শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আরো ৭ জনের মৃত্যু

করোনার সন্দেহভাজন ১৫ বাড়ি লকডাউন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ এএম

জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা ৫০ বছর বয়সী (পুরুষ) রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববারদুপুর ১টায় হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচ তলায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। ঢামেক হাসপাতাল নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. আবুল হোসেন তার মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির (৫৭) মৃত্যু হয়েছে। জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।গতকাল সকালে উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া এলাকায় ওই ব্যক্তি মারা যান। মৃত্যুর পর ওই এলাকায় করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানায়, জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে কাঁচপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া মসজিদে নামাজ আদায় করতেন ওই ব্যক্তি। এলাকার অনেকেই তাকে ওই অবস্থায় মসজিদে আসতে বাধা দিতেন। কিন্তু কারও কথা শোনেননি তিনি। রোববার সকালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর বিভিন্নজনকে পরিবারের লোকজন ডাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এ নিয়ে সবার মধ্যে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনিতে জ্বর ও গলাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির (৫০) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার ভোরে ওই ব্যক্তি মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না সেটা জানতে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া ওই ব্যক্তির আশপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে শরীরে জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে অসুস্থ হন ওই ব্যক্তি। এ সময় তারা স্থানীয় একজন চিকিৎসকে ডেকে আনলে তিনি কিছু ওষুধ দেন। পরবর্তীতে রোববার ভোরে তিনি মারা যান। পরে কালকিনি থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক গিয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে। ওই নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর’এ পাঠানো হবে। কালকিনি থানার ওসি বলেন, এ ঘটনায় কয়েকটি বাড়ি আমাদের নজরদারিতে রাখা হবে।

নেত্রকোনা : সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নেত্রকোনার প‚র্বধলা উপজেলার হোগলা ইউনিয়নের কালীহর জোয়ার্দ্দারপাড়া গ্রামে এক নারীর (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোর ৪টার দিকে তিনি মারা যান। স্থানীয়রা জানান, ওই নারী বিদেশ কিংবা ঢাকা ফেরত কারো সংস্পর্শে যাননি। গত চার-পাঁচ দিন ধরে তিনি সর্দি জ্বরে ভুগছিলেন। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। তার স্বামী ও একটি পালিত কন্যাসহ বাড়িতেই বসবাস করতেন। প‚র্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, করোনা সন্দেহে ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। রির্পোট এলে বিস্তারিত বলা যাবে।

কুমিল্লা : কুমিল্লার দাউদকান্দিতে লকডাউনে থাকা ৫৫ বছরের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার ভোরে উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলা গ্রামে তার মৃত্যু হয়। এর আগে ওই ব্যক্তির শরীরে করোনা উপসর্গ সন্দেহে গত শনিবার রাতে ৭টি পরিবারকে লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান জানান, শনিবার রাতে চক্রতলা গ্রামের ৫৫ বছরের এক ব্যক্তির অসুস্থতার লক্ষণকে করোনা উপসর্গের সঙ্গে সামঞ্জস্যপ‚র্ণ মনে করায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সুপারিশে সেই বাড়ির ৭টি পরিবারকে লকডাউন করা হয়। যেহেতু তিনি মারা গেছেন, তাই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ প্রহরায় ওই ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়।

বগুড়া : বগুড়া শহরে অপর আরেক ব্যক্তি করোনাভাইরাসের উপসর্গ শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যাথায় ড়শ শনিবার বিকেলে মারা গেছেন। মৃত ঐ ব্যক্তির শরীর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এঘটনার পর মৃত্য ব্যক্তির ভাড়াবাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এবিষয়ে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি। রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে তার শরীরে করোনা ছিল কিনা।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে আসার পর এক নারী মারা গেলে লাশ নিয়ে পালিয়ে গেছেন স্বজনরা। ওই নারীর বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নে। গত শনিবার মারা যান তিনি। এ খবর নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুনির আহম্মেদ খান। এ ব্যাপারে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রণেশ বোসের কাছে রোগীর নমুনা সংগ্রহের আগে কীভাবে ছাড়পত্র পেল এবং পালিয়ে গেল- জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে সকাল ৯টায় ওই রোগী আসেন। এ সময় রোগী অজ্ঞান ছিলেন। তারপর তাকে চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার আগেই তিনি মারা যান। আমরা নমুনা সংগ্রহের জন্য কাজে ব্যস্ত থাকার ফাঁকে স্বজনরা লাশ নিয়ে পালিয়ে যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
Mahabub Alam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৫ এএম says : 0
লক ডাউন, মৃতু ব্যাক্তির দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ, মৃতু ব্যাক্তির পরিবার কে ব্লক করে রাখা, এটাই কি রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
Total Reply(0)
Mohammad Al Amin ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত ৯৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ সুস্থ হয়েছিলেন!!! সুস্থ হওয়ার পর তাকে বলা হলো হসপিটালের বিল পরিশোধ করতে যেখানে ১ দিনের ভেন্টিলেটর বিল ছিল ৫০০০ পাউন্ড যা বাংলাদেশী টাকায় ৫ লক্ষ টাকার উপরে! বৃদ্ধ বিলের কথা শুনে কাঁদতে লাগলেন, ডাক্তাররা তাকে আস্বস্ত করলেন যেন বিল পে'র জন্য কান্না না করে! তিনি বললেন, আমার কান্না বিলের জন্য না আমি সম্পুর্ণ বিল পরিশোধ করবো। আমি বরং কান্না করছি একদিন নিশ্বাস নেয়ার জন্য আমাকে ৫০০০ পাউন্ড দিতে হচ্ছে অথচ ৯৩ বছর ধরে আমি সৃষ্টিকর্তার দেয়া সতেজ বাতাসে নিশ্বাস নিচ্ছি যার জন্য আমাকে কখনো পে করতে হয়নি! তাহলে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কতটা ঋণী!
Total Reply(0)
Sumon Ahmed ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 0
There is no Corona in Bangladesh. Everyone is dying of flu, fever and respiratory problem. But after death their families are being locked down...
Total Reply(0)
Radawan Rahman ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
এই মুহুর্তে রাস্তায় মানুষের যেরকম সরগরম, দেখে বুঝার উপায় নাই আমার আসলেই করোনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। সরকার কেন এখনো কোন কঠোর ব্যাবস্থা নেয়না।
Total Reply(0)
Md Mostafizur Rahman ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
করোনা প্রতিরোধে এবং সফল ভাবে মোকাবিলা করে যদি কোন রাষ্ট্র নোবেল পায়? তাহলে আমাদের সম্ভাবনা কতটা? আমরা কি আশাবাদী?
Total Reply(0)
Md Hakim ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
এরা করোনায় মারা গেছে , কারণ তাদেরকে আগে পরীক্ষা করা হয় নাই মৃত্যুর পর ওদের শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে তখন প্রমাণ করছে সরকার তারা নিমুনি অথবা অন্য রোগে মারা গেছে তারা কোন ভাইরাসে মারা যায়নি এটা হচ্ছে সরকারি সিদ্ধান্ত, কিন্তু জীবিত অবস্থায় তাদেরকে কোন পরীক্ষা ছাড়াই সরকার এদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে
Total Reply(0)
Mehadi Hasan ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
সবাই শুধু শাক দিয়ে মাছ ঢাকছে। দেশের মানুশের কি কোনোই মুল্য নেই
Total Reply(0)
Arafat Bogra ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
বাংলার মানুষগুলো দেখছে হাসপাতালে চিকিৎসা নাই, রোগীগুলো চিকিৎসা বিহীন মৃত্যু হচ্ছে, মৃত্যুর পরে পরিক্ষা হচ্ছে।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
আমাদের দেশে উপসর্গ কিন্তু ভয়ংকর রোগ মরার আগে টেস্ট হয় না মরে গেলে কেউ কাছে যায় না ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন