শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহর রহমত ব্যতীত কেউ মুক্তি পাবে না

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

যদি কেউ এ কথাটি সঠিক বলে মনে করে যে, দোজখের আগুন হয়তো একদিন ঠাÐা হয়ে যাবে, তাহলে কি মুশরিক ও কাফিররা নিজেদের গোনাহসমূহ হতে পাক-সাফ হয়ে দয়া ও করুণার অধিকারী হয়ে যাবে? এর উত্তর হচ্ছে এই যে, কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ রয়েছে যে, শিরক ও কুফরের গোনাহ ক্ষমা করা হবে না। অর্থাৎ এর পরকালীন শাস্তি অনিবার্য ও অপরিহার্য। আর একথাও মনে রাখতে হবে যে, শিরক ও কুফরের শাস্তি হবে চিরকালের জন্য। মোট কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত দোজখ কায়েম থাকবে তারা এই আজাব থেকে নিস্তার লাভ করবে না।

কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় এমন দিন যদি আসে যখন দোজখের আজাবের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাবে, তাহলে সে সময় সে অপরাধীরা আজাব হতে মুক্তি লাভ করাও আশ্চর্যকর নয়? এ প্রশ্নের জবাবও আল কোরআনে এভাবে দেয়া হয়েছে, আল্লাহ বলেন, ‘দোজখের আগুনই হচ্ছে তোমাদের ঠিকানা, সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে, কিন্তু আল্লাহ পাক যা ইচ্ছা করেন, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ (সূরা আল আনয়াম : আয়াত ১২৮)।

এই আয়াতের শেষ অংশটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বলা হয়েছে যে, ‘তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ এখানে নির্দিষ্টভাবে ‘রব’ শব্দটির ব্যবহারে বোঝা যায় যে, ‘আল্লাহর শানে রাবুবিয়াত অর্থাৎ প্রতিপালনের মর্যাদাসুলভ ইচ্ছা যদি কার্যকরী হয় এবং তার সীমাহীন জ্ঞান-বিজ্ঞান যদি ইচ্ছা করে, তাহলে দোজখের সমাপ্তির পর হয়তো তারা রেহাই পেতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সন্দেহ থেকে যায় যে, তারা এরপর জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে কি না? কেননা হজরত ঈসা আ.-এর জবাবে কোরআনুল কারিমে আল্লাহপাক এই ঘোষণা জারি করেছেন, ‘অবশ্যই যে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করবে, তার জন্য আল্লাহপাক জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হচ্ছে দোজখ।’ (সূরা মায়েদাহ : আয়াত ৭২)।

অপর এক আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াত বা নিদর্শনাবলিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তা মেনে নিতে অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আকাশসমূহের দরজা উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সুঁইয়ের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করতে পারে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৪০)।

মোটের ওপর, আল্লাহর ঘোষিত শাস্তির বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, যদি দোজখের শাস্তির সীমা শেষও হয়ে যায়, তবুও জান্নাতের সীমারেখার মাঝে তাদের পদচারণা সম্ভব হবে না। তবে আল্লাহপাকের দয়া ও মায়ার পরিমÐল খুবই বিস্তৃত। যেমন তিনি স্বয়ং দোজখিদের সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘তারা চিরকাল দোজখে অবস্থান করবে, যতদিন আকাশ-মÐলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে, যদি তোমার রব অন্যরূপ ইচ্ছা করেন। অবশ্যই তোমার প্রতিপালক যা চান, তা-ই করেন।’ (সূরা হুদ : আয়াত ১০৬-১০৭)।

তার এই রহমত ও করুণার পরিমÐলকে কে কমাতে পারে? কেননা তিনি স্বয়ং রহমতের বিস্তৃতি সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘আমার রহমত প্রতিটি বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৬)। এই সাধারণ রহমতের বিস্তৃতি থেকে আসমান ও জমিনের কোনো অংশ খালি আছে কি? তদুপরি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর প্রতি মিথ্যারোপকারীদের সম্পর্কে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, ‘সুতরাং যদি তারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চায়, তাহলে বলে দাও যে, তোমাদের প্রতিপালক সুবিস্তৃত রহমতের অধিকারী এবং তার আজাবকে গোনাহগারদের ওপর হতে ফেরানো যাবে না।’ (সূরা আল আনআম : আযাত ১৪৮)।

অর্থাৎ এমন সাধ্য কাহারো নেই যে, তার প্রেরিত আজাবকে গোনাহগারদের থেকে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু স্বয়ং তার রহমত খুবই বিস্তৃত। তিনি ইচ্ছা করলে তাদেরকে দুনিয়াতেই হেদায়েত দান করে জান্নাত নসিব করতে পারেন, অথবা আখেরাতে শাস্তি দানের পর ক্ষমা করতে পারেন এবং তার মূল রহমতের স্থান সেটাই, যেখানে অন্য কাহারও রহমতের অস্তিত্ব নেই। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে ‘সে দিন যার ওপর হতে আজাব দূর করা হবে, সুতরাং আল্লাহ তার ওপর রহমত করেছেন, ইহাই স্পষ্ট সফলতা।’ (সূরা আল আনআম : আয়াত ১৬)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
মোঃ আরিফুল ইসলাম ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৬ এএম says : 1
নারায়ে তাকবীর আল্লাহুআকবার নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দ্বীন ইসলাম জিন্দাবাদ আহলে সুন্নাত ওয়াল জাময়াত জিন্দাবাদ
Total Reply(0)
মোঃ আরিফুল ইসলাম ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 1
নারায়ে তাকবীর আল্লাহুআকবার নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দ্বীন ইসলাম জিন্দাবাদ আহলে সুন্নাত ওয়াল জাময়াত জিন্দাবাদ
Total Reply(0)
Mizan Rahman ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 1
It's universal truth
Total Reply(0)
Loving Bird ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 1
Ramjan mash inshallah kono coronavirus thakbay nah ai dowa kori.lockdown dorkar ni ramjan mashay
Total Reply(0)
কে এম শাকীর ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 1
মহান আল্লাহর রহমত ব্যতীত শুধু নিজের আমল দ্বারা কেউই জান্নাতে যেতে পারবে না। কারণ, মহান আল্লাহ মানুষকে অতি দুর্বলভাবে সৃষ্টি করেছেন। যার কারণে মানুষ নিজের ইচ্ছায় হউক কিংবা শয়তানের ধোকায় হউক কিংবা মানুষের চাপে পড়ে কিংবা প্রলোভনের শিকার হয়ে কিংবা অসৎ সঙ্গীর কারণে ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে জানা-অজানায় ছোট-বড় গোনাহের কাজ করে থাকে।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:২০ এএম says : 1
এমন কিছু গোনাহ আছে যেগুলো মানুষেরা জানেই না যে, বাম পাশের আমল লেখক গোনাহ লিখছেন। এহেন অবস্থায় মানুষেরা যতই আমল করুক না কেন, যদি আল্লাহর রহমত না থাকে তাহলে কেউই জান্নাতে যেতে পারবে না।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১:২০ এএম says : 1
মূলকথাঃ মূল ইবাদতের পাশাপাশি গোনাহের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। বেশী বেশী তাওবাহ করতে হবে এবং ইস্তেগফার পড়তে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর তরিকা অনুসারে আমল করতে হবে। তাহলে আশা করা যায় যে, মহান আল্লাহ তার স্বীয় রহমতের উসিলায় জান্নাত দান করতে পারেন।
Total Reply(0)
Mohammad Sirajullah, M.D. ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৭:৪০ এএম says : 1
We face this question everyday and can not answer with our very limited knowledge of Islam. Question is what will happen to millions of people who did not hear about Prophet Muhammad (SA) and his prophethood. Even in Bangladesh people did not hear about the prophethood of Muhammad (SA) until 600 years after his death. What would happen to these fore fathers of ours. They lived in this period of Muhammad (SA) ‘s Nobuyat but did not hear his name even.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন