বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অর্ধেক মার্কেট খুলছে না

যমুনা ফিউচার পার্ক-বসুন্ধরা শপিংমল-পিংক সিটি-নিউ মার্কেট-বায়তুল মোকাররম, গাউছিয়া-চন্দ্রিমা মার্কেট বন্ধ থাকছে : ঈদের আগে খুলবে না কোনো জুয়েলারি দোকান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২০, ১২:০৪ এএম

মে মাস করোনার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপ‚র্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকদের বক্তব্য এ মাসে সবচেয়ে বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমন হবে। মে মাসের প্রথম ৭ দিনে প্রায় ৫ হাজার (৪৭৫৮ জন) আক্রান্ত হয়েছে। সে জন্য সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় লকডাউন কঠোরভাবে পালনের পরামর্শ তাদের। অথচ সরকার ঈদ উপলক্ষ্যে ১০ মে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শপিংমল, বিপনিবিতান ও মার্কেটগুলো খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছু বিবেকবান ব্যাক্তি করোনা সংক্রমন এড়াতে মার্কেট না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

করোনা সংক্রমণ ঝঁকি এড়াতে ঈদের আগে রাজধানীর অনেক মার্কেট ও বিপনিবিতান খুলছে না। বৃহত্তম তিন শপিং কমপ্লেক্স বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, পিংক সিটি না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও নিউ মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট ঈদের আগে না খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। আর বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে করোনার কারণে ঈদের আগে দেশের কোনো জুয়েলারি দোকান খোলা হবে না।

বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স না খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম এ হান্নান আজাদ। যমুনা ফিউচার পার্ক ঈদের আগ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন যমুনা গ্রæপের ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম। ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যনিবাহী কমিটির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্যবসার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমরা মার্কেট না খোলার পক্ষ্যে তবে ৯ মে সিদ্ধান্ত জানাব। এছাড়াও বায়তুল মোকাররম মার্কেট, পিংক সিটি, গাউছিয়া, চন্দ্রিমা মার্কেট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা ঈদের কেনাবেচার জন্য করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না।

গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, দোকান মালিক সমিতির সভাপতির চিঠি পেয়েই ১০ মে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কেউ খুলবে নাকি বন্ধ রাখবে তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সংক্রমণ ঠেকাতে অঞ্চলভিত্তিক শপিংমলে কেনাকাটার নির্দেশনা জারির চিন্ত করছে সরকার। অন্যদিকে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, বাণিজ্য সচিবের চিঠি পেয়েই মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যারা মার্কেট খোলা রাখতে পারবেন তারা খুলবেন। আর যারা পারবেন না তারা বন্ধ রাখলেও সমস্যা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে চীন, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে বিপুল পরিমান কাপড় বাংলাদেশে আসে। এবার করোনার কারণে চীনের বাজার বন্ধ থাকায় সে দেশের কোনো কাপড় আসেনি। ঈদের মার্কেট ধরতে ভারত থেকে বিপুল পরিমান কাপড় বাংলাদেশে আনা হয়েছে। ঈদে মার্কেটগুলো বন্ধ থাকলে শত শত কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় অবিক্রিত থেকে যাবে। এতে লোকসান গুণতে হবে ব্যবসায়ীদের এবং ভারতও বঞ্ছিত হবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে। মূলত ঈদে একচেটিয়াভাবে ভারতীয় কাপড় বিক্রির জন্যই ১০ মে শপিংমল-বিপনিবিতানগুলো খোলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বসুন্ধরা শপিংমল দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এম এ হান্নান বলেন, করোনার কারণে ঈদের আগে বসুন্ধরা শপিংমল খোলা হবেনা। দোকানদার সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে চললেও সামাজিক দূরত্ব কীভাবে মানবে? ক্রেতারা যখন আসবে তাদের মধ্যে তোন তেমন দূরত্ব থাকবে না। ক্রেতারা কোনো পণ্যই হাত দিয়ে স্পর্শ ছাড়া কেনে না। জিনিসপত্রে ক্রেতার হাতের স্পর্শ লাগবেই। আবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মার্কেটে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

যমুনা গ্রæপের ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম বলেন, ‘ঈদের আগে দোকান খুললে ক্রেতা-বিক্রেতার অতি ব্যস্ততার কারণে মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম লঙ্ঘন হবে। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়বে। তাই যমুনা ফিউচার পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যনিবাহী কমিটির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, সরকার ১০ মে মার্কেট খুলতে বলেছেন। আমরা নিউমার্কেটের পক্ষ থেকে জানিয়েছি, প্রতিদিন করোনা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। জীবনটা আগে। আমাদের নিজের, কর্মচারীদের এবং ক্রেতাদের, সর্বোপরি দেশের ক্ষতি হয় এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবো না। ৯ মে সমিতির কার্যনিবাহী কমিটির বৈঠক আছে। ওই বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বায়তুল মোকাররম ব্যবসায়ী সমিতির সমিতির সদস্য ও বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, করোনার কারণে দেশের সব জুয়েলারি বন্ধ রাখার পাশাপাশি বায়তুল মোকারমের পুরো মার্কেট বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠকের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়। তিনি জানান, সরকার দোকান খোলার অনুমতি দিলেও কর্মচরী-শ্রমিকরা রয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তারা আসতে পারবেন না। দোকান খোলার পর স্বাস্থ্য বিধি মেনে দোকান চালানোটা দুরহ ব্যপার। এটি সম্ভব নয় বলেই অনেক মার্কেট খুলবে না।
এদিকে গতকাল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটি টেলি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দোকান মালিক, কর্মচারী ও ক্রেতা সাধারণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সকল জুয়েলারী দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Humayra Sharmin ৮ মে, ২০২০, ১:১২ এএম says : 0
Narayanganj bashi shopping ey jabay ei. They are not afraid of Corona although it is a epicentre right at now. Very disappointing!!
Total Reply(0)
Billah Mcp ৮ মে, ২০২০, ১:১২ এএম says : 0
Please open market and cultivate Covid-19 hope you will get bumper production.
Total Reply(0)
Souravbarua Sajal ৮ মে, ২০২০, ১:১৩ এএম says : 0
দোকান ও শপিং মলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা কঠিন। আর খুললে ক্রেতা পাওয়ার নিশ্চয়তা কম।অন্যদিকে ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্ত তাই এই ক্ষেত্রে উভয়ের ব্যক্তিগত মতামতের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Ziared Rahman ৮ মে, ২০২০, ১:১৩ এএম says : 0
বাংলাদেশে সরকার বা দলের থেকে বেশি খারাপ প্রশাসনের মানুষ গুলা কারণ আইইডিসিআর যদি সব গুলা রুগী শনাক্ত করতো তাহলে বাহিরে আক্রান্ত মানুষ থাকতো না, তখন দোকান পাঠ খুললেও কোন সমস্যা হতো না, এখান বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির জন্য আইইডিসিআর দায়ী আমি মনে করি।
Total Reply(0)
MD Mawla ৮ মে, ২০২০, ১:১৩ এএম says : 3
জনগণের কাছে অনুরোধ আপনারা কেউ মার্কেটে যাবেন না বেঁচে থাকলে জীবনে ঈদ অনেকবার আসবে
Total Reply(0)
Md Mujibur ৮ মে, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
বাংলাদেশের মানুষ অনেক সচেতন। আশা করি বাংলাদেশের মানুষ পরিবার,প্রতিবেশি,সর্ব সাধারণের কথা চিন্তা করে এবার ঈদের কেনাকাটা করতে বাহির হবে না। মনে রাখতে হবে আমি ভাল পরিবার ভাল,প্রতিবেশি ভাল ,পুরো দেশ সুস্হ। আপনার আমার একটু সচেতনা পারে দেশ কে সুস্হ রাখতে।
Total Reply(0)
আসাদুল্লাহ আসাদ ৮ মে, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
করোনা´য় আপনি যদি মারা যান তাহলে সরকারের তালিকায় একটি সংখ্যা যোগ হবে মাত্র। এর বেশি কিছুনা। কিন্তু আপনার ফ্যামিলির কাছে আপনি একটি পৃথিবী। আপনার মৃত্যু তাদের দুনিয়াকে বিষন্ন করে তুলবে। তাই লক ডাউন শিথিল হলেও সাবধানে চলাফেরা করুন। সতর্ক থাকুন।
Total Reply(0)
Ziared Rahman ৮ মে, ২০২০, ১:১৫ এএম says : 0
মালিক পক্ষ যখন দেখছে দেশে হাজার হাজার আক্রান্ত মানুষ বাহিরে থাকতে পারে তখন তারা নিজের পরিবারের কথা ভেবে দোকান বন্ধ রাখতে চাচ্ছে। এটা মালিক পক্ষে যুক্তিক মনে করি দোকান বন্ধ রাখা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন