বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুমুদিনীর টেলিমেডিসিন সেবা পেয়ে বেজায় খুশি তারা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ মে, ২০২০, ৭:১২ পিএম

একে তো হার্টের রোগী তারপর মাসখানেক ধরে সারা শরীরে গুটি উঠে চুলকানিতে রাতের ঘুমও হারাম হয়ে গিয়েছিল গোড়াকী গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধব আব্দুস সামাদের। সিজনাল সর্দি জ্বরে ভুগছিলেন জোগীরকোফা গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী পিতৃহীন সামিয়া আক্তার। করোনা ভাইরাস সংক্রমের ভয়ে আর লকডাউনে যানবাহনের অভাবে এতোদিন হাসপাতালে গিয়ে সেবা নেয়নি তারা।
শনিবার বাড়ির পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কুমুদিনী হাসপাতালের মেডিকেল ক্যাম্পে বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের টেলিমেডিসিন সেবা পেয়ে বেজায় খুশি তারা। একই রকম খুশি ক্যাম্পে এসে চিকিৎসা নেয়া আমেনা বেগম, শাহানাজ বেগম, ইসমত আরা, সাদেক দেওয়ান, রিফাত ও সবুজসহ অনেকে। তারা ভাবতেই পারেননি এই সময়ে এভাবে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে পারবেন। সত্যিই অভাক করার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করেন তারা।
করোনা ভাইরাস সংক্রমের ভয়ে বা লকডাউনে যানবাহনের অভাবে হাসপাতালে আসতে না পারা রোগীদের বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে বিনামূল্যে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের এ ধরণের কার্যক্রম অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে সরেজমিনে মেডিকেল ক্যাম্পে গিয়ে দেখা গেছে, নানা বয়সী নারী-পুরুষ শিশু চিকিৎসা নিতে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাড়িয়েছেন। রোগীদের মাঝে দূরত্ব বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালের দুজন নিরাপত্তাকর্মী।
চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর কথা বলার জন্য তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী বুথ। প্লাস্টিকে ঘেরা দেয়া বুথের ভেতরে টেবিলের উপর রাখা হয়েছে একটি ল্যাপটপ। রোগী এবং চিকিৎসকের মধ্যে অনলাইনে সংযোগ স্থাপনের দায়িত্ব পালন করছেন কুমুদিনীর আইটি বিভাগের প্রধান আলমগীর হোসেন। টেবিলের একদিকে স্বাস্থ্যকর্মী আর আইটি বিভাগের লোক অপরদিকে রাখা টুলে বসা রোগী অনলাইনে চিকিৎসকের কাছে তার রোগের বর্ণনা দিচ্ছেন। বর্ণনা শুনে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দিলে আইটি বিভাগের লোক তা প্রিন্ট দিয়ে দিচ্ছেন। সকাল দশটা থেকে শুরু হওয়া এই চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। এই সময়ে ৩২ জন নারী ৮ জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন বলে কুমুদিনী হাসপাতালে সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল হাই জানান।
আইটি অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, ওয়েব কেমেরার সামনে বসে রোগী তার সমস্যার কথা বর্ণনা করলে অপরপ্রান্তে থাকা চিকিৎসক তা দেখে ও শুনে ব্যবস্থাপত্র লেখে দেন। পরে তিনি ব্যবস্থাপত্র প্রিন্ট করে রোগীকে দিয়ে থাকেন।
কুমুদিনী হাসপাতালের অপর কর্মকর্তা শুভ দাস জানান, রোগীদের প্রেসার বা শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, আর্তমানবতায় সেবাই প্রতিষ্ঠিত দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার কুমুদিনী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। রোগীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সময়পোগি যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তিনি এজন্য কুমুদিনী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য শুক্রবার বিকেলে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল হালিম সংবাদ সম্মেলন করে টেলিমেডিসিন মেডিকেল ক্যাম্প সেবা কার্যক্রমের কথা ঘোষণা দেন। তারই অংশ হিসেবে শনিবার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে ক্যাম্প স্থাপন করে সেবা দেয়া হয়। পর্যাক্রমে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে একাধিক ক্যাম্প স্থাপন করে নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে বলে ডা.মো. আব্দুল হালিম উল্লেখ করেন। # মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর, ০২-০৫-২০২০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন