শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিদেশিদের সরিয়ে স্থানীয়দের চাকরি দেয়ার নির্দেশ ওমানে

কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকিতে প্রবাসীরা

প্রবাসী, চাকরি | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৬ এএম

বিদেশী কর্মীদের সরিয়ে নিজ নাগরিকদের চাকরি দেয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ওমান সরকার। বিশেষত উচ্চ পদগুলোর ক্ষেত্রে এই নির্দেশ আগে পালন করতে বলা হয়েছে। নাগরিকদের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বুধবার এই নির্দেশ দেয়া হয়।
ওমানের অর্থ মন্ত্রণালয় সরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে পরিচালনামূলক পদসহ সব ক্ষেত্রে বিদেশী কর্মীদের পরিবর্তে নাগরিকদের নিয়োগের জন্য ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এখনও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর পরিচালক পদ দখল করে আছে। ওমানের জনসংখ্যা ৪৬ লাখ। এর মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি বিদেশী এবং তারা বেশ কয়েক দশক ধরে উপসাগরীয় দেশটির উন্নয়নে প্রধান ভ‚মিকা পালন করেছে। গালফ উপসাগরের তীরে আরব দেশগুলোতে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বিদেশী নাগরিক কাজ করে, যাদের বেশিরভাগ এশিয়ান।

তবে তেলসমৃদ্ধ এই দেশগুলো ২০১৪ সাল থেকে অপরিশোধিত দাম হ্রাস পাওয়ায় ক্ষতির মুখোমুখি এবং করোনাভাইরাস মহামারী এবং বিশ্ববাজারে এর প্রভাবে নতুন ধাক্কা খেয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা এবং তেলের রাজস্ব হ্রাসের মুখোমুখি হয়ে ওমান এবং অন্যান্য উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরির জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওমান, সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার এবং বাহরাইন তাদের অর্থনীতির বৈচিত্র্য আনতে এবং লাখ লাখ নতুন স্নাতকদের কর্মশক্তিতে একীভ‚ত করতে চাইছে। দেশগুলো সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই বিদেশিদের বদলে নাগরিদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য আইন চালু করেছে।

চাকুরি হারানোর ঝুঁকিতে প্রবাসীরা
এদিকে ওমানের সিদ্ধান্তে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে কয়েক লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর মাঝে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের এ মহাসঙ্কটে এমন ঘোষণায় প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে। দেশটির নির্মাণ খাত, সেবা সেক্টর, জ্বালানি খাত, মৎস্য খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রতি বছর প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, ১৯৭৬ সনে ১১৩ জন কর্মী প্রেরণের মধ্য দিয়ে দেশটিতে জনশক্তি রফতানি শুরু হয়। ২০১৯ সনে ওমানে ১২ হাজার ২২৬ জন মহিলা গৃহকর্মীসহ সর্বমোট ৭২ হাজার ৬৫৪ কর্মী চাকরি লাভ করে। শুরু থেকে গত ফেব্রæয়ারি মাস পর্যন্ত দেশটিতে সর্বমোট কর্মী গমনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ জন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে দেশটিতে ১২ হাজার ৩০৭ জন কর্মী কর্মসংস্থান লাভ করেছে। এ দু’মাসে দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা ১৮৬ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে। এদিকে বিশেষ ফ্লাইটে ওমান থেকে গতকাল দেশে ফিরেছেন ২৮৯ জন বাংলাদেশি শ্রমিক।

গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বায়রার যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার ইনকিলাবকে বলেন, তেলের দাম শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই চাকরি নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এর পরেও অস্থিরতায় না ভুগে প্রবাসী কর্মীরা যাতে দেশে ফিরে না আসেন সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বায়রা নেতা মিজান বলেন, করোনা মহামারীর সঙ্কটকালে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যাতে বাংলাদেশি কর্মীদের ছাঁটাই না করা হয় সে ব্যাপারে সরকারকে ব্যাপক কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় রেমিট্যান্স খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

এছাড়া, ওমানে জীবিকার তাগিদে বসবাস করা লক্ষাধিক প্রবাসী বিভিন্ন কারণে দেশটিতে অবৈধের তালিকায় পড়েছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। কাজ নেই, খেতেও পারছেন না অনেকে। ত্রাণের জন্য সরকার থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রবাসীরা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
borhan ১১ মে, ২০২০, ৩:৫৩ পিএম says : 0
Those workers has been staying at Oman illegal way please help them.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন