শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ধ্বংসস্তূপের চূড়ায় ইফতার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২০, ৩:০৯ পিএম

পূব আকাশে সূর্য অস্ত গেছে কিছু সময় আগেই। চারদিক নীরব। পশু-পাখির কলতান নেই। নেই মানুষের হৈ হুল্লোড়। শুধু আছে গোলার আঘাতে ধ্বসে যাওয়া বাড়ি। পুড়ে অঙ্গার হওয়া দেয়াল আর খসে পড়া ইট-বালুর স্তুপ। সারি সারি বাড়িগুলো ধ্বংসস্তুপে রূপ নিয়েছে। এক নজরে মনে হবে, ভূমিকম্পে ধসে গেছে। সেই ধ্বংস্তুপের এক চূড়ায় ইফতার সাজিয়ে বসেছে তারেক আবু জিয়াদের পরিবার। মা, স্ত্রী, তিন সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যের নিয়ে স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে এসেছেন ২৯ বছর বয়সী এই সিরিয়ান যুবক।

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আহিরা শহরে ছিল তারেক আবু জিয়াদের বসবাস। একটা সময় মুখরিত থাকত তাদের বাড়িটি। খোশগল্পে কাটত তাদের সময়। তিন সন্তানের দৌড়ঝাপে প্রাণ পেত বাড়িটি। কিন্তু সব শেষ হয়ে যায় গত বছর। সিরিয়ার সরকারী বাহিনী যখন শহরটিতে বিমান হামলা চালায়। পরিবার নিয়ে শহর ছেড়ে পালায় আবু জিয়াদ। শুধু তিনিই নন, তার মতো আরো অনেকে পালায়।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নয় বছরের যুদ্ধকালীন সময়ের সর্বশেষ আক্রমণস্থল ইদলিব প্রদেশের প্রায় ১০ লাখ মানুষ তখন পালিয়ে প্রাণ বাঁচান।

আহিরা শহরের বাসিন্দারা চলে যান উত্তরের দিকে। চলে যান আবু জিয়াদের পরিবারও। কিন্তু স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। শৈশব থেকে কৈশোর- বেড়ে উঠার এই সময়টা যে কেটেছে ওই বাড়িতেই। মধুর আরো কত স্মৃতি। রমজানে পুরো পরিবারের সাথে ইফতার, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা। এখন সেই স্মৃতিগুলোই যন্ত্রণা বাড়াতে থাকে আবু জিয়াদের। ফিরে আসতে চান স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িতে।

তাই গত মাসেই চলে আসেন শহরে। কিন্তু ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া বাড়িটিতে আর ফিরতে পারেন না। কিন্তু রমজান মাস চলছে। বাড়িতে একদিন ইফতার করার ইচ্ছাটা বার বার উঁকি দিচ্ছে। ইচ্ছাটা জানান পরিবারের সদস্যদের। তারা একবারেই রাজি হয়ে যান। কিন্তু সেখানে তো ইফতার বানানো যাবে না। তাহলে উপায়?

উপায়টা মা জানালেন। বললেন, আমরা ইফতার বানিয়ে নিয়ে যাব। সেখানে গিয়ে শুধু সাজিয়ে নেব।

যা কথা, তা-ই কাজ। প্রয়োজনীয় সব কিছু গুছিয়ে মা, স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে রওনা হলেন আবু জিয়াদ। রওয়া হলেন বাড়ির উদ্যেশে। তাদের পা পড়তেই প্রাণ ফিরে পেলো বাড়িটি। ধ্বংসস্তুপের একটি অংশ ইফতার করার জন্য ঠিক করা হলো। আবু জিয়াদের মা আর স্ত্রী মিলে সেটি পরিস্কার করে মাদুর বিছালেন। গ্লাসে শরবত ঢেলে ধীরে ধীরে বাকি ইফতার সাজালেন।

ততক্ষণে বাড়ির আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ান আবু জিয়াদ। বলতে থাকেন মনের কথাগুলো, ‘প্রতি বছর আমরা এখানে রমজান পালন করতাম। তাই এই রমজানে অন্তত একটা দিন এখানে ইফতার করতে চাচ্ছিলাম। মা বললেন খাবার সাথে করে নিয়ে আসব। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ছিল, নিজের বাড়িতে আবার ইফতার করা। স্মৃতিকে আবার জীবিত করা।’

সূত্র : আল-জাজিরা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Nurul Alam ৭ মে, ২০২০, ৪:১১ পিএম says : 0
My dear brother and sister innallahe masavreen brother and sister in the world nobody powerful then Allah insahAllah he will justify time will be comming nobody proprietor for any country all world proprietor only Allan best regard nurul alam from chittagong Bangladesh
Total Reply(0)
jack ali ৭ মে, ২০২০, ৫:৩১ পিএম says : 0
O´Allah wipe out barbarian Asad and his Army/Russian Army/Iranian Army/Hezbullah from Syria by coronavirus, then peace will prevail and the syrian muslim will come back to Syria. Ameen.
Total Reply(0)
elu mia ৭ মে, ২০২০, ৭:১৮ পিএম says : 0
বাসার আল আসাদ,খমেনি আর পুতিন এই ৩ টাই সয়তান।আল্লাহ এগুলারে ধ্বংস করুক।
Total Reply(0)
mojnur rahmanl ১১ মে, ২০২০, ৪:২৬ এএম says : 0
পুর্ব আকাশে কখনো সুর্য অসত যায়
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন