শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

দোয়া কবুলের মাস রমজান

মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম একবার তিনটি বদদোয়া করেছিলেন। তিনটি বদদোয়ার প্রথম যে বদদোয়াটি করেছিলেন তা হলো, যে ব্যক্তি রমজান পেয়েও গোনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক, আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বদদোয়ার পরও বলেছেন, আমীন।
চিন্তা করে দেখি, আমরা রমজানে কেমন আমল করি। আমরা এ বদদোয়ার শিকার হয়ে যাব না তো। রমজান এসেছে সকল প্রকার গোনাহ ও অন্যায়-অপরাধ ছেড়ে তাকওয়ার পথে চলার জন্য। রমজান দেয়া হয়েছে ইবাদত-বন্দেগি করে মুত্তাকী হওয়ার জন্য। যদি রমজানের কর্তব্য আদায় না করি, তাহলে আমরা এ বদদোয়ার শিকার হয়ে যাব। আল্লাহ মাফ করুন।

তাওবার নিয়ম : আমাদের উচিত রমজানে নিজেদের শুধরে নেয়া। রমজানের শুরুর দিকের তুলনায় শেষ দশকের বরকত ও ফজিলত অনেক বেশি। এ দিনগুলোতে তাওবা করে সঠিক পথে চলার হিম্মত করব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর দরবারে আন্তরিকভাবে তাওবা করতে হবে। শুধু একবার হাত তুলে মাফ চাওয়াকেই তওবা বলে না। তাওবা হলো গোনাহ ও অন্যায় থেকে সম্পূর্ণ ফিরে আসা।

তাওবার কিছু শর্ত রয়েছে : এক. যে গোনাহ থেকে তাওবা করবে তা ত্যাগ করবে। গোনাহও করলাম আবার তাওবাও করলাম, এমন তাওবা কবুল হয় না। প্রথম কাজ গোনাহ ছেড়ে দিতে হবে। দুই. নিজের গোনাহ ও অন্যায়ের দরুন আল্লাহর দরবারে লজ্জিত হতে হবে। অনুতপ্ত হৃদয়ে তাওবা করতে হবে।
চিন্তা করে দেখি, একটা কুকুর তার মনিবের কী পরিমাণ ভক্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে থাকে। মনিব তাকে মাত্র দু’বেলা খাবার দেয়। এতেই সে সন্তুষ্ট, সারা রাত নির্ঘুম কাটায়। মনিবের বাড়ি পাহারা দেয়। মনিবের পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। আমিও তো এক মনিবের গোলাম। আমার জীবনের সবটুকুই যার দয়া ও অনুগ্রহ, প্রতিটি মুহূর্তে আমি যার নেয়ামতে ডুবে আছি সে মনিবকে কিভাবে ভুলে থাকি? কিভাবে তার নাফরমানি করি? আমার কী এখনো অনুতপ্ত হওয়ার সময় হয়নি?

তিন. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। চার. আল্লাহ তাআলার কোনো হক আদায় না করে থাকলে তা আদায় করতে হবে। যেমন- কেউ যদি নামাজ না পড়ে থাকে তাহলে তাওবা করার পদ্ধতি হলো, প্রথমে সে এ নামাজগুলোর কাজা আদায় করবে। কাজা আদায় না করে শুধু দোয়া করে মাফ চাইলে তাওবা হবে না। তদ্রুপ রমজানের রোজা ছেড়ে থাকলে তারও কাজা করতে হবে।

পাঁচ. অন্যের হক নষ্ট করে থাকলে তা আদায় করবে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবে। অন্যথায় এ গোনাহ আল্লাহ মাফ করবেন না। এ শর্তগুলো মেনে কেউ তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই মাফ করে দেবেন। আমরা যত বড় গোনাহগারই হই না কেন তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের সাগর বিশাল। তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের সাগরে গোসল করতে পারলে আমাদের গোনাহ ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Kausar Ahmed Chowdhury ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 0
দোয়া হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে বান্দার কথোপকথনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তাই আল্লাহর দরবারে যেকোনো সময় দোয়া করা যায়। রোজা অবস্থায় দোয়া কবুল হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাঁদের একজন হলেন রোজাদার ব্যক্তি।
Total Reply(0)
Umed Raja ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 0
এক বর্ণনায় এসেছে, ইফতারের আগ পর্যন্ত তাঁর দোয়া কবুল হয়। আরেক বর্ণনায় এসেছে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। রোজাদার ব্যক্তির উচিত সময়-সুযোগমতো আল্লাহর নিকট দোয়া করতে থাকা।
Total Reply(0)
Md Riyadh Hasan Jewel ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৭ এএম says : 0
আল্লাহর আরেক নাম গাফ্ফার, অর্থ পরম ক্ষমাশীল; আল ওয়াহহাব অর্থ সবকিছু দানকারী। আল্লাহ ওই মুহূর্তটিকে বেশি পছন্দ করেন, যখন বান্দা চরম বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ ও সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে, তাঁর কাছে মাগফিরাত ও নাজাত কামনা করে।
Total Reply(0)
Lokman Sami ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৭ এএম says : 0
মাহে রমজান দোয়া কবুলের সময়। আল্লাহ রোজাদারদের গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে নতুন জীবন লাভ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন।
Total Reply(0)
H M Tamim Khan ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৭ এএম says : 0
আল্লাহর কাছে দোয়া করলেই তা কবুল হয়। যা চাওয়া হয় তাই দেওয়া হয়। অথবা তা পরকালের জন্য জমা রাখা হয় অথবা দোয়ায় যা চাচ্ছেন তা আপনার জন্য কল্যাণকর নয়, তাই দেওয়া হয় না।
Total Reply(0)
Khorshed Gazi ১৬ মে, ২০২০, ১:৪৮ এএম says : 0
প্রতিদিন ইফতারের আগে, সাহ্‌রির আগে ও পরে, তাহাজ্জুদ নামাজের শেষে আল্লাহর কাছে প্রাণভরে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন