শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তাপদাহে অতিষ্ঠ জীবন বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট

ঢাকায় ৩৭ ডিগ্রির বেশি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

চৈত্রের শেষ দিকে এসে প্রায় দেশজুড়ে বইছে তাপদাহ। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। নগর-শহর-বন্দর, জেলা-উপজেলার সর্বত্র খরতাপে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তীব্র গরমে দূষিত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষজন। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায়ও পারদ সর্বোচ্চ ৩৭ ডিগ্রিরও ঊর্ধ্বে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ২৬ ডিগ্রি। রাজশাহীতে পারদ সর্বোচ্চ ৩৭.৪ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে ৪ মিলিমিটার বিক্ষিপ্ত বর্ষণ হয়। এছাড়া দেশের কোথাও বৃষ্টি ঝরেনি।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দুয়েক স্থানে অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা, ফরিদপুর, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন এবং এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
তরমুজ মাঠেই পঁচার শঙ্কা
বরিশাল ব্যুরো : করোনা প্রতিরোধে চলমান লাগাতার ছুটির কবলে দক্ষিণাঞ্চলের তরমুজ চাষিরা মারাত্মক বিপর্যয়ে বিনিয়োগ তুলতে পারছে না। নানা প্রতিবন্ধকতায় দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম অর্থকরী ফসল তরমুজের আবাদ সাম্প্রতিককালে ক্রমশ হ্রাস পাবার মধ্যে এবার ভাল ফলনের পরেও চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে।
মাঠ পর্যায়ে পাইকারের অভাবে মাত্র ৫ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। ফলে মুনাফা দূরের কথা উৎপাদন ব্যয় তোলাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। বেশিরভাগ মাঠের কাছেই নেই কোন পাইকারের দেখা। করোনার কারণে পরিবহন সঙ্কটসহ বাজারে ক্রেতার অভাবে আড়তে তরমুজ কিনছে না আর ক্রেতা না থাকায় খুচরা বিক্রেতাদেরও আড়ৎ থেকে তরমুজ কেনায় তেমন আগ্রহ নেই।
গত বছর দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় যেখানে প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৮ লাখ ৬৫ হাজার টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছিল। এবার সেখানে আবাদ ২৪ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি। ফলে ফলন ভালো হলেও উৎপাদন ১২ লাখ টনের বেশি হচ্ছে না।
দেশের বেলে দো-আঁশ থেকে এটেল দো-আঁশ পর্যন্ত সব ধরনের মাটিতে তরমুজের ভালো আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। এমনকি নদ-নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলের নোনা পানিমুক্ত চরাঞ্চলের পলি মাটিতেও এ রসালো ফলের ভালো ফলন হচ্ছে। তরমুজ গাছ বর্ষজীবী, দিবস দৈর্ঘ্য নিরপেক্ষ ও লতানো প্রকৃতির। ৫.৫ থেকে ৭.০ পিএইচ মাত্রার জমি এ ফসলের জন্য উপযোগী। তবে কোন অবস্থাতেই একই জমিতে পর পর ২-৩ বছরের বেশি তরমুজ আবাদ না করার পরামর্শ কৃষিবিদদের। এতে রোগ বালাইয়ের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
মাঠ পর্যায়ের ফরিয়াদের দাবি তারা ৫ টাকা কেজি দরে তরমুজ কিনলেও মাঠ থেকে নৌকায় তুলতে ৩ টাকা এবং নৌকা ভাড়া বাবদ আরো ৫ টাকা খরচের পরে তা ১৫ টাকা কেজির বেশি বিক্রি করতে পারছেন না। আর পাইকাররা আড়তে তুলে তা বিক্রি করতে আরো টাকা খরচের পরে ২২-২৩ টাকাও প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করতে পারছে না। খুচরা বিক্রেতারা আড়ত থেকে তাদের দোকানে নিয়ে তুলতে আরো ২-৩ টাকা খরচের পরে ৩০ টাকা কেজি দরেও তরমুজ বিক্রি করতে পারছেন না ক্রেতার অভাবে।
ফলে এবার তরমুজ নিয়ে মাঠে চাষি থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত কেউই স্বস্তিতে নেই। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির কবলে চাষিরাই। ফরিয়ার অভাবে অনেক তরমুজ এবার মাঠেই পঁচে যাবার শঙ্কা ক্রমশ জোরদার হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন