শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে শ্বেতাঙ্গ পরিচিতির রাজনীতি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বর্ণ ও ধর্মের সীমাহীন বিরোধে ডোনাল্ড জে. ট্রাম্পের নাম সহজেই বর্ণবাদের বৈরিতার বার্তা বয়ে আনে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও ভাষার আধুনিক রীতি উপেক্ষা করে ট্রাম্প সে সীমারেখা ভেঙ্গে দিয়েছেন যা দীর্ঘদিন বর্ণবাদ নিয়ে আমেরিকানদের প্রকাশ্য আলোচনা বন্ধ রেখেছিল।
ট্রাম্প মেক্সিকানদের ক্রিমিন্যাল বলে আক্রমণ করেন। তিনি মুসলমান অভিবাসীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্র কেন ইউরোপ থেকে লোকজনকে ঢুকতে দিচ্ছে না সেজন্য তিনি শোরগোল করেন।
এমন একটি দেশ যেখানে সম্পদশালী ও সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী নাগরিকদের প্রায় সবাই শ্বেতাঙ্গ, সে দেশে ট্রাম্প সে সব শ্বেতাঙ্গের ক্ষোভ ও ক্রোধের প্রতিধ্বনি তুলছেন যারা নিজেদের সর্ব ক্ষমতাবান বা সুবিধাপ্রাপ্ত বলে মনে করে না। তবে সেটা করতে গিয়ে এমন এক পন্থায় শ্বেতাঙ্গ পরিচিতি ও অসন্তোষ প্রকাশের দরজা উন্মুক্ত করে দেন যে আমেরিকান জনজীবনে বর্ণবাদী উত্তেজনা ও বৈরিতার ধারা পর্যবেক্ষণকারীদের মতে গত অর্ধশতকে আমেরিকার সংস্কৃতিতে তার এত ব্যাপকতা আর দেখা যায়নি।
ট্রাম্পের জোরালো সমর্থক ও উৎসুক শিক্ষার্থী, মার্কামারা শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী এবং জাতি ও বাগাড়ম্বরের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া গবেষণাকারী প-িতদের ডজন খানেক সাক্ষাতকার থেকে দেখা যায় যে ট্রাম্পের দ্বারা সৃষ্ট ও চালিত আবেগ বহু প্রকার রূপ ধারণ করেছে।
ইন্টারনেটে অজ্ঞাত পরিচয় ফলোয়াররা ঘৃণা ও সেমেটিজম বিরোধী কঠোর মনোভাব প্রকাশের ডাক পান। তা বিস্ময়করভাবে এ মাসে বৃদ্ধি পায় যখন ট্রাম্প টুইটারে নগদ স্তূপীকৃত অর্থ ও ছয়কোণ বিশিষ্ট একটি তারার (যা অনেকেই স্টার অব ডেভিড হিসেবে দেখেছে) সাথে হিলারি ক্লিন্টনের মুখায়বসহ একটি ছবি প্রকাশ করেন। হেট গ্রুপের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মানহানি-বিরোধী লীগের ন্যাশনাল ডাইরেক্টর জোনাথন গ্রিনব্লাট বলেন, আমরা আসলেই যা সমস্যাজনক বলে মনে করছি তা হচ্ছে এসব সমাবেশের আক্রমণাত্মক ধারণাগুলো মূলধারায় আনা। তিনি বলেন, এর ফলে গণকথোপকথনে কিছু বাজে ধারণা এসেছে যা আমাদের সাম্প্রতিক স্মৃতিতে নেই।
এ নিবন্ধের জন্য সাক্ষাতকার দিতে ট্রাম্প অস্বীকৃতি জানান এবং তার মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
লিটল ইন্ডিয়া নামে পরিচিত হালাল জবেহকারীদের দোকান ও ভারতীয় রেস্তোরাঁ সম্বলিত এলাকার অনতিদূরে নিউইয়র্কের বেথপেজে এটি সাবেক বিমান কারখানার বাইরে এক বসন্ত সন্ধ্যায় ক্যাথি রেব নামে পরিচয়দানকারী লং আইল্যান্ডের এক গৃহবধূ সিগারেট টেনে শেষ করেন। তিনি শংকিতভাবে নিউইয়র্কের বাইরে শহরতলীতে কীভাবে পরিবর্তনের জটিলতা দেখেছেন তা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকেই তাদের গ্রুপে ঐক্যবদ্ধ থাকছে। সুতরাং শ্বেতাঙ্গদেরও তাই করতে হবে।
শ্বেতাঙ্গদের মধ্যকার অসন্তোষ পুরনো ও এ মুহূর্তে তা নতুন করে জেগে উঠেছে। এ পরিবর্তন ঘটেছে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন, মধ্যপ্রাচ্যে দেড় দশকের যুদ্ধ এবং পুলিশের সহিংসতার প্রেক্ষিতে আত্মবিশ্বাসী অথচ যুদ্ধংদেহী কৃষ্ণাঙ্গ তরুণদের রোষের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে। এর পিছনে রয়েছে দেশপ্রেম, গর্ব এবং এ অনুভূতি যে তাদের ছাড়া আমেরিকা কোনো আমেরিকা নয়।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর সময় থেকে জাতি সম্পর্কের অবনতি ঘটছে বলা আমেরিকানদের সংখ্যা বেড়েছে। এপ্রিলে সিবিএসের জনমত জরিপে দেখা যায় যে তা বেড়ে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। সবচেয়ে বেশী বৃদ্ধি ঘটেছে রিপাবলিকানদের মধ্যে। ৬০ শতাংশ বলেছেন, জাতি সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে।
লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূতদের ঐতিহ্য, পরিচিতি ও ভবিষ্যত বিষয়ে উৎসর্গিত মন্টানাভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চালান লেখক ও কর্মী রিচার্ড স্পেন্সার (৩৮)। তিনি বলেন, আমরা কে, সে পরিচিতির প্রশ্ন নিয়ে আমেরিকানরা কখনো আলোচনা করেনি। ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য প্রকাশ্যে পরিচিতির রাজনীতি নিয়ে আসছেন যা আগে কেউ করেনি। সূত্র দি নিউইয়র্ক টাইমস। (অসমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন