করোনার অঘোষিত লকডাউনে বরিশালের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা, বরিশাল মহানগরীর চকবাজার, গীর্জা মহল্লা, বাজার রোড ও কাটপট্টিতে এখন সুনসান নিরবতার সাথে নিরব হাহাকার। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে রেডিমেট গার্মেন্ট, থানকাপড়, মশলা আর মুদি মালামাল থেকে শুরু করে নানা পণ্যের পাইকারি ও খুচরা সরবারহ হয় এখান থেকে। এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ জুয়েলারি শপও কাটপট্টিতে। নগরীর চালের পাইকারি বাজার ফরিয়াপট্টি ও পেয়াঁজ পট্টিও জনমানব শূন্য প্রায়।
প্রতিবছর পহেলা চৈত্র থেকে মাসব্যপী মূল্য হ্রাসের ঘোষণা দিয়ে পুরনো মজুদ খালি করেন ব্যবসায়ীরা। কোটি কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা বাংলা নতুন বছরের খাতা খুলেন।
কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস আতঙ্ক সব শেষ করে দিয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে সব দোকানপাট বন্ধ। পুরো চৈত্র মাস যুড়ে যে কাটপট্টি, চকবাজারে পা ফেলা দায় ছিল, রিকশা পর্যন্ত চলাচল প্রায় বন্ধ হয় যেত। সেখানে এখন কাক-পক্ষিরও দেখা নেই।
গতকাল চকবাজার ও কাটপট্টির একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে সেল ফোনে কথা হলে কেউই দীর্ঘ শ্বাস চেপে রাখতে পারেন নি। সবারই একটি কথা, ‘আমাদের কি হবে? চৈত্র মাসে সারা বছরের জমে যাওয়া স্টক খালি করে পহেলা বৈশাখ নতুন মজুদ দিয়ে ব্যাবসায় প্রাণ ফিরত। কিন্তু এবার পুরনো মজুদের বোঝার সাথে দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন আর বিদ্যুৎ বিল কোথা থেকে আসবে’? কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকলেও তা আদায়ের সুযোগও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে মার্চ মাসের বেতন না পেয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সব বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সংসার অচল হবার পথে।
জুয়লারি শপগুলোও পহেলা বৈশাখ হালখাতা করে গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া করতেন। সেখানেও ছেদ পড়েছে এবার। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান জুয়েরালী ব্যাবসাতেও ধস নামার শঙ্কা বাড়ছে। কোটি কোটি টাকা বকেয়া আদায় করতে না পারলে অনেক জুয়েলারি দোকানের অস্তিত্বে টান পড়বে বলেও শঙ্কিত ব্যাবসায়ীমহল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন