করোনাকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে অন্যরকম ‘ব্যস্ততা’ ফাঁকা চট্টগ্রামে। এ ব্যস্ততা-প্রস্তুতিতে নেই উৎসবের আমেজ। নেই নতুন পোশাক কেনা-কাটার ধুম। পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে ফেরার উৎসবও নেই। বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাটে সুনসান নীরবতা। মার্কেট, বিপনী কেন্দ্র শপিং মলে তালা।
করোনা মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আমফানের বিপদ কেটে যাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্থি ফিরেছে। শনিবার সকাল থেকে রাস্তা ঘাটে ভিড় বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নগরীর হাটবাজার ও ভোগ্যপণ্যের দোকানে মানুষের ভিড় লেগে যায়। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে ব্যস্ত সবাই। সেমাই চিনি, ফল আর মসলার দোকানেও দারুন ব্যস্ততা।
কাঁচাবাজারেও জমজমাট কেনা বেচা। সংক্রমণ এড়াতে আগেই নগরীর কয়েকটি বাজার সরিয়ে নেওয়া হয় খোলা মাঠে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছে কেনাকাটা। কাজির দেউড়িসহ কয়েকটি বাজারের প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে জীবাণুনাশক গেইট।
অন্য ঈদের মতো এবার নতুন পোশাক আর জুতো, প্রসাধনী কেনার সুযোগ নেই। আর তাই ভোগ্যপণ্যের বাজারেই মানুষের ভিড়। ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। বন্ধ সরকারি বেসরকারি অফিস, কলকারখানা।
তবে সীমিত পরিসরে চালু আছে দেশের অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর। ঘূর্ণিঝড় আমফান শেষ হতেই সচল হয়ে উঠে বন্দর। যথারীতি ঈদের দিন কিছু সময়ের জন্য বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটির দিনেও সচল থাকবে বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ও পণ্য পরিবহন অব্যাহত আছে। গণপরিবহন না থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী ও হালকা যানবাহনের জটলা আছে।
মহানগরীতেও যানবাহন চলাচল বাড়ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশার সংখ্যা বেড়ে গেছে। লকডাউনে কর্মহীন মানুষের পাশাপাশি ঈদের আগে কিছু উপার্জনের আশায় গ্রাম থেকে আসা লোকজনও রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। হাটবাজারের মুখে কিংবা ব্যস্তু মোড়গুলোতে রিকশার জটলা দেখা যাচ্ছে।
লকডাউনের কারণে এমনিতেই সীমিত পরিসরে খোলা ছিলো সরকারি বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা। তবে লকড্উানের মধ্যে খুলে দেওয়া কলকারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা ভেঙ্গেই এসব কারখানার অনেক শ্রমিক বাড়ি চলে গেছেন। অনেকে এখনও বাড়ি ফিরছেন।
গণপরিবহন বন্ধ। তবে বিকল্প পরিবহনে মানুষের ঘরে ফেরা থেমে নেই। নগরীর কয়েকটি এলাকায় ঘরমুখো মানুষের বেশকিছু যানবাহন আটকে দেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবুও ঘরে ফেরা ঠেকানো যাচ্ছে না। ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আর এই সুযোগে এসব গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধায় নগরীর সিটি গেইটে এমন আটটি প্রাইভেট কার ও মাইক্রেবাস আটক করে জরিমানা করা হয়।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে যাদের বাড়ি তারাও অনেকে বাড়ি চলে গেছেন। তবে বেশিরভাগ নগরবাসী এবার ঈদ নগরীতে কাটাবেন।
এদিকে অনেকে এর মধ্যে যাকাত ও দান খয়রাত করে চলেছেন। যাকাত, ফিতরা ও দান খয়রাতের আশায় দূরদুরান্ত থেকে আসা অসহায় মানুষের ভিড় জটলা লেগেই আছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে ধনাঢ্য, ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের বাড়ির সামনে দরিদ্র মানুষের ভিড় লেগেই আছে। হাটে বাজারে রাস্তায় ভিক্ষুকের সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন