নড়াইলের লোহাগড়ায় একজন প্রবাসীর ফেসবুক আইডি থেকে এক স্কুল ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি পোস্ট করায় এবং তা ভাইরাল হওয়ার জের ধরে ওই স্কুল ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে । এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ।

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার ধলইতলা গ্রামের গোলাপ মুন্সীর ছেলে সৌদী প্রবাসী হাকিম মুন্সী (২৪) এর সাথে প্রতিবেশী জামাল শেখের মেয়ে ইতনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী লায়লা খানম (১৫) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে রুপ নেয় । প্রেমিক হাকিম মুন্সী প্রেমিক লায়লকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার মেলামেশা করে অশ্লীল ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে । ইতোমধ্যে হাকিম মুন্সী সৌদী আরবে চলে যায়। সে সৌদীতে অবস্থান করে গত ৩১ মার্চ তার ফেসবুক আইডি থেকে তাদের পূর্বের তোলা আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে । ওই ছবি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ছবি দেখে লায়লা ও তার পরিবার প্রতিকার চেয়ে হাকিমের পিতা গোলাপ মুন্সী ও ভাই লালু মুন্সীকে জানায়। তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে লায়লাসহ তার পরিবারের সদস্যরা প্রবাসী হাকিমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। এক পর্যায়ে হাকিম তাদের প্রেমের কথা স্বীকার করলেও বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং লায়লা ও তার মাকে হুমকি দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখে । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হলে লজ্জা ও ভয়ে লায়লা বৃহস্পতিবার ঘরে আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে । এ ঘটনায় নিহতের মা মনজু বেগম বাদী হয়ে প্রবাসী প্রেমিক হাকিম, পিতা গোলাপ মুন্সী, ভাই লালু ও সজীব মুন্সীকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা করে ।

লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।