্যানেজমেন্ট। সামনে এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপ অপেক্ষা করছে বলে আগে-ভাগে দলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছিলেন কোচ, অধিনায়ক। খুলনায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুভাগতহোম এবং সোহানকে টি-২০ অভিষেকের সুযোগ দিয়ে সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তারা। চেনা ব্যাটিং অর্ডার থেকে মাহামুদুল্লাহ,মুশফিক, সাকিবকে নীচে নামিয়ে এনে সাব্বিরকে তিন নম্বরে প্রমোশন দিয়েও তার প্রতিদান পেয়েছেন কোচ,অধিনায়ক। দ্বিতীয় ম্যাচেও তাই আর এক দফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার আভাসই যাচ্ছে পাওয়া। গতকাল ঐচ্ছিক অনুশীলন থাকলেও সব ক্রিকেটাররাই জড়ো হয়েছেন অনুশীলনে, এবং করেছেন অনুশীলন। বিপিএলের আবিষ্কার আবু হায়দার রনি’র প্রধান অস্ত্র কাটার, ডেথ বলের বোলার পরিচয়টাও পেয়েছেন বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বাধিক ২১ উইকেট শিকারী এই বাঁ হাতি পেস বোলার। গতকাল তাকে দীর্ঘক্ষণ নেটে অনুশীলন করিয়েছেন হাতুরুসিংহে, গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন তার বোলিং। সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে আল আমিনের পরিবর্তে রনি’র সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ক্রিকেট দল সংশ্লিষ্টরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রনি’র অভিষেকের স্বপ্নপূরণের দিকেই তাকিয়ে এখন সবাই। টেস্ট ক্রিকেটে অপরিহার্য হয়ে ওঠা ইমরুলের সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে প্রত্যাবর্তনটাও মনে রাখার মতো। গতকাল নেটে তাকে নিয়ে বিশেষ সেশনে খুলনা বিভাগের এই ছেলেটিরও টি-২০তে প্রত্যাবর্তনের আভাস দিচ্ছে। তবে এই ম্যাচে শুভাগতহোমকে আর একটি সুযোগ দেয়া হলে ইমরুলকে থাকতে হবে বসে।
এদিকে শ্লগের বোলিং,ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কষ্টার্জিত হয়ে বছর শুরু করায় সিরিজের অবশিষ্ট তিনটি ম্যাচ বড় ব্যবধানে জয়ে উদ্বুদ্ধ করছে মাশরাফির দলকে। বছরের প্রথম সিরিজটি উদযাপনে প্রতিপক্ষকে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা দেয়াই এখন লক্ষ্য প্রথম ম্যাচের ম্যাচ উইনার সাব্বির রহমান রুম্মানেরÑসব সময় পরিকল্পনা থাকে জয়ের জন্যে। বছরের প্রথম ম্যাচটি জিততে পেরে নতুন বছরের শুরুটা খুবই ভালো হয়েছে। এশিয়া কাপের আগে এ সিরিজটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই চারটি ম্যাচই জিততে। তাই শুধু দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচ নয়, আমরা সবগুলো ম্যাচই জিততে চাই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি কঠিন করে বাংলাদেশ জিতলেও জিম্বাবুয়ের বল খেলতে নাকি এতোটুকু দুর্ভাবনায় পড়তে হয়নি সাব্বিরকেÑ‘ জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিপক্ষে আসলে এরকম কোনোকিছু মনে হয়নি। কারণ বল তো বলই। সেটা যে বলই হোক। এখন অনূর্ধ্ব-১৩ দলে ক্রিকেটার বল করলেও বল, অনূর্ধ্ব-১৫ দলের ক্রিকেটার বল করলেও বল। আর ইন্টারন্যাশনাল বোলার বল করলেও বল। তাই সব ব্যাটসম্যানের জন্যে একটা ভালো বলকে ভালো বলই বলতে হয়। তবে প্রথম ম্যাচে আমি কখনোই এরকম কিছু মনে করিনি।’
বিপিএলে বরিশাল বুলসের হয়ে শেষ তিনটি ম্যাচের ২টিতে বড় স্কোর করেছেন রুম্মান, তা তিন নম্বরে ব্যাটিং করেই। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৪১ কিংবা রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৭৯ রানের ম্যাচ উইনিং ২টি ইনিংসের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৬ বলে ৪৬ ! সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে পান স্বাচ্ছন্দ্য, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই বলেছেন এই হার্ড হিটারÑএর আগে আমি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করে সাফল্য পেয়েছি। বিপিএলেও করেছিলাম। আমি চেষ্টা করছি তিনে ব্যাটিং করার জন্যে। পেস বোলিং খেলে মাঝে যেন স্পিন বল খেলতে পারি সেই চেষ্টাই করছি। তবে দলের প্রয়োজনে যে কোন পজিশনে ব্যাট করতে হতে পারে, সেই মানসিক প্রস্তুতি আছে তারÑতিন কিংবা পাঁচ, যেখানেই হোক না কেনও আমি সেখানেই ব্যাটিং করতে পারব। তার জন্য আমি সব সময় খেলার জন্যে ফিট ও তৈরি। মাত্র ৪ রানের জন্য প্রথম ম্যাচে ফিফটি করতে না পারার আক্ষেপ নেই তারÑএরকম কোনও আক্ষেপ নেই আমার। হাফ সেঞ্চুরি কিংবা সেঞ্চুরি করবো, এমন কোনও পরিকল্পনা থাকে না। সব সময় চাই দল জিতুক। দলের প্রয়োজনে আমার যেন ভালো একটি ভূমিকা থাকে আমি সেই চেষ্টাই করি।
৫০ ওভারের ম্যাচই বলুন, কিংবা টুয়েন্টি-২০তে রুম্মান অপরিহার্য হয়ে উঠলেও টেস্ট খেলার স্বপ্ন হয়নি পূরণ। সে স্বপ্নটা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছেন এই ক্রিকেটারÑ একজন খেলোয়াড়কে সব জায়গায় খেলতে হবে। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি যাই হোক। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলছি। আশা করছি টেস্ট দলেও ঢুকবো। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি ফরমেটেই খেলতে চাই। দ্য ফিনিশার চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করে বন্ধু নাসিরের ছন্দপতন হয়েছে। বন্ধুর সেই জায়গাটা দখলে এখন তিন ভার্সনের ক্রিকেটে অপরিহার্য হতে চান সাব্বির রহমান রুম্মান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন