শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভ্যাপসা ঘাম ঝরানো গরম

শেষকালে তপ্ত বৈশাখ জানান দিচ্ছে- পঞ্জিকায় তো গ্রীষ্ম ঋতু

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

আঠাশ দিবস। মানে চার সপ্তাহ পার করলো বৈশাখ। শুরু থেকেই মেঘের সুশীতল ছায়া, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি-বাদল, হিমেল হাওয়ায় প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে যাচ্ছিল অন্যরকম বৈশিষ্টের এবারের বৈশাখ। করোনাকালে গৃহবন্দি মানুষের উৎপাতমুক্ত এমনকি যথেচ্ছ কোলাহলমুক্ত পৃথিবী পরিবেশ-প্রকৃতি। তেমনি বাংলাদেশেরও। মুক্ত প্রকৃতির সুখের জাগরণের সাথে যেন বৈশাখটা চিরাচরিত রুদ্র-রুক্ষ বৈরী আচরণ পরিহার করে পীড়িত ভীত অসহায় মানুষের প্রতি ‘সদয়’ ছিল।
তবে বিদায়কালে এসেই তেঁতে উঠেছে। যদিও স্বরূপে চরম ভাবাপন্ন হয়নি এখনও। তপ্ত হয়েছে বেশ খানিকটা। ভ্যাপসা গা-জ্বালা, ঘাম ঝরানো গরম জানান দিচ্ছে- এখন পঞ্জিকার পাতায় তো গ্রীষ্ম ঋতুই। কদিন পরই আসছে জ্যৈষ্ঠের খরতাপ।
গত কদিনের ভ্যাপসা গরমে সর্দি-কাশি, জ্বর, ডায়রিয়াসহ মৌসুমী রোগের বিচ্ছিন্ন প্রকোপ দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। করোনাকালে মৌসুমী রোগও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বটে। সেই সাথে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে মশার উৎপাত বেড়েছে।
আজ সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায়ও পারদ ছিল সর্বোচ্চ ৩৫ এবং সর্বনিম্ন ২৩.৭ ডিগ্রি সে.। ঢাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ও সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি সে.।
এমনকি সৈকত নগরী কক্সবাজারের তাপমাত্রা উঠে গেছে ৩৬.৩ ডিগ্রিতে। সেখানে বইছে তাপদাহ।
এ সময় সর্বোচ্চ বর্ষণ হয় সৈয়দপুরে ৪২ মিলিমিটার। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ হয়। আবার কোথাও কোথাও গুঁড়িবৃষ্টি হয়েছে। কোথাও ছিল সাময়িক বজ্রবৃষ্টি।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, ফেণী, কক্সবাজার, সিলেট, পাবনা পাবনা অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আগামীকালও অব্যাহত থাকতে পারে।
কাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, যশোর, কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং পাবনা বিভাগসমূহের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বিচ্ছিন্ন বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা থাকতে পারে। তবে সপ্তাহের শেষে আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসতে পারে।
আজ অবধি সমুদ্রে কোন লঘুচাপ-নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়নি। বন্দরগুলোতে সতর্ক সঙ্কেতও আপাতত নেই। লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ বিরাজ করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ-
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নুর মোহাম্মদ বলেন, করোনা-ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে চুড়ান্ত সতর্কতা ও সচেতনতা মাথায় রাখতে হবে। অনুসরণও করতে হবে সবসময়েই। সেই সঙ্গে বৈশাখের এই খরার দহনকাল গ্রীষ্মের মৌসুমে সবদিক থেকেই স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
যেমন- এ সময় সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যাথা, ডায়রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি মৌসুমী রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। এ সময়ে এড়িয়ে চলতে ধুলোবালি, ধোঁয়ার দূষণ, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ঘন ঘন বিশুদ্ধ পানি ও পানীয় পান করুন। যেগুলো বিশেষত ঘরের পরিবেশেই তৈরি। বাইরের খাবার ও পানীয় পরিহার করাই উত্তম। পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। ফ্যাটি বা তৈলাক্ত খাবার এড়ানো প্রয়োজন। বিশুদ্ধ বা বিষমুক্ত হরেক ধরনের রসালো ফল এ সময় উপকারি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন