যশোরে ভেজাল মদ পানে দু’দিনে ৮ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। তারা অতিরিক্ত দেশি অথবা চোলাই মদ ও স্প্রিরিটপানে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। যারা মারা গেছেন এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলা এলাকায় ৫ জন, মনিরামপুরে ২ জন এবং ঝিকরগাছায় ১ জন। ভেজাল মদপানে কয়েকজনের মৃত্যুর খবরে শুক্রবার রাত থেকেই তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত বেআইনি মদ বিক্রেতা যশোরের হাসানকে। শনিবার মাঠে নামেন ভ্রাম্যমাণ আদালতও। অভিযানে যুক্ত হন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
মৃতদের মধ্যে দুইজনের নাম যশোর জেনারেল হাসপাতালে নথিভুক্ত আছে। তবে বিষয়টি সর্ম্পকে এখনও অন্ধকারেই আছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ। যশোর শহরতলীর ঝুমঝুমপুর বালিয়াডাঙ্গা এলাকার জনৈক সাখাওয়াত আলী বিশ্বাসের ছেলে ফজলুর রহমান ওরফে চুটকি (৫০)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃদ্যু হয়। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতায় লেখা আছে, ‘অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায়’ তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ফজলুরের মৃত্যুর বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তির যশোর শহরের মাড়োয়ারি মন্দির-সংলগ্ন পতিতালয়ের সামনে জনৈক হাসানের মদের দোকানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। মারা যাওয়ার আগে তিনি ওই দোকান থেকে মদ পান করেছিলেন।
একই রাত একটা দশ মিনিটে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মুন্না (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে মুন্নাকেও ‘অ্যালকোহলজনিত পয়জনিংয়ের শিকার’ বলে উল্লেখ করা আছে। মুন্নার ভাই জুলফিকার নিশ্চিত করেছেন, তার ভাই নিয়মিত হাসানের দোকানে বসে মদ পান করতেন।
শহরের ঘোপ এলাকার সাবু(৪৫) নামে একজনও নিয়মিত হাসানের দোকানের খরিদ্দার ছিলেন এবং হাসানের দোকান থেকে মদ পান করার পর অসুস্থ হয়ে শুক্রবার হাসপতালে মারা গেছেন। তার পিতার নাম আব্দুল কুদ্দুস। বৃহস্পতিবার শহরের বেজপাড়া এলাকার নান্টু নামের এক ব্যক্তিও মারা যায় ভেজাল মদ পানে। সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় প্রতিবেশিরা পুলিশে খবর দেন। কোতয়ালী থানার এসআই জিয়াউর রহমান গিয়ে তাকে ঘর থেকে মৃত অবস্থায় বের করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোরের আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঝিকরগাছা উপজেলার কাটাখালি গ্রামের সাহেব আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তি। ভেজাল মদ পানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
এছাড়া শুক্রবার বিকালে মনিরামপুরে মোমিন (৪২) মুক্তার আলী (৪৫) আরো দুই ব্যক্তি মারা গেছেন শুক্রবার। মারা গেছেন একই রাতে সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলার আবু বক্করের ছেলে আক্তারুজ্জামান(৪৫)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন