ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে দক্ষিণ-পশ্চিমে বহু ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। গত দুইদিনে এখনো অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন, রাস্তায় গাছপড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবার কারণে প্রশাসনের পক্ষে বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে। তবে ক্ষতি যে ব্যাপক তার সাথে কেউই দ্বিমত করেননি।
এই অঞ্চলের মধ্যে যশোর জেলা বন্যা ও দুর্যোগমুক্ত হিসেবে পরিচিত। সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, রোহানু, নার্গিসসহ স্মরণকালের কোন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বললেই চলে। কিন্তু এবারের সুপার সাইক্লোন আম্ফান বিরাট ক্ষতি করে দিয়ে গেলো-এই মন্তব্য প্রশাসনের কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের। অনেকে বলেছেন জীবনে এতো ভয়াবহ কান্ডব চোখে দেখেননি।
টানা প্রায় ৮ঘন্টা তান্ডব চালিয়ে গোটা এলাকার ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সবজি, আম, লিচু, জাম, কাঠাল, শসক্ষেত, পানের বরজ, উপকূলীয় বেড়িবাঁধ, চিংড়ি ঘের, ফুল ও ফল লন্ডভন্ড করে দেয় আম্ফান। কাঁচা ঘরবাড়ি ও টিনের ছাউনি বেশিরভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় পাক দিয়ে মড়মড় শব্দে শুধু টিন উড়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ শুক্রবার দুপুরে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সবখানে পুরোপুরি যোগাযোগ পুনঃস্থাপন না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি মণিরামপুরে এক গ্রামে ৫জন নিহতের খবরসহ ক্ষয়ক্ষতির কোন প্রকৃত চিত্র তার কাছে নেই বলে উল্লেখ করে জানান, রাস্তায় পড়া বড় বড় গাছ কেটে কেটে একেক এলাকায় ঢুকছেন ইউএনওসহ কর্মকর্তারা। সেজন্য প্রকৃত চিত্র পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আশা করা যায় শনিবারের মধ্যে আম্ফানের তান্ডবের ধ্বংসচিহ্নের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অতিরিক্ত পরিচালক পার্থ প্রতিম সাহাও বললেন, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ গোটা এলাকার কৃষির ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে। একটু সময় লাগছে দুই একদিনের মধ্যে সব পাওয়া যাবে। তার কাছে যে প্রাথমিক তথ্য আছে তাতে, সবজি, আম লিচু, পান, কলাসহ মৌসুমী ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন