কুষ্টিয়ায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুধুই সোনালি ধান। ইতোমধ্যেই মাঠে পেকে ওঠা ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবারের বোরো মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ধান চাষ হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় ৩৩ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এবার বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন। তবে এবার বোরো চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলার মাঠজুড়ে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে। হাইব্রিড জাতের মধ্যে সোনার বাংলা-১, গোল্ড ও জাগরণ ধানে প্রতি হেক্টরে ৪.৭ টন এবং উচ্চ ফলনশীল (উফসী) জাতের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯, হীরা ও গাজী ধানের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে ৩.৭ টন করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
ধান ঘরে ওঠার শেষ মুহূর্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে বলে কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তরা জানান। সদর উপজেলার কবুরহাট, বাড়াদি, জয়নাবাদ, বটতৈল ও মোল্লাতেঘরিয়া গ্রামের পেকে ওঠা ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। সোনালি ধানের শীষের দোলায় খুশিতে ভরে উঠছে কৃষকের মন।
সদর উপজেলার বাড়াদি এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, এবার বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার, বালাইনাশক ও সেচ সঠিকভাবে দেওয়ায় ধানের ছড়া লম্বা ও ফলন ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৫-১৬ মণ থেকে ১৮-২০ মণ পর্যন্ত ধান কৃষকের ঘরে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে করোনার কারণে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে খুব সহজে শ্রমিক সংকট এড়াতে সরকারি ভর্তুকিতে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার। কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলার জন্য ১২টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার, ৩টি রিপার মেশিন ও ১টি রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার বরাদ্দ করা হয়েছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মোট মূল্যের অর্ধেক কৃষক দেবে। বাকি অর্ধেক ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার।
কৃষি বিভাগ ও সরকার গঠিত কমিটির মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভর্তুকিতে ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন কৃষকরা কিনে নিয়েছেন। এ কম্বাইন্ড হারভেস্টার ব্যবহার করলে ধান কাটা ও মাড়াইসহ বস্তাভর্তি হয়ে অটোমেটিক ধান বেরিয়ে আসবে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটা কার্যক্রম চলবে বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।
কুষ্টিয়া কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শ্যামল কুমার বিশ্বাস জানান, বোরো আবাদের শুরু থেকেই কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার ধানের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন