শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নিখোঁজ তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি

প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৫ পিএম, ২২ জুলাই, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : পারিবারিক বিরোধের জেরে এসএম আহসান রুনেল ইচ্ছা করেই বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর থেকে তিনি শুধু তার ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। কিন্তু মা ও স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঠিকই যোগাযোগ রাখছেন। ঈদের পরও তিনি বাড়িতে গিয়েছেন। আহসানের বড় ভাই আয়কর বিভাগের কমিশনার ড. এসএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, হঠাৎ করে বাসা থেকে উধাও হয়ে যাওয়ায় গত ২ ফেব্রুয়ারি আহসানের সন্ধান চেয়ে রমনা থানায় একটি জিডি করা হয়। কিন্তু গত আট মাসে এ ব্যাপারে কোনো খোঁজ নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আট মাস পর র‌্যাবের নিখোঁজের তালিকায় মেলে আহসানের নাম।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত সপ্তাহে তাঁর আইনি চেম্বার কাকরাইলে আসে র‌্যাব। তার কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়। র‌্যাব জানতে পারে আহসান নিখোঁজ নন। তবে ঢাকার ঠিকানা অজানা। তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান ড. জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, আমরা পরিবার থেকে কয়েক ভাই মিলে তাকে ব্যবসার জন্য টাকা দিয়েছি। কিন্তু সেই টাকার কোনো হিসাব দেখাতে পারেনি সে। হিসাব দেখতে চাওয়ার পর থেকেই সে নিরুদ্দেশ। এ কারণে জিডি করেছিলাম। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা জিডি করলাম ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু আট মাস পর মনে পড়ল এটির খোঁজ নেয়া দরকার। আর আমাদের ভাই তো ওই অর্থে নিখোঁজ নয়। তাহলে র‌্যাবের তালিকায় কেন তার নাম? এটি ভালো করে তদন্তই করেনি তারা। ঢাকার মৌচাক এলাকার ঘটনা এটি। ঢাকার বাইরে এরকম বহু ঘটনা আছে। র‌্যাবের তালিকায় নিখোঁজ অনেকেরই সন্ধান মিলেছে। রংপুরে নিখোঁজ ৯ জনের মধ্যে ৬ জনই বাড়িতে আছেন। চুয়াডাঙ্গার নিখোঁজ দু’জনের মধ্যে সামসুল হক মানসিক প্রতিবন্ধী। আরেকজন কৃষি বিভাগে চাকরি করেন। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের মানসিক প্রতিবন্ধী ইউসুফের নামও এসেছে র‌্যাবের তালিকায়। নীলফামারীতে কারাগারে থাকা ছাত্র ও দোকান কর্মচারীর নাম এসেছে নিখোঁজ তালিকায়। ঝিনাইদহ নিখোঁজ ২৯ জনের মধ্যে ২৪ জনই বাড়িতে আছেন। আরও দু’জন থাকেন বিদেশে। যশোরের র‌্যাবের তালিকার ১৪ জন মালেশিয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজদের তালিকায় মৃত ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ও কারাবন্দির নামও রয়েছে। এসব কারণে স্বাভাবিকভাবেই র‌্যাবের এই তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। নিখোঁজ তালিকায় নাম আসায় অনেক পরিবারই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। কেউ কেউ হয়রানির শিকারও হয়েছেন। কোনো কোনো এলাকায় ঘরে ঘরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তালিকায় নাম আসার পর ভয়ে নতুন করে অনেকে ঘর ছেড়েছেন। ভুক্তভোদিরে মতে, একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে এভাবে তালিকা তৈরীর আগে যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন ছিল।
রংপুরে ৯ নিখোঁজের ৬ জনই বাড়িতে
র‌্যাবের নিখোঁজ তালিকায় রংপুরের যে ৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, এর মধ্যে ছয়জনই বাড়িতে আছেন। একজন আছেন কারাগারে এবং ঠিকানা অনুযায়ী অপর দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। র‌্যাবের তালিকায় ১৬১ নম্বর ক্রমিকে থাকা সাব্বির আহমেদ ওরফে অনিন্দ (২৮) বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় রয়েছেন। তার বাবা কাজী আশফাক উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ৮ নভেম্বর নিখোঁজ হয় অনিন্দ। পরেরদিন কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়। আটদিন পর রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় সড়কের পাশ থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। ১৫৯ নম্বর ক্রমিকে থাকা রংপুর নগরীর বৈরাগীপাড়ার রেজওয়ানুর রহমান (২০) বর্তমানে রংপুর প্রেসক্লাব কমপ্লেক্সের নিচ তলায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে গত বছর ১৩ মার্চ বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে যাই। পরে ভুল বুঝতে পেরে তিনদিন পরই ফিরে এসে কম্পিউটারের দোকানে কাজ করছি। ১৫৮ নম্বর ক্রমিকে থাকা শায়েস্তা খান (২০) এখন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছে। তার বাবা আবদুস সবুর খান সাংবাদিকদের বলেন, বাড়ির কাউকে না বলে কয়েক বন্ধু মিলে ঢাকায় বেড়াতে যায়। খোঁজ না পাওয়ায় থানায় জিডি করা হয়। তিনদিন পর সে বাড়িতে ফিরে আসে। ১৬০ নম্বর ক্রমিকে থাকা সাঈদ হোসেন (২০), ১৫৭ নম্বর ক্রমিকে থাকা শামিম মিয়া (২৪) এবং ১৬৪ নম্বর ক্রমিকে থাকা সাদ্দাম ইকবাল (২১) নিখোঁজের অল্প কয়েকদিন পরই বাড়িতে ফিরে এসেছেন বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। নিখোঁজ তালিকার ১৬৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা মনোহরপুর এলাকার ইকবাল হোসেন (২০) প্রেমঘটিত একটি মামলায় রংপুরের কারাগারে রয়েছেন। ১৬২ নম্বর ক্রমিকে থাকা রেজাউল করিমের (২৮) ঠিকানা দেয়া হয়েছে নগরীর মাহিগঞ্জের কলাবাড়ি। সেখানে কেউ থাকে না। এক সময় থাকতেন। স্থানীয়রা জানান, রেজাউল পাগল প্রকৃতির ছিল। তার বাবা ওসমান গনি দিনমজুরি করতেন। এখন তারা কোথায় থাকে তা কেউ জানাতে পারেনি। ১৬৫ নম্বর ক্রমিকে থাকা পার্বতীপুর এলাকার বাসিন্দা আল আমিনের ছেলে নজরুল ইসলামের (২২) কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নিখোঁজ ৯ জনের মধ্যে ৬জন বাড়িতে আছেন। অন্য তিনজনের একজন কারাগারে এবং দু’জনের ঠিকানা অনুযায়ী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নীলফামারীতে কারাবন্দি ছাত্র ও দোকান কর্মচারী নিখোঁজ তালিকায়
র‌্যাবের নিখোঁজের তালিকায় থাকা ২৬২ জনের মধ্যে নীলফামারীর রয়েছেন দুই যুবক। এরা হলেন, জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মোখলেস উদ্দিনের ছেলে রহমতউল্যাহ (২২) ও সৈয়দপুর উপজেলার আরশাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২৪)। রহমতউল্যাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপ সায়েন্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আর আব্দুল্লাহ সিমেন্টের দোকানের কর্মচারী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের পর ১৭ মে ওই মামলায় রহমতউল্যাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে সে কারাগারে আছে। গত ১৪ মে রাতে রাজশাহী নগরীর মতিহার থানায় রহমতউল্যাহ নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন গ্রুপ সায়েন্স টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নূরুল আযম। তালিকায় নিখোঁজ আব্দুল্লাহ এ বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে তার বাবার ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাজীপুর যায়। পরে এ ব্যাপারে তার বাবা সৈয়দপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী করার তিন দিনের মধ্যেই আব্দুল্লাহ বাড়ি ফিরে আসে।
ঝিনাইদহ নিখোঁজ ২৯ জনের ২৪ জনই বাড়িতে
র‌্যাবের নিখোঁজ তালিকায় ঝিনাইদহে নিখোঁজ ২৯ জন। তবে পুলিশ বলছে, নিখোঁজদের ২৪ জনই বাড়িতে রয়েছেন এবং এরা কেউ জঙ্গি নন। বিভ্রান্তিকর এ তালিকা নিয়ে ঘরে ঘরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ তালিকায় দুই প্রতিবন্ধীর নাম রয়েছে। তালিকায় নিহত ও বাড়ি ফিরে আসা ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। অনুসন্ধানে এ জেলায় প্রকৃতপক্ষে দু’জন নিখোঁজ থাকার প্রমাণ মিলেছে। এরা হলেনÑ ঝিনাইদহ শহরের উপ-শহরপাড়া মসজিদের মুয়াজ্জিন সোহেল রানা ও সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের রাশেদুজ্জামান রোজ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, র‌্যাবের নিখোঁজ তালিকায় থাকা ঝিনাইদহ পৌরসভার খাজুরা গ্রামের কমিশনার গোলাম মোস্তফার বড় স্ত্রীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলাল ও একই গ্রামের গোলাম আজম পলাশের লাশ ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়। তালিকার ৬২ নম্বরে রয়েছেন রেজাউল করিম সোহেলকে নিজ বাড়িতেই একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, তালিকার ৬৩ নম্বরে রয়েছে মামুন রায়হানের নাম। সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই গ্রামের মাজেদুল হক (৩৫), দাদপুর গ্রামের আবু সাঈদ ও বলরামপুর গ্রামের মো. হাসান আলী (৩০) নিখোঁজ নন। নিজ বাড়িতে আছেন তারা। ২০৬ নম্বরে থাকা মহেশপুরের গোয়ালহুদা গ্রামের বাপ্পি ও ২৩২ নম্বরে থাকা একই গ্রামের ওয়াফিল বাড়িতে আছেন।
হরিণাকু-ু উপজেলার কাচারিতোলা গ্রামের সবদুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তার জামাই মোঃ মতিয়ার রহমান (৩০) মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে নিজ গ্রাম সাগান্নায় চলে যান। বিপদের আশঙ্কা করে সে সময় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি জিডি করেন তিনি। ৮১ নম্বরে রয়েছেন একই উপজেলার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ। এক বছর ধরে নিখোঁজ থাকার পরে সে বাড়ি ফিরে আসে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আইয়ূব হোসেন জানান, তার এলাকার কাশিপুর গ্রামের শামীম আলী (২৬) ও মোজাম্মেল মোল্যাকে (২৮) র‌্যাব খুঁজতে এসেছিল। শামীম বাড়িতে আছে এবং মোজাম্মেল বিদেশে চাকরি করে।
এ ছাড়া, শৈলকুপা উপজেলায় নিখোঁজ তালিকায় নাম থাকা ৮ জনের মধ্যে দু’একজন আছেন বিদেশে। বাকিরা বাড়িতে আছেন। এ উপজেলার হুদা মাইলমারী গ্রামের আমিজ উদ্দীনের ছেলে মাসুমকে সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়। পরে সে ফিরে আসে। একই উপজেলার চরআউশিয়া গ্রামের নাইমের নাম আছে তালিকার ৮৪ নম্বরে। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, নাইম বিদেশে চাকরি করছে। শৈলকুপার সাতগাছি গ্রামের মজিবর খাঁ (২৮) বোয়ালিয়ার উজ্জ্বল, ওয়াসিম আকরাম (২৫), উমেদপুরের রবিউল ইসলাম (২৫), বাজারপাড়ার রফিকুল ইসলাম (২২) ও কৃষ্ণপুর গ্রামের মোঃ তোতা (২৫) মিয়া নিখোঁজ নন বলে দাবি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের বিদায়ী চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তালিকায় নিখোঁজ থাকা কালুহাটী গ্রামের আশিকুর রহমান রিপন (২৪) ও আক্তারুজ্জামান বাড়িতেই আছেন। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রকাশ করা তালিকার ২৪ জন ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে মাত্র ৫ জনকে পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোরের ১৪ জন মালেশিয়ার পথে নিখোঁজ
র‌্যাবের তালিকায় যশোরের ১৫ জনের নাম রয়েছে। তালিকায় স্থান পাওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জনের বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এলাকাবাসী, স্বজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৪ যুবক দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন। কয়েক বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মণিরামপুরের ওই ১৪ জন দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে মালেশিয়ায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন। মশ্মিমনগর গ্রামের কামাল হোসেনের পিতা মহাতাপ সরদার বলেন, দালাল আমার ছেলেকে বিদেশ নিয়ে গেছে। আমার ছেলের কোনো খোঁজ নেই। একই গ্রামের কামরুল জামানের মা মরজিনা বেগম বলেন, এই পাড়ার তিন ছেলে একসাথে থাকত। একসাথেই কাজ করত। দালাল কিভাবে যে ওদের ফাঁদে ফেলে বিদেশে নিয়ে গেছে আমরা কিছুই জানি না। তিন বছর ধরে ছেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। নিখোঁজ আমানউল্লাহর পিতা গফুর বিশ্বাস বলেন, মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। তিন বছর পার হয়ে গেলেও ছেলের কোনো সন্ধান পাইনি।
এছাড়া র‌্যাবের নিখোঁজ তালিকায় থাকা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সামসুল হক মানসিক প্রতিবন্ধী। আরেকজন ফরহাদ কৃষি বিভাগে চাকরি করেন। র‌্যাবের তালিকায় থাকা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ইউসুফ ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে নিখোঁজ হয়। সে মানসিক প্রতিবন্ধী।
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার পর নিহত ও আহতদের তালিকা নিয়ে মাঠে নামে র‌্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হামলায় জড়িতরা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। এরপর দেশজুড়ে শুরু হয় নিখোঁজদের তালিকা ধরে অনুসন্ধান কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাড়াটিয়াদের তথ্য ও তালিকা চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে র‌্যাব দেশজুড়ে ২৬১ জনের একটি নিখোঁজ তালিকা প্রকাশ করে। পরে এ তালিকা নিয়ে সৃষ্টি হয় বিভ্রান্তি। তালিকায় নাম আসায় অনেকে ভয়ে ও আতঙ্কে নতুন করে ঘরছাড়া হয়েছেন। অনেকের পরিবার মানসম্মানের ভয়ে লজ্জায় গাঢাকা দিয়েছেন। ভুক্তভোগিরা জানান, যাচাই-বাছাই না করে এভাবে গণহারে তালিকা প্রকাশ করায় অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারকে যেমন সারা জীবনের জন্য হেয় করা হয়েছে তেমনি ঘরে ফিরে আসা অনেককে আবার ঘর থেকে বের হয়ে যেতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
ইমরান ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:৪৬ পিএম says : 0
এই বিভ্রান্তি দূর হওয়া দরকার।
Total Reply(0)
আজিজ ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:৪৬ পিএম says : 0
বিষয়টি উদ্বেগের
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন