মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

প্রাথমিক অবস্থাতেই করোনা ঠেকিয়ে দেবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের ইনহেলার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২০, ৩:৩৫ পিএম

বিজ্ঞানীরা একটি নতুন করোনাভাইরাস ইনহেলার তৈরি করেছেন যা প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে-সংগৃহীত


করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এখন পর্যস্ত কোনো প্রতিষেধক আবিস্থার না হলেও থেমে নেই গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ব্রিটেনে তৈরি হয়েছে একটি নতুন ধরণের ইনহেলা, যা করোনাভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণগুলি দেখা যাওয়ার সাথে সাথে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে। গতকাল ব্রিটেনের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি এই ইনহেলার কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য পাঠানো হয়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা মোট ১ শ’ ২০ টি ইনহেলার ঘরে বসে পরীক্ষা বা হোম ট্রায়ালের জন্য রোগীদের কাছে পাঠান।
গবেষকদের তৈরি সম্ভাবনাময় নতুন এই প্রযুক্তিটিতে এসএনজি ০০১ কোডের একটি পরীক্ষামূলক ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাতে রয়েছে ইন্টারফেরন বেটা নামে একটি প্রোটিন, যা আমরা কোনো ভাইরাল সংক্রমণের সংস্পর্শে আসলে, আমাদের দেহতে উৎপন্ন হয়। এবিসি নিউজ জানিয়েছে যে, এটি ইতিমধ্যে একাধিক স্কে¬রোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়েছে। এবং এর আগে হংকংয়ে প্রায়োগিক গবেষণায় অন্যান্য ওষুধের সাথে সম্মিলিত ব্যবহারে কোভিড-১৯ উপসর্গগুলি হ্রাস করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল দেখিয়েছে।
ওষুধটি যখন শ^াসের সাথে টানা হয়, তখন এটি সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে যায় এবং ভাইরাসের প্রভাবগুলিকে দমন করতে সহায়তা করে। বিজ্ঞানীরা এখন আশা করছেন যে, এটি রোগীদের ভাইরাসের ‘প্রানঘাতি পর্যায়ে’ প্রবেশ করতে বাধা দেবে যা প্রথমিক উপসর্গগুলি দেখা যাওয়ার পরের ১০ দিনের মধ্যে ঘটে। যদি পরীক্ষাগুলি সফল হয়, তবে গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত সাউদাম্পটন ভিত্তিক ওষুধ গবেষণা ও নির্মাতা সংস্থা সিনেয়ারগেন আশা করছে যে, তারা এবছরের শেষের দিকে কয়েক কোটি ডোজ উৎপাদন করবে, যা মহামারীর বিরুদ্ধে দেশটির লড়াইকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
নতুন এই ইনহেলারের নেপথ্যে থাকা গবেষক দলটি ১ শ’ জন রোগীর সাথে সম্পৃক্ত একটি হাসপাতাল ভিত্তিক প্রায়োগিক পরীক্ষা শীঘ্রই শেষ করতে চলেছে। ফলাফলটি গত জুলাইয়ে প্রকাশিত হওয়ার পর তারা স্থির করে যে, টেস্ট কিটের মাধ্যমে করে বাড়ীতে বসে পরীক্ষাকরাটাই রোগীর চিকিৎসার উপযোগিতা নির্ধারণের চাবিকাঠি। গবেষণার নেতা অধ্যাপক নিক ফ্রান্সিস ব্রিটিশ সংবাদ পত্রিকা ডেইলি মেইলকে বলেছেন, ‘লক্ষণগুলির গুরুতর অবনতি রোধ করার জন্য আমাদের কোভিড-১৯’র একটি চিকিৎসা প্রয়োজন যা অসুস্থতার প্রথম পর্যায়ে রোগীদের দেওয়া যেতে পারে।’
মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমনের শিকার রোগীরাদের সংক্রমণের ২য় সপ্তাহে শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ার মতো গুরুতর লক্ষণগুলি দেখা দেয়। সিনেয়ারগেন প্রধান রিচার্ড মার্সডেন জানিয়েছেন যে, এটি ভাইরাসকে প্রানঘাতি সংক্রমণের ২য় সপ্তাহে প্রবেশ করাকে প্রতিরোধ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষকে এই খারাপ দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ঠেকাতে পারি।’
যারা হাসপাতালে আগের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ছিলেন তারা ইতিমধ্যে ইতিবাচক ফলাফলের কথা জানিয়েছেন। তাদের একজন বিবিসিকে জানিয়েছেন, ‘আপনি খেয়াল করবেন না যে আপনি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি নিচ্ছেন। এটি খুব একটা খারাপ নয়। আমি নিজেই ঘরে বসে এটি ব্যবহার করবো বলে কল্পনা করছি।’ মার্সডেন বলেছেন, ‘আমরা এবছরের শেষের দিকে কয়েক কোটি ডোজ সরবরাহ করার অবস্থানে থাকার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহন করেছি।’ সূত্র: দ্য সান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন