শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের শ্রমিকদের গুলির ঘটনায় তদন্ত কমিটি

ব্যাখ্যা দিল সিআরসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২০, ১১:০৮ পিএম

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার সিতারামপুর এলাকায় বুধবার পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় গুলি চালানোর ঘটনায় গতকাল রাতেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তথ্য জানান পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) প্রকৌশল গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আজ শুক্রবার তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী আরও বলেন, এটা জাস্ট মিস আন্ডারস্টেন্ডিং, আর কিছু না। পেমেন্ট নিয়ে এই মিস আন্ডারস্টেন্ডিং। শ্রমিকদের অতিরিক্ত ৩০০ টাকা করে দেয়ার কথা ছিল ঠিকাদারের। সেই পেমেন্ট নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেটাই আমরা দূর করে দিচ্ছি।
গুলির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যারা করছে, সেটা তদন্তের পরে বলতে পারব। এটা এখন তো বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষ হোক, তখন বলতে পারব। ওই ঘটনায় আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক বলেন, সিম্পল, জাস্ট পায়ে গুলি লাগছে সবার। ছয়জনের পায়ে গুলি লাগছে।
পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আন্দোলনকারী শ্রমিকরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করে আসছিলেন। ঠিকাদার বলেছিলেন, এই অতিরিক্ত সময়ের জন্য তাদের বাড়তি ৩০০ টাকা করে দেয়া হবে। তবে সেই টাকা দেয়া নিয়ে টালবাহানা শুরু করলেন সেখানে বুধবার রাতে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরই একপর্যায়ে শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
সিআরইসি’র ভাষ্য :
করোনাভাইরাসের কারণে বিদ্যমান প্রতিক‚ল সময়েও পদ্মাসেতু রেল-সংযোগ প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখতে প্রকল্পের ৪ হাজার ৭শ’ ৪২জন স্থানীয় শ্রমিকের সুরক্ষা ও সুস্থতায় নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেড (সিআরইসি)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় শ্রমিকদের পাশ্বর্বতী গ্রামগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে তাদের সুস্থতা ও সুরক্ষায় অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রনির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ। গত ৬ মে থেকে প্রকল্পের ১৭০ কিলোমিটারের মধ্যে এমন ৮৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে আইসোলেশনে আছেন স্থানীয় শ্রমিকরা। উল্লেখ্য, এ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার ব্যয়ভার বহন করছে সিআরইসি। এর আগে শ্রমিকদের নিজেদেরই থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করতে হতো। এছাড়াও, যেসব শ্রমিক নিজ থেকেই এ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে চান তাদের জন্য অতিরিক্ত মজুরিও বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত এসব পদক্ষেপের মাধ্যমেই শ্রমিকদের কোভিড-১৯ এর ঝুঁকি থেকে দূরে রেখে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। শুরুর দিকে শ্রমিকরা এ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও, পরবর্তীতে পাশের গ্রামে থাকার চেয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকাকে নিরাপদ চিন্তা করে তারা দ্রæতই আশ্রয় কেন্দ্রে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। শ্রমিকদের বেশির ভাগই আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসে।
মহামারির সঙ্কটে গৃহীত এসব পদক্ষেপের কারণে অতিরিক্ত অনেক ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে সিআরইসিকে। যদিও সিআরইসিকে গত ২৩ মাসে এ প্রকল্পের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্প অন্তবর্তীকালীন কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি। দুর্ভাগ্যক্রমে, গত ৬ মে আনুমানিক রাত ৯টার দিকে মাওয়াতে সিআরইসি’র এক আশ্রয়কেন্দ্রে শ্রমিকদের একটি দল জড়ো হয়ে অভিযোগ করে, বরাদ্দকৃত অস্থায়ী মজুরি তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। এ আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৫শ’ শ্রমিক অবস্থান করছিলেন। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন কিছু অসন্তুষ্ট শ্রমিক। যাদের আইসোলেশনের নিয়ম ভঙ্গ করে পাশের গ্রামে নিজদের বাড়িতে যাওয়ার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে, বিষয়টি সুরাহায়, বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এবং শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বাংলাদেশি নিরাপত্তাকর্মীরা শ্রমিকদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিক অসন্তোষের মুখে, তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে একজন নিরাপত্তাকর্মী শটগান দিয়ে ফাঁকা গুলি চালায়। এরফলে পাল্টা ধাওয়ায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৮ শ্রমিক আহত হয় এবং তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তিকরাহয়। এ দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত এবং আহত শ্রমিক দ্রæত আরোগ্য কামনা করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন