শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

গ্রিসের শরণার্থী শিবিরেও করোনার আঘাত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ৩:১৪ পিএম

বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দেয়া মহামারি করোনা সংকট শুধু বিভিন্ন দেশের মানুষের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে না, যেসব মানুষ ভিটেমাটি ত্যাগ করে অন্য দেশে আশ্রয় খুঁজছেন, তারাও পড়েছেন মহা আতঙ্কে। বিশেষ করে যারা কোনোভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন, তাদের ভাগ্যও থমকে গেছে। করোনা সংকটের ঠিক আগে তুরস্ক ইউরোপের উপর ‘প্রতিশোধ' নিতে শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়ায় গ্রিসে নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নেমেছিল। এখন শরণার্থীদের মধ্যেও সংক্রমণ বেড়ে চলেছে।

মঙ্গলবার গ্রিসের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পেলোপোনেসে উপদ্বীপে একটি হোটেলে শরণার্থীদের একটা বড় অংশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ৪৭০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ১৫০ জনের শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়েছে। সোমবারই গোটা স্থাপনা কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। সরকারি এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জায়গাটি বিচ্ছিন্ন করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, গ্রিসের মূল ভূখণ্ডের দুটি শরণার্থী শিবিরেও একই কারণে কোয়ারান্টিন ঘোষণা করা হয়েছে।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী, গ্রিসে এই মুহূর্তে শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৩৯,০০০ বিভিন্ন দ্বীপে ছড়িয়ে রয়েছেন। সেখানে অবশ্য শরণার্থীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। শরণার্থী শিবিরে কম জায়গায় অনেক মানুষকে পরস্পরের খুব কাছাকাছি থাকতে হয় বলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। ফলে গ্রিসের সরকার গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েছে। বিভিন্ন দ্বীপে শরণার্থী শিবিরে ভিড় বাড়ার কারণে সরকার ২,৩৮০ জন ঝুঁকিপূর্ণ শরণার্থীকে মূল ভূখণ্ডের শিবিরে আনার উদ্যোগ নিয়েছিল। ঠিক তার পরেই সংক্রমণের ঘটনা ঘটলো।

করোনা সংকটের জের ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বিবেচনার প্রক্রিয়াও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। ইউরোপের সীমান্তও কার্যত বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থা কাটিয়ে তোলার উদ্যোগ নিতে চায় জার্মানি। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ইইউ সভাপতি দেশের দায়িত্ব পালনের সময় ইউরোপীয় স্তরে সাধারণ এক আশ্রয় প্রণালী চালু করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস। সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, লুক্সেমবুর্গ ও লিশটেনস্টাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সের পর তিনি এ কথা বলেন। বিশেষ করে আফ্রিকা থেকে আসা শরণার্থীদের ক্ষেত্রে সাধারণ শরণার্থী নীতি প্রয়োজন বলে মাস মনে করেন।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, করোনা সংকট সত্ত্বেও জার্মানি গ্রিসের শরণার্থী শিবির থেকে নিঃসঙ্গ নাবালকদের জার্মানিতে আশ্রয়ের উদ্যোগ চালিয়ে যাবে। উল্লেখ্য, গত শনিবার প্রথম ৪৭ নাবালক জার্মানিতে এসে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে ১,৬০০ নাবালক বিভিন্ন ইইউ দেশে আশ্রয় পাবে। ‘সেভ দ্য চিলড্রেন' সংগঠনের সূত্র অনুযায়ী গ্রিসের শরণার্থী শিবিরগুলিতে প্রায় ১৩,০০০ নাবালক কঠিন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। অনেকে বাবা-মার সঙ্গে থাকলেও তাদেরও সহায়তার প্রয়োজন বলে এই সংগঠন মনে করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন