আসল খাল বাদ দিয়ে তিন ফসলি জমি ও সরকারী হালট কেটে মাটি বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে স্থানীয় ইট ভাটায়। খাল কাটার নামে লাখ লাখ টাকার হরিলুট করা হচ্ছে।
প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ ফকির দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এতে নষ্ট হচ্ছে ফসলী জমি, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচী। এছাড়া স্থানীয় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। চলমান লকডাউনের মধ্যে শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে কাজ করায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যা, ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই ব্রিটিশ আমলের হালট কেটে মাটি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। এই হালটের পাশে বেশির ভাগ জমি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের। হালটের পাশে লাগানো শতাধিক গাছও কেটে নিয়েছে কুদ্দছ ফকির ও তার লোকজন। মাটি জমির পাশে না ফেলে বিক্রি করে দেয়ায় ফসলী জমিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া হালট বিলুপ্ত হয়ে গেলে ছাত্রছাত্রীদের চলাচলসহ কৃষকরা ট্রাক্টর কিংবা গরু-বাছুর নিয়ে মাঠে যেতে পারবেনা।
সম্প্রতি রামনগরবাসী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মাটি কাটা বন্ধ রাখার জন্য আবেদন করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা জেতি প্রু মাটি কাটা বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনাও প্রদান করেন। কিন্তু সরকারী এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে হালট ও ফসলী জমি কেটে মাটি বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি ইতোপূর্বে মাটি কাটা বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী করুণীয় নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, জনগণ ও সরকারী সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে, খাল কাটার নামে রামনগর গ্রামের দাস পাড়া, দুর্গাপাড়া সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা হতে রামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পাকা রাস্তা পর্যন্ত খালকাটার মহাযজ্ঞ চলছে। খালকাটার নামে মাটি বিক্রি র মহাযজ্ঞের নেতৃত্ব দি”ে আব্দুল কুদ্দুছ ফকির ও তার বাহিনী। সম্প্রতি তার বাড়ি থেকে দশ বস্তা ত্রানের চাল উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া করোনার বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী আত্বসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এই অপকর্মে সহযোগিতা করছে শাজাহান হত্যার আসামি রাধানগর গ্রামের খলিল মোল্যার ছেলে কালা মোতাহার, একই গ্রামের বাসিন্দা আলেপ সিকদারের ছেলে কামাল, খোয়াজিডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মুনসুর মাতুব্বরের ছেলে মুরাদসহ অনেকে। এ প্রসঙ্গে কুদ্দুছ ফকিরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে এলাকাবাসী শংকর বলেন, কুদ্দুছ ফকির ক্ষমতার অপব্যবহার করে হালট কেটে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায় ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। তবে হালট ও ফসলী জমি রক্ষায় স্থানীয়৷ প্রশাসন এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদী তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন