বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আক্ষেপ নিয়ে শরীফের ‘অবসর’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

লড়িয়ে ক্রিকেটার হিসেবে বরাবরই নাম ছিল তার। জাতীয় দলে ব্রত্য হয়েও ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন নিবেদিত। দীর্ঘ পথচলায় পৌঁছে গিয়েছিলেন অনন্য এক মাইলফলকের সামনে। বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট ছুঁতে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ উইকেট। কিন্তু চোট আর নানা পারিপার্শ্বিকতায় এই পথকেই তার মনে হচ্ছিল অনেক দূর। কঠিন বাস্তবতার কাছে তাই হার মেনে গেল স্বপ্ন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এই সংস্করণে দেশের সফলতম পেসার মোহাম্মদ শরীফ।
কিছুদিন ধরেই অবসর ভাবনা তার মাথায় ছিল। ৩৪ বছর বয়সী পেসার জানালেন, গতপরশু সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন পাকাপাকিভাবে। ইতি টানছেন সাদা পোশাকে ২০ বছরের ক্যারিয়ারের। গতকাল প্রকাশ্যে আনলেন তা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে থমকে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ যদি শুরু হয় আবার, তাহলে তার ইচ্ছে আছে, মাঠ থেকে ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার। লিগ যদি এবার আর না হয়, তাহলে তার খেলোয়াড়ী জীবনেরও এখানেই ইতি।
২০০০ সালের নভেম্বরে ১৫ ছুঁইছুঁই বয়সে বিকেএসপিতে বাংলাদেশ বিমানের হয়ে অভিষেক। ২০০১ সালের এপ্রিলে বুলাওয়ায়োতে টেস্ট ক্যাপ পান ১৫ বছর ১২৮ দিন বয়সে। টেস্ট ইতিহাসে তার চেয়ে কম বয়সে খেলেনি আর কোনো পেস বোলার। পিঠের চোট, পরে আরও নানা চোট মিলিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার থমকে যায় ১০ ম্যাচেই। ওয়ানডে খেলেছেন তারও একটি কম। জাতীয় দলে তাকে শেষবার দেখা গেছে ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে। তবে এই বিশ বছরে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার রেকর্ড শরীফের (১৩২)। পেস বোলিংয়ে তার ৩৯৩ উইকেটের মতো ১৫ বার ৫ উইকেটও দেশের রেকর্ড। আছে হ্যাটট্রিকও। ব্যাট হাতেও ছিলেন বরাবরই লড়াকু। একটি সেঞ্চুরি আর ১০ ফিফটিতে রান করেছেন ৩ হাজার ২২২। দারুণ সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের শেষবেলায় আক্ষেপ কাক্সিক্ষত মাইলফলক ছুঁতে না পারায়, ‘৪০০ উইকেট না হওয়ার আক্ষেপ নিয়েই যেতে হচ্ছে। ইনজুরি খুব ভোগাচ্ছে। গত এক বছরে সেভাবে ফার্স্ট ক্লাস খেলতে পারিনি। সামনেও খেলা কঠিন। সব মিলিয়েই ভাবছিলাম অবসরের কথা। এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম।’
২০ বছর খেললেও ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না তার জন্য। ক্রিকেটই যে ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান, ‘ছোট থেকে ক্রিকেটই খেলেছি। ক্রিকেট খেলার মতো আনন্দ আর কিছুতে পাইনি। ঘরোয়া ক্রিকেটও আমি দারুণ উৎসাহ নিয়ে খেলেছি। প্রতিটি ম্যাচই আমার কাছে ছিল খুশির উপলক্ষ্য। কিন্তু একটা সময় তো ছাড়তেই হয়। ৪০০ উইকেট হলো না, ৪ হাজার রান করারও ইচ্ছে ছিল। সেজন্য আরও বেশ কিছুদিন খেলতে হতো। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সম্মানটা ধরে রেখে এবং সবার কাছে ভালো থাকতে থাকতেই বিদায় নেওয়া ভালো। ক্যারিয়ারে পেয়েছিও তো অনেক!’
দুই দশকের সেই পথচলা থামল অবশেষে। শিগগিরই শেষ হবে খেলোয়াড়ী জীবনও। শরীফ যদিও থাকতে চান ক্রিকেটের সঙ্গেই, যদি বিসিবি তাকে সুযোগ করে দেয়, ‘ইনজুরির কারণে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটেও শেষটা হলো ইনজুরির ভোগান্তির কারণে। কিছু করার নেই। তবে আমি ক্রিকেটেই থেকে যেতে চাই। এক জীবনে ক্রিকেট ছাড়া তো আর কিছু করিনি। বিসিবি যদি কোনো ভ‚মিকায় আমাকে কাজে লাগতে চায়, সেই আশায় থাকব। মাঠে যেভাবে খেলেছি, কোনো দায়িত্ব পেলে সেখানেও উজার করে দেব নিজেকে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন