শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

করোনায় ব্যাংক তারল্য সঙ্কটে পড়বে না

পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৩০ এপ্রিলেই : গভর্নর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির আশ্বস্ত করে বলেছেন, করোনার কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দেবে না। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক সিআরআর ও রেপো রেট কমিয়েছে। যাতে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট না হয়। ব্যাংকগুলোর পর্যাপ্ত তারল্য যোগান দেয়া হয়েছে। আবার বেশি তারল্যের কারণে মূল্যস্ফীতি না হয় তার দিকে নজর রেখে মুদ্রানীতি দিবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান তথা পোশাক শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতার পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সার্কুলার ইতোমধ্যেই জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে চলতি মাসের বেতন এপ্রিলের ৩০ তারিখেই দেয়া হবে।

গতকাল গণভবনে করোনা পরিস্থিতিতে সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারি প্রণোদনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। তাঁর বক্তব্যের পর করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর এসব কথা বলেন। ফজলে কবির বলেন, ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন রপ্তানি তহবিলকে বাড়িয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছে। রপ্তানি খাতের ইইডএফ ফান্ডের সুদের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। গভর্নর বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণের হার (সিআরআর) বিদ্যমান দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং দৈনিক ভিত্তিতে ন্যূনতম ৫ শতাংশ হতে কমিয়ে করে দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৫ শতাংশ এবং দৈনিক ভিত্তিতে ন্যূনতম ৪ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ তলবি ও মেয়াদি দায়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত ধারা ও ইসলামি ব্যাংকগুলোকে দৈনিক ভিত্তিতে গড়ে সাড়ে ৪ শতাংশ এবং দ্বি-সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ৫ শতাংশ হারে সিআরআর রাখতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৬ ভাগ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে শতকরা ৫ দশমিক ৭৫ ভাগে পুননির্ধারণের বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, রপ্তানির অর্থ দেশে আনার সর্বোচ্চ সময়সীমা ১২০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে আমদানি পণ্য দেশে আনার সময়সীমাও বাড়িয়ে ১৮০ দিন করা হয়েছে। এতোদিন এলসির দেনা পরিশোধের পর সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যে পণ্য দেশে আনার বাধ্যবাধকতা ছিল। স্বল্প মেয়াদি বিদেশি ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১৮০ দিন করা হয়েছে। বিদ্যমান নিয়মে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ব্যাংকগুলো এক বছরের বাকিতে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও বিদ্যুৎ খাতের পণ্য আমদানি করতে পারে। আর শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের বাকিতে আনা যায়। তবে উভয় ক্ষেত্রে ৬ মাস বৃদ্ধির ফলে এক বছর এবং দেড় বছর সময় পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা। এছাড়া রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল-ইডিএফের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ৬ মাস মেয়াদে ঋণ নেওয়া যায়। পরে সময় বাড়িয়ে ৯ মাস করা হয়।

ফজলে কবির বলেন, আগামী জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। ১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত ওই মানেই রাখতে হবে। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত অর্থ অর্থপরিশোধে ব্যর্থ হলেও কোন বিলম্ব ফি লাগবে না।

এপ্রিলেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন বিষয়ে গভর্নর বলেন, রফতানি খাতের শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতার জন্য যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে তার একটা নীতিমালা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণয়ন করেছে। এ তহবিল থেকে এপ্রিল, মে এবং জুন-এ তিন মাসের বেতন-ভাতা দেয়া হবে। আশা করছি, এপ্রিল মাসের শেষ তারিখেই এপ্রিল মাসের বেতন এ তহবিল থেকে দেয়া সম্ভব হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন