করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর রূপ ইউরোপে সবার আগে দেখেছে ইতালি। এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা এ দেশটিতেই বেশি। তবে আশার খবর সাম্প্রতিক সময়ে এর ভয়াবহতা কিছুটা কমেছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, গতপরশু ইতালি ও স্পেনে এক মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফেরা দেশটি ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন শিথিল করতে যাচ্ছে। আর যে ফুটবল মৌসুম ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছিল তাতে দেখা দিয়েছে আশার আলো। মাঠে ফিরছে দেশটির ফুটবল! আগামী ৪ মে থেকে ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করতে পারবেন রোনালদো-লুকাকুরা। আর ১৮ মে থেকে সিরি আ ক্লাবগুলো দলীয় অনুশীলনে ফিরতে পারবে বলে জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্পে কন্তে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমায় ধীরে ধীরে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে লকডাউন শিথিল করার পদক্ষেপ নিচ্ছে ইতালির সরকার। তাতে মাঠে ফুটবল গড়ানোর পথ খুঁজছেন ইতালিয়ান লিগ কর্তৃপক্ষ। আপাতত আগামী সপ্তাহ থেকেই খেলোয়াড়রা নামছেন অনুশীলনে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে নেওয়া হবে লিগ শুরুর সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বললেন, ‘নিরাপদভাবে অনুশীলন শুরু করতে ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বিজ্ঞানীদের সঙ্গে একত্রে কাজ করবেন ক্রীড়া মন্ত্রী ভিনসেঞ্জো স্পাদাফোরা। আর অনুশীলন শুরুর পর লিগ মৌসুম আবারও শুরু করা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা হবে।’
গত ৯ মার্চ থেকে পুরো ইতালি লকডাউন করার পরই স্থগিত হয়ে যায় সিরি আ। প্রায় সাত সপ্তাহ ধরে ফুটবল দেখা থেকে বিরত আছেন ভক্ত-সমর্থকরা। আর তাতে আর সবার মতো ব্যথিত ইতালির প্রধানমন্ত্রীও। অবস্থা বিবেচনা করে চাইলে রোনালদো, দিবালা, লুকাকু, ইব্রাহিমোভিচরা নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে অনুশীলন শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘অন্য সব ইতালিয়ান ফুটবল ভক্তদের মতো আমি একজন বড় ফুটবল ভক্ত। লিগ বন্ধ হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মারাত্মক প্রতিক‚ল অবস্থার মাঝে পড়ে গিয়েছিলাম। আর সব ফুটবল ভক্তরাই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন যে, এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’
যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও আসেনি তবে আশা করা হচ্ছে, আগামী ২৭ মে থেকে ২ জুনের মধ্যে পুনরায় শুরু হতে পারে সিরি ‘আ’র ২০১৯-২০ মৌসুম। আর মৌসুম শেষ হতে পারে আগস্টের শুরুর দিকে।
ইতালিতে এখন পর্যন্ত সিরি আর কমপক্ষে ১৫ জন ফুটবলার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের প্রায় সবাই ধীরে ধীরে সেরে উঠলেও এখনও আতালান্তার অতিরিক্ত গোলরক্ষক মার্কো স্পোর্তিয়েল্লো কোভিড-১৯ পজিটিভ। গত পরশু দেশটিতে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ২৬০ জন। যা ছিল ১৪ মার্চ থেকে ইতালিতে ভয়াবহতা শুরুর পর সবচেয়ে কম সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। তবে সবমিলিয়ে দেশটির মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ হাজার ৬৪৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন