করোনাভাইরাসে আতঙ্কে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জীবনযাত্রা থমকে গেছে। এই পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছে নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ওদের চোখেমুখে বিষণœতা। করোনা সতর্কতায় যখন সবাইকে ঘরে থাকার কথা বলছে সেখানে জীবিকার তাগিদে খেটে খাওয়া মানুষ বের হচ্ছে সংসারের খরচ জোগাতে। সংসার কিভাবে চলবে সেটা নিয়েই তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। ক্ষুধার জ্বালায় অসহায় হতদরিদ্র মানুষ।
নগরীর বাকলিয়া, খাতুনগঞ্জ, মুরাদপুর, স্টেশন রোড, কদমতলী, আগ্রাবাদ, ডেবার পাড়, পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন এলাকার এসব নি¤œ আয়ের মানুষগুলো চোখেমুখেও এখন রাজ্যের বিষণœতা। এসব এলাকায় করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঘরবন্দি হওয়া হতদরিদ্র অনেকের কাছে এখনও ত্রাণ পৌঁছায়নি।
তারা বলছে, কোথায় যাব আমরা। শুনছি ত্রাণ দেয়া হবে, কিন্তু তাতো এখনও হাতে পাইনি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ঘরে থাকার পরামর্শ মানতে গিয়ে এখন সংসার চলছে না। অফিস-আদালত, শিল্প-কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু লকডাউন হওয়ায় আয়-রোজগার নেই। এদের একজন রিকশাচালক মেহের আলী।
চার সদস্যের পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম তিনি। সারাদিন রিকশা চালিয়ে রিকশা মালিকের টাকা, নিজের খরচ ও গ্যারেজ ভাড়া বাদ দিয়ে থাকতো দুইশ টাকা। ওই টাকা দিয়ে বাজার নিয়ে যাওয়ার পর রান্না হতো। কিন্তু এখন সড়কে নেই কোন তেমন মানুষ। রিকশা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না যাত্রী। নিজে কী খাব, স্ত্রী-সন্তানদের কী খাওয়াব এ নিয়ে মেহের আলীর চিন্তার শেষ নেই।
স্টেশন রোড এলাকার মুচি আবুল কালাম বলেন, সবকিছু বন্ধ, লোকজন নেই রাস্তায়। বন্ধ হয়ে গেছে আয়-রোজগার। এক ছেলে ভ্যানগাড়ি চালাত, সেটিও বন্ধ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
খাতুনগঞ্জ এলাকার ঠেলাগাড়ি চালক নজির আহমদ বলেন, একসময় পণ্য পরিবহন করে ব্যস্ত সময় কাটাতাম। কিন্তু এখন সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজেও চলতে পারছি না। সংসারও চালাতে পারছি না। যারা দিনে আনে দিনে খায় তাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন