মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে করোনা -দেবী শেঠী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ৫:২৮ পিএম

করোনা ভাইরাস এখনও ভারতে পুরোদমে আক্রমণ শুরু করেনি। এপ্রিলের শেষে বা মে’র শুরুতে এই ভাইরাসের মহামারি এ অঞ্চলে সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে। ভারতের অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বিখ্যাত চিকিৎসক ডা. দেবী শেঠী। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো অবস্থা সৃষ্টি হওয়া থেকে আমরা মাত্র এক মাসের মতো দূরে রয়েছি।’

নায়ারণ হেলথের প্রতিষ্ঠাতা এই চিকিৎসক সংক্ষেপে দেবী শেঠী হিসেবেই সারাবিশ্বে ব্যাপক পরিচিত। তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, অর্থনীতির বিষয়টি তখনই আসবে যখন আমরা সবাই বেঁচে থাকবো। তাই আমাদের অগ্রাধিকারের দিকে দৃষ্টি দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের ২১ দিনের লকডাউন সম্পর্কে তিনি বলেন, লকডাউন মৃত্যুহার শতকরা কমপক্ষে ৫০ ভাগ কমিয়ে আনবে। এক্ষেত্রে আমাদেরকে কতগুলো বিষয় অনুসরণ করতে হবে। তা হলো করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা, স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন করা এবং সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলা। তিনি আরো বলেন, এখন বল আর সরকারের কোটে নেই। এখন বল জনগণের কোটে। অর্থাৎ এই মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এখন জনগণের হাতে। সচেতনতায় রক্ষা পেতে পারেন তারা।

ভারতে জনসংখ্যার তুলনায় করোনার পরীক্ষা করা হয় খুব কম, এমন প্রেক্ষিতে অধিক হারে মানুষের করোনা পরীক্ষা শুরু করা উচিত কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. দেবী শেঠী বলেন, রোগীর চিকিৎসায় পরীক্ষা সহায়ক নাও হতে পারে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে আলাদা থাকা, কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। আমাদের পরীক্ষার সুবিধা বাড়ানোর সক্ষমতা বাড়ানোর আগে এসব বিষয়ে নজর দেয়া উচিত বলে আমি নিশ্চিতভাবে মনে করি।

সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ধারণা আছে যে, ভারতীয়দের মধ্যে উচ্চ মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. দেবী শেঠী বলেন, ভারতীয়দের মধ্যে অধিক রোগ প্রতিরোধ নিয়ে যে তত্ত্বই থাকুক না কেন, আমাদেরকে আগে দেখতে হবে এই ভাইরাস প্রকৃতপক্ষে কিভাবে আচরণ দেখায়। কিভাবে এই ভাইরাস চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও ইউরোপকে কাবু করেছে। আরো যৌক্তিকভাবে ধরে নিতে হবে যে, ভারতীয়রা বিশ্বের অন্য অংশগুলোর মানুষের মতোই মানুষ। যদি এটা সত্য হয় যে, ভারতীয়দের অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে, তাহলে আমরা খুশি হবো। সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে অশুভর বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে যদি ভাল কিছু ঘটে, তাহলে তা খুব ভাল।

কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আগেভাগে ভিটামিন সি সেবনের যে পরামর্শ দিচ্ছেন সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় ড. দেবী শেঠীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, মানুষ যেকোনো কিছু খেতে পারে। হতে পারে তা ভিটামিন সি, রসুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তারা যেকোনো কিছু করতে পারে, যেকোনো কিছু তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত কোনো প্রমাণ নেই। কারণ করোনা ভাইরাস একেবারে নতুন একটি ভাইরাস। তাই এর চিকিৎসায় কি ব্যবস্থা নিতে হবে প্রকৃতপক্ষে সে বিষয়ে কেউ কোনো তত্ত্ব দিতে পারেন না।

হ্যাঁ, ভাল ঘুম, পুষ্টিকর খাবার এবং ভারসাম্যপূর্ণ মানসিক সুস্থতা অবশ্যই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। কারারুদ্ধ অবস্থায় মানসিক অস্থিরতা থেকে অবশ্যই এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উল্টো দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে আমি আশা করি, এটা খুব বেশি ক্ষেত্রে হয় না। আমি আশা করি এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যে, বিশ্বের অন্য যেসব স্থানে ভয়াবহভাবে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস তার তুলনায় ভারত অনেক ভাল থাকুক। তিনি আরো বলেন, লকডাউনের ফলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষ ভয়াবহ জটিলতা মোকাবিলা করছে। এখানে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, অর্থনীতি তখনই আমাদের কাছে বড় হবে, যদি আমরা সবাই বেঁচে থাকি। তাই আমাদেরকে অগ্রাধিকার ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন