বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রুই-কাতলা মা-মাছ ডিম ছাড়তে প্রস্তুত

বজ্রবৃষ্টি ঘোলা স্রোতেই ছাড়বে ডিম : অপেক্ষায় জেলেরাও

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৬ এএম

রুই কাতলা মৃগেল মা-মাছেরা যে কোনো সময়েই ডিম ছাড়ার জন্য প্রস্তুত। জেলেরাও অপেক্ষা করছেন ডিম সংগ্রহে। এশিয়ায় মিঠাপানির রুই কাতলা মৃগেল (কার্প) বড় জাতের মাছের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র ‘মাছের ব্যাংক’ ও ‘অর্থনৈতিক নদী’ খ্যাত হালদা। এবার পরপর দুই ‘জো’ অতিবাহিত হয়ে গেলো। তবে মা-মাছেরা নদীবক্ষে ভেসে উঠেনি। ছাড়েনি এখনও ডিম।

মা-মাছ দলে দলে ভেসে উঠে নদীতে ডিম ছাড়ার পুরো ব্যাপারটা নির্ভর করছে আবহাওয়া-প্রকৃতির মতিগতির উপর। হালদা নদী এলাকায় তুমুল বজ্রবৃষ্টি হলে এবং উজান থেকে তখনই ঘোলা স্রোত প্রবাহিত হলেই ছাড়বে ডিম মা-মাছেরা। আর সেই উপযুক্ত ক্ষণের জন্য প্রস্তুত মা-মাছ। পেটভর্তি ডিম নিয়ে অপেক্ষা করছে হালদা নদীর তলদেশে। আর বিশেষ পদ্ধতিতে ডিম সংগ্রহের জন্যও অপেক্ষা করছেন নদী তীরে জেলের দল।

এ প্রসঙ্গে গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হালদা নদী গবেষণাগারের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কীবরিয়া ইনকিলাবকে জানান, হালদা নদীতে মা-মাছেরা ডিম ছাড়ার জন্য পরবর্তী পূর্ণিমা ‘জো’ ৩ মে শুরু হবে। ৮/৯ মে পর্যন্ত তা বজায় থাকবে। এ সময় বিপুল সংখ্যক মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। বজ্রবৃষ্টি মুখর আবহওয়ায় মা-মাছ ডিম ছাড়ে।

আশা করা যায়, তৃতীয় ‘জো’-তে ৩ থেকে ৪/৫ ঘণ্টা ধরে উত্তর চট্টগ্রামের হালদা নদীবক্ষে তীব্র বজ্রবৃষ্টি এবং একই সময় উজানে পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার দিকে প্রবল বর্ষণ হতে পারে। প্রায় একশ’ কিলোমিটার হালদার এই গতিপথে বজ্রবৃষ্টির সময় উজানের ঘোলা স্রোত নদীর ভাটির দিকে গড়াতে যখন শুরু করবে, তখনই মা-মাছেরা মনের সুখে স্বাভাবিক পরিবেশে হালদার বুকে ভেসে উঠবে। আর দলে দলে ছাড়বে ডিম।
তবে তিনি এটাও সতর্ক করে বলেন, বঙ্গোপসাগরে আসছে সপ্তাহে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের ঘনঘটা তৈরি হতে পারে। এ ধরনের শঙ্কা ও সামুদ্রিক সতর্ক সঙ্কেত থাকলে তখনও মা-মাছেরা ডিম ছাড়বে না। নদীর তলদেশ থেকে উঠবেও না। আরও অপেক্ষা করবে। অপার মহিমাময় প্রকৃতির এটাই নিয়ম-বিধি। তিনি জানান, আগামী তৃতীয় ‘জো’ (পূর্ণিমা) ছাড়াও এরপর জুন মাস অবধি মোট ৬টি ‘জো’র মধ্যে আর ৩টি ‘জো’ অবশিষ্ট থাকবে। হালদায় মা-মাছ ডিম ছাড়তে পারে তখনও।

গতবছর ২৫ মে-২০১৯ইং হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশ (কার্প জাতীয়) মা-মাছেরা মোট ৭ হাজার কেজি ডিম ছাড়ে। আগের বছর ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল ডিম ছাড়ে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি। যা দশ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করে। ২০১৭ সালে ডিম ছাড়ার পরিমান ছিল এক হাজার ৬৮০ কেজি।
বিশেষজ্ঞগণ জানান, হালদার রুই কাতলা মৃগেল মাছই এশিয়ায় মূল প্রজাতির। এর ডিম রেণু ও পোনা থেকে মাছ দ্রæত বর্ধনশীল। আকারে ওজনেও বৃহৎ হয়ে থাকে। এই বড় জাতের মাছের সবচেয়ে উন্নত বীজপোনা হালদা জোগান দিচ্ছে সমগ্র দেশে। হালদার বার্ষিক অর্থনৈতিক অবদান প্রায় ৮ শ’ কোটি টাকা।
অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কীবরিয়া জানান, ডিম সংগ্রহ থেকে সংরক্ষণ, ৪ দিনের রেণু, পরবতীতে পোনা ফোটানো, অপচয়রোধ, সারাদেশে বাজারজাতসহ আগাগোড়া প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু সমন্বয় এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। যার অনেক কিছু এখনও ঘাটতি রয়ে গেছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Md Kayes ১ মে, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Helal Masud ১ মে, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
প্রিয় ইনকিলাব চট্টগ্রাম হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও রুহুল আমিন মহোদয় কে নিয়ে একটি নিউজ করেন প্লিজ। তিনি নিজ সন্তানের মত রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে রাতদিন হাড়ভাঙ্গা কঠোর পরিশ্রম করে হালদা কে আগলে রেখেছেন মা মাছ গুলা যেন দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে বেঁচে থেকে শতকোটি বাচ্চা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আমিষের শূন্যতা কে যেন পূর্ণতা করতে পারে, হালদাপাড়ের মানুষদের কাছে গিয়ে শুনুন তার হালদা নদীর জন্য অসীম ত্যায়াগের কথা রুপকথার গল্প কেও হারমানাবে --এই মানুষটির অবদানের কথা পরিশ্রমের কথা না লেখলে তার প্রতি জুলুম করা হবে, অন্যায় করা হবে, অবিচার করা হবে, আর লেখলে বাকিরা নদী রক্ষায় মাছ রক্ষায় উৎসাহীত হবে।
Total Reply(2)
রাহমাতুল আল মুবিন ১ মে, ২০২০, ৪:৩৯ এএম says : 0
আমরা তাও বিবেচনা করছি। ইউএনও হাটহাজারী ডায়নামিক কর্মকর্তা। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
রাহমাতুল আল মুবিন ১ মে, ২০২০, ৪:৩৯ এএম says : 0
আমরা তাও বিবেচনা করছি। ইউএনও হাটহাজারী ডায়নামিক কর্মকর্তা। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
জন্মভুমি ছাতক ১ মে, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ, খবর শুনে ভালো লাগলো।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন