প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার কাজে বাধাসহ হুমকির অভিযোগ
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা
আগামী ১৮ জুলাই ময়মনসিংহ-০৩ আসনের সংসদ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বিহীন নির্বাচনী মাঠ এখনো নিরুত্তাপ। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফেজ মোঃ আজিজুল হক বিএনপি-জামায়াতের ভোটকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তার প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক (একাংশ) আহম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভায় হাফেজ আজিজুল হককে আওয়ামী লীগের এজেন্ট আখ্যা দিয়ে তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। জাপা প্রার্থী শামছুজ্জামান জামাল, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা আবু তাহের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তাদের কোন তৎপরতা চোখে পড়ছে না। ন্যাপ প্রার্থী আঃ মতিন মাস্টার মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে গৌরীপুরের ন্যাপ শক্তিশালী না থাকায় ভোটের ক্ষেত্রে তার অবস্থান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন খোদ ন্যাপের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে উপজেলায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে খুবই শক্তিশালী। আ.লীগ প্রার্থী নাজিমউদ্দিন সাধারণ ভোটারদের অধিকাংশের কাছে অপরিচিত হলেও দলীয় নেতাকর্র্মীদের কাছে ইতোমধ্যে গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। বিএনপি বিহীন নির্বাচনে তার বিজয় সুনিশ্চিত হলেও তিনি থেমে থাকেননি। প্রতিদিনই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ২৫ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত বর্ধিত সভায় সকল নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি হেভিয়য়েট মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উপস্থিত থেকে তার পক্ষে অবস্থান নেয়ায় নির্বাচনী দৃশ্যপট পাল্টে যায়। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমি সারা জীবন সাংগঠনিক রাজনীতি করেছি। বিগত দিনে ভেঙে পড়া দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে ইউপি নির্বাচনের কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে নির্বাচনী আমেজে রয়েছে। সে কারণে নৌকা প্রতীকের বিজয় এখন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা।
এদিকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার কাজে বাধাসহ হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী ১৮ জুলাই জাতীয় সংসদের এ শূন্য আসনের নির্বাচন গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন নির্বাচন কমিশন। এ দিনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। একমাত্র আওয়ামী লীগ (নৌকা প্রতীক) ও ন্যাপ (কুড়েঘর প্রতীক) প্রার্থী ছাড়া অপর তিন প্রার্থী অভিযোগ করে জানিয়েছেন তাদের প্রচারণায় মাইক, মোটরসাইকেল ভাঙচুর, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, কর্মীদের নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রর্দশন করা হচ্ছে। তাছাড়া কর্মীদের মারধরসহ প্রচার কাজে নিয়োজিত থাকলে গুমসহ পুলিশি হয়রানির হুমকি অব্যাহত রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বতন্ত্রপ্রার্থীর প্রচার কাজে নিয়োজিত কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা কোথাও মাইক, পোস্টার, গণসংযোগ করতে গেলে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা তাদের মারধর করছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করলেও কোন প্রকার কার্যকরী আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাফেজ মোঃ আজিজুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা নির্বাচনে প্রচার কাজে নিয়োজিত আমার কর্মীদের মারধর, মাইক আটক, পোস্টার সাটানোয় বাধাসহ ছিঁড়ে ফেলছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারলে আমি জয়ী হলো ইনশাআল্লাহ। ইসলামী ঐক্য জোট প্রার্থী মৌলানা আবু তাহের খান বলেন, প্রচারণার কাজে ব্যস্ত আমার কর্মীদের প্রচার কাজ চালিয়ে গেলে তাদের জঙ্গি বানিয়ে মামলায় ঢুকানো হবে বলে হুমকিসহ মাইক ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতাকর্মীরা। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সহনাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান জামাল অভিযোগ করে বলেন, কোন ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা চালানো যাচ্ছে না সরকারদলীয় প্রার্থীর নেতাকর্মীদের দাপটে। তারা মাইক ভাঙচুর, পোস্টার, প্যানা ছিনিয়ে নিচ্ছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে কিনা সন্দেহ আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন