বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশে আরও ৩ জনের মৃত্যু নতুন শনাক্ত ৫৪

করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত রোগীর পর এক মাস পূর্ণ হলো

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও তিন জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২০। এ ছাড়া, নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্তের দিক থেকে গতকাল বুধবার এক মাস পূর্ণ হলো। আর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়। এরপর এ পর্যন্ত ২০ জন মারা গেছেন। আর এই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩৩ জন।

গতকাল বুধবার আড়াইটার দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. সানিয়া তাহমিনা।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮১টি পরীক্ষা হয়েছে। ৯৮১ পরীক্ষার ভিত্তিতে আমরা গত ২৪ ঘণ্টায় যতজনের মধ্যে সংক্রমণ পেয়েছি সেই সংখ্যা হচ্ছে ৫৪ জন। সর্বমোট কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ২১৮। এর মধ্যে ১৪৮ জন পুরুষ ও ৭০ জন নারী। এ ছাড়া, মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও তিন জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিন জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২০। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এরকম কেউ নেই।

প্রফেসর ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, নতুন আক্রান্ত ৫৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ২১ জন। বয়সের হিসাবে ১১-২০ বছর বয়সের পাঁচ জন, ২১-৩০ বছর বয়সের ১৫ জন, ৩১-৪০ বছর বয়সের ১০ জন, ৪১-৫০ বছর বয়সের সাত জন, ৫১-৬০ বছর বয়সের সাত জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। প্রফেসর ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পাই, ৫৪ জনের মধ্যে ঢাকা শহরে রয়েছেন ৩৯ জন। ঢাকা শহরে বাইরে ঢাকার অদূরে যেসব উপজেলা রয়েছে সেখানে একজন। আর বাকিরা সবাই ঢাকার বাইরে উল্লেখ করেন তিনি।

ডা. সানিয়া তাহমিনা জানান, এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ২১৮ জনের মধ্যে ঢাকার শহরের ১২৩ জন, ঢাকার অদূরে যেসব উপজেলা সেখানে পাঁচ জন, নারায়ণগঞ্জের ৪৬ জন, মানিকগঞ্জের তিন জন, চট্টগ্রামের তিন জন, মাদারীপুরের ১১ জন, গাইবান্ধার পাঁচ জন এবং বাকিরা দেশের অন্যান্য জেলার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনন্দিন বুলেটিন থেকে জানা যায়, দেশে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ১৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশে এখন আইসোলেশনে আছেন ১১১ জন এবং কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১০ হাজার ১৫৭ জন।

উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত করোনার বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ছুটি বাড়ানো হয়েছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ ও বহিরাগমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে গণপরিবহন সবই বন্ধ রয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতালসহ জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে রয়েছে। আর, সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকার মোট ৫২টি এলাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। আর, জনসাধারণের রাজধানী ত্যাগ ও প্রবেশ বন্ধে পুলিশের কঠোর অবস্থান রয়েছে। পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, আদাবর, বসিলা, বাড্ডা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ভবন ও গলি লকডাউন করেছে প্রশাসন।

রাজধানীতে ঢুকতে বা বের হতে হলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে হচ্ছে সবাইকে, নয়তো জরিমানা গুনতে হচ্ছে। অহেতুক আসা-যাওয়া বন্ধে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড ও চেকপোস্ট। উপযুক্ত কারণ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকেই চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না।

এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। তবে জরুরী পরিসেবা যেমন চিকিৎসা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ইত্যাদি এর আওতাবহিভূর্ত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন