স্পোর্টস রিপোর্টার : ১২টি ক্লাব নিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের জেবি পেশাদার ফুটবল লিগ। কাগজে-কলমে শিরোপা রেসে থাকার মতো দল চট্টগ্রাম আবাহনী, শেখ রাসেল, ঢাকা আবাহনী আর শেখ জামালই। তবে ছোট ক্লাবগুলোর সম্ভাবনাও কিন্তু কম নয়। ইতোমধ্যে দুই টুর্নামেন্টে চমক দেখিয়েছে আরামবাগ, রহমতগঞ্জের মতো ক্লাবগুলো। আর তাই বড় ক্লাবগুলোর পাশাপাশি ছোট ক্লাবগুলোও শিরোপা প্রত্যাশী এবার। তবে পেশাদার ফুটবল লিগে এখন পর্যন্ত কাগজে-কলমে শীর্ষ দলগুলোর একটি শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। মৌসুমের সব শিরোপা ঘরে তুলতে এবার শক্তিধর দল গড়েছে ঢাকার ক্লাবটি। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পূর্ণ শক্তির রাসেল খেলতে পারেনি মৌসুমের শুরুর দুই টুর্নামেন্টে। ফলে আশানুরুপ ফলও পায়নি তারা। তবে ক্লাবের কোচ মারুফুল হক মনে করেন দেশের সব থেকে আকর্ষণীয় শিরোপাটি পেশাদার লিগের। আর বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে এখন সংগঠিত শেখ রাসেল। তাই লিগের শিরোপাটা নিজের করে নিতে চায় ক্লাবটি।
বাঘা বাঘা ফুটবলারদের নিয়ে যারা সেরা দল গঠন করেছে তাদের প্রত্যাশাটা তো বেশি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। শেখ রাসেলও এর ব্যতিক্রম নয়। রাসেলের কোচ একে এম মারুফুল হক জানালেন তার দল এখন আত্মবিশ্বাসী লিগের শিরোপা দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে, ‘শেখ রাসেল এবার টিম গড়েছিলো মৌসুমের সব শিরোপা ঘরে তুলতে। গত দু’টি টুর্নামেন্টে আমরা আশানুরুপ ফল পাইনি। তবে আমার মনে হয় পেশাদার লিগের শিরোপাটা দেশের সব থেকে আকর্ষণীয় শিরোপা। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে লিগের শিরোপা পেতে।’
ঢাকার বাইরে লিগ হবে। দর্শকদের সব থেকে বড় আকর্ষণ থাকবে ভারতের আইএসএলে খেলে আসা বিদেশী ফুটবলার ফিকরু তেফেরার খেলা দেখা। যে বর্তমানে খেলছে শেখ রাসেলের জার্সি গায়ে। কিন্তু ইনজুরির কারণে দুই টুর্নামেন্টে মাঠে খুব একটা দেখা যায়নি তাকে। তবে রাসেলের কোচ মারুফুল হক জানালেন, ‘স্বাধীনতা কাপেই ইনজুরিতে পড়েছিলো ফিকরু। ফেডারেশনকাপে দলের প্রয়োজনে ইনজুরি নিয়েই খেলতে হয়েছে তাকে। তবে আশা করছি পেশাদার লিগে তাকে পাওয়া যাবে।’ দলীয় অধিনায়ক আতিকুর রহমান মিশু পেশাদার লিগটাকে দেখছেন ফুটবলারদের তারকা হয়ে উঠার মঞ্চ হিসেবে, ‘ফুটবলারদের জন্য সব থেকে রোমাঞ্চকর এবারের লিগটা। কেননা সারা দেশব্যাপী খেলাগুলো হবে। ঢাকার বাইরের মাঠগুলোতে অনেক দর্শক হয়। তাই এবারের লিগ হবে খেলোয়াড়দের নিজেদের পরিচিত করে তোলার একটা মঞ্চ। ভালো খেলে তারকা বনে যাবার সুযোগ থাকবে লিগে।’
অপরদিকে চারবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী গত কয় আসর ধরে ঘরে তুলতে পারছে না লিগের শিরোপা। তবে এবার শিরোপা ঘরে তুলতে প্রত্যাশী আবাহনীর কোচ জর্জ কোটান। ইতোমধ্যে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতে আত্মবিশ্বাসী কোটানের শিষ্যরা। গত আসরেও আবাহনীর দায়িত্বেই ছিলেন কোটান। তবে শিরোপাটা তুলে দিতে পারেননি আবাহনীর হাতে। তাহলে কোন বিশেষ পয়েন্টটির কারণে লিগের শিরোপা প্রত্যাশা করছেন কোটান? উত্তরটা জানালেন নিজেই, ‘গত আসর আর এবারের আসরে ভিন্নতা আছে। লিগের ফরমেশন ভিন্ন। এবার ৪-৫টি দলই সমান শক্তির। তাই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চেষ্টা করবো। টিমের প্রস্তুতি খুব ভালো। একমাত্র জীবন ছাড়া দলের সবাই ফিট আছে। ক্লাবের ক’জন নিয়মিত জাতীয় দলেও অনুশীলন করছে। সব মিলিয়ে লিগ শুরু করতে আমরা প্রস্তুত আছি।’ দলীয় অধিনায়ক আরিফুল ইসলামও মনে করেন লিগে সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিতে প্রস্তুত আছে তার দল, ‘ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। মোটিভেশন অবশ্যই হাই। তবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি সেটি ভুলে গিয়ে নতুন করে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের লক্ষ্য। দলের অবস্থা এখন টুর্নামেন্ট থেকে ভালো। যেহেতু ইতোমধ্যে দু’টি টুর্নামেন্ট খেলে ফেলেছি আমরা। তাই টিমে ফিটনেসে কোন সমস্যা নেই।’
এদিকে ছোট দলগুলোও কিন্তু ছেড়ে কথা বলছে না। জায়ান্ট কিলার খ্যাত রহমতগঞ্জের কোচ কামাল আহমেদ বাবু মনে করেন তার দলও শিরোপা লড়াইয়ে থাকার ক্ষমতা রাখে, ‘আমাদের দলের অবস্থা মোটামুটি ভালো। এবারের মৌসুমে দলগুলোর যে অবস্থা কোন দলই নিজেদের একচেটিয়া সেরা দল বলতে পারবে না। দুই টুর্নামেন্টে সেটি সবাই দেখেছেও। আমাদের দলে তরুণ ফুটবলার বেশি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শিরোপা লড়াইয়ে থাকতে চাই। আর উত্তর বারিধারার কোচ রাশেদ আহমেদ পাপ্পু জানালেন তাদের দলের লক্ষ্য টেবিলের ছয়-সাততম অবস্থানে থাকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন