করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এই আতঙ্ক বা আশঙ্কাই বেশি ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে ঘিরেই। একদিকে ৩৪টি ক্যাম্পে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের শৃঙ্খলায় আনা ছিল দুষ্কর। অন্য দিকে দেশি-বিদেশি এনজিও কর্মীদের অবাধ যাতায়াত ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এতে করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করাটাই ছিল স্বাভাবিক। গত বৃহস্পতিবার থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়ায় ক্যাম্পে অনেকটাশৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। নিয়ন্ত্রিত হয়েছে এনজিও কর্মীদের যাতায়াত।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত আরআরআরসি মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা বলেন, উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে যারা খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনাভাইরাস জনিত সচেতনতা কার্যক্রম এবং জরুরি কাজে নিয়োজিত শুধুমাত্র তারাই ক্যাম্পে আসা যাওয়া করতে পারে। প্রয়োজন হলে তারা তাদের গাড়িও ব্যবহার করতে পারে।
এছাড়া জাতিসংঘের অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থা ও জরুরি কাজে জড়িত এবং যেসব বিদেশি গত মার্চের আগে থেকেই কক্সবাজারে বা এদেশে অবস্থান করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছেন, তারাই আরআরআরসি অফিস থেকে পাস নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে আসা যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
শরণার্থী ক্যাম্পে প্রতিদিন শত শত গাড়ি নিয়ে দেশি বিদেশিরা চলমান করোনা ভাইরাসজনিত সঙ্কটে অবাধে আসা যাওয়া করছে বলে যে গুরতর অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত আরআরআরসি মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা একথা বলেন। গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাস জীবাণু আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকে উল্লেখিত কার্যক্রম ছাড়া আর সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে জরুরি কার্যক্রমও।
আরআরআরসি অফিসের নির্ধারিত ফরম দেশি-বিদেশি সকলেই পূরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পগুলোতে আসা নতুন কোন বিদেশি যেতে চাইলে তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার আগে কমপক্ষে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে থাকতে হবে। আরআরআরসি অফিস এ বিষয়ে গত মার্চের প্রথম সপ্তাহেই এরকম কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। নতুন কোন বিদেশি নাগরিক রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের কার্যক্রমে না আসার জন্যও আরআরআরসি অফিস থেকে অনেক আগে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও পত্র দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে সর্বোচ্চ সর্তকতা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ইনশাআল্লাহ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কোন করোনাভাইরাস জীবাণু আক্রান্ত রোগী ক্যাম্পে সনাক্ত হয়নি।
এদিকে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গাদের জটলা অনকটা কমে গেছে। ক্যাম্পের ভেতরে ১০টিসহ বাইরে চেক পয়েন্ট বসানোর কারণে রোহিঙ্গাদের বাইরে যাতায়াত ও বাইর থেকে যে কারো যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত হয়ে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন