মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) থাবায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বিধ্বস্ত ইকুয়েডর। দেশটির সড়কে পড়ে আছে পচা-গলা লাশ আর লাশ। বন্দরনগরী গুয়াকুইলের রাস্তা ও বাসাবাড়ি থেকে করোনায় মারা যাওয়া কমপক্ষে চারশো জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে মহামারির কেন্দ্রস্থল গুয়াইয়াকুইল শহর। সারাদেশের প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীই এ অঞ্চলের।
ইতোমধ্যেই সেখানকার হাসপাতালগুলোর ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে। নতুন রোগী ভর্তি হতে না পেরে হাসপাতালের সামনে, রাস্তায় পড়ে থাকছেন অনেকে। বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে সেখানেই। আবার করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ বাড়িতে মারা গেলেও শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করতে না পেরে প্রিয়জনের মরদেহ সড়কেই রেখে যাচ্ছেন অনেকে। দেশটির করোনা নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স জানিয়েছে, তারা সড়ক থেকে প্রতিদিন শতাধিক মরদেহ সংগ্রহ করছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অনেক পরিবার তিন-চারদিন ধরে প্রিয়জনের মরদেহ নিয়ে বাড়িতে অপেক্ষা করছেন, কখন ফরেনসিক টিম এসে সেটি সরিয়ে নেবে।
গত সপ্তাহে গুয়াইয়াকুইলের কাউন্সিলর আন্দ্রেস গুশমার জানিয়েছিলেন, তখন পর্যন্ত চার শতাধিক মরদেহ বিভিন্ন বাড়ি থেকে বের করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের হিসাবে, তালিকাভুক্ত আরও সাড় চারশ’র বেশি মরদেহ বের করার অপেক্ষায় আছে।
সরকার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আগামী মাসগুলোতে নগরী ও আশপাশের এলাকায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মূলত কতজন আক্রান্ত হয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। যদিও সরকারি তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৭০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন যার মধ্যে ৯৩ মারা গেছে।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও কফিন কিনতে মানুষের ভিড় দেখে বুঝা যায় প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। গুয়াকিলের বাসিন্দা হেক্টর গালারজার ধারণা, রাস্তায় পড়ে থাকা লাশগুলো সম্ভবত শহরের দরিদ্র মানুষদের। করোনায় মারা যাওয়ার কারণে লাশগুলো এখন আতঙ্ক তৈরি করছে।
রয়টার্সের একজন রিপোর্টার নীল রঙের প্লাস্টিকে মোড়ানো ফুটপাতে একজন ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন বলে জানিয়েছেন। ইকুয়েডরের জাতীয় নার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে যে তাদের ৩৭০ জন কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং পাঁচজন মারা গেছেন। সূত্র: দ্য সান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন